67|1| মহামহিমান্বিত তিনি যাঁর হাতে রয়েছে সার্বভৌম কর্তৃত্ব, আর তিনি সব-কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান;
67|2| যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন তোমাদের যাচাই করতে যে তোমাদের মধ্যে কে কাজকর্মে শ্রেষ্ঠ। আর তিনি মহাশক্তিশালী, পরিত্রাণকারী;
67|3| যিনি সাত আকাশ সৃষ্টি করেছেন সুবিন্যস্তভাবে। তুমি পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে কোনো অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। তারপর তুমি দৃষ্টি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নাও, তুমি কি কোনো ফাটল দেখতে পাচ্ছ?
67|4| তারপর দৃষ্টি আরেকবার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নাও, দৃষ্টি তোমার কাছে ফিরে আসবে ব্যর্থ হয়ে, আর তা হবে ক্লান্ত।
67|5| আর আমরা নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করে রেখেছি প্রদীপমালা দিয়ে, আর আমরা তাদের বানিয়েছি শয়তানদের জন্য ভাঁওতার বিষয়; আর আমরা তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি।
67|6| আর যারা তাদের প্রভুকে অবিশ্বাস করে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। আর মন্দ সেই গন্তব্যস্থান!
67|7| যখন তাদের সেখানে নিক্ষেপ করা হবে তখন তারা তার থেকে বিকট গর্জন শুনতে পাবে, আর তা লেলিহান শিখা ছড়াবে, —
67|8| যেন ক্রোধে ফেটে পড়ছে। যখনই কোনো একদলকে ওতে নিক্ষেপ করা হবে তার রক্ষীরা তাদের জিজ্ঞাসা করবে — ”তোমাদের কাছে কি কোনো সতর্ককারী আসেন নি?”
67|9| তারা বলবে — ”হাঁ, আমাদের কাছে সতর্ককারী ইতিপূর্বে এসে গেছেন, আমরা কিন্তু অস্বীকার করেছিলাম ও বলেছিলাম — ‘আল্লাহ্ কোনো-কিছু অবতারণ করেন নি, তোমরা রয়েছ বিরাট পথভ্রান্তিতে বৈ তো নও’।’’
67|10| আর তারা বলবে — ”আমরা যদি শুনতাম অথবা বুদ্ধি প্রয়োগ করতাম তাহলে আমরা জ্বলন্ত আগুনের বাসিন্দাদের মধ্যে হতাম না।’’
67|11| সুতরাং তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে, ফলে জ্বলন্ত আগুনের বাসিন্দাদের জন্য — ‘দূর হ!’
67|12| নিঃসন্দেহ যারা তাদের প্রভুকে ভয় করে গোপনে তাদের জন্য রয়েছে পরিত্রাণ ও বিরাট প্রতিদান।
67|13| অথচ তোমাদের কথাবার্তা তোমরা গোপন কর অথবা তা প্রকাশই কর। নিঃসন্দেহ তিনি বুকের ভেতরের বিষয় সন্বন্ধেও সর্বজ্ঞাতা।
67|14| যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি কি জানেন না? আর তিনি গুপ্ত বিষয়ে জ্ঞাতা, পূর্ণ-ওয়াকিফহাল।
67|15| তিনিই সেইজন যিনি পৃথিবীটাকে তোমাদের জন্য করে দিয়েছেন শান্ত, ফলে তোমরা এর দিগদিগন্তে বিচরণ করছ এবং তার জীবিকা থেকে আহার করছ। আর তাঁরই কাছে পুনরুত্থান।
67|16| কী! যিনি উর্ধ্বলোকে রয়েছেন তাঁর কাছ থেকে কি তোমরা নিরাপত্তা গ্রহণ করেছ যে তিনি পৃথিবীকে দিয়ে তোমাদের গ্রাস করাবেন না, যখন আলবৎ তা আন্দোলিত হবে?
67|17| অথবা যিনি উর্ধ্বলোকে রয়েছেন তাঁর কাছ থেকে কি তোমরা নিরাপত্তা গ্রহণ করেছ পাছে তিনি তোমাদের উপরে পাঠিয়ে দেন এক কংকরময় ঘূর্ণিঝড়? ফলে তোমরা শীঘ্রই জানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী!
67|18| আর এদের আগে যারা ছিল তারাও প্রত্যাখ্যান করেছিল, তখন কেমন হয়েছিল আমার অসন্তোষ!
67|19| তারা কি দেখে নি তাদের উপরে পাখিদের ছড়ানো ও গুটানো? তাদের পরম করুণাময় ছাড়া কেউ ধরে রাখেন না। নিঃসন্দেহ তিনিই সর্ববিষয়ে সম্যক দ্রষ্টা।
67|20| আচ্ছা, পরম করুণাময়কে বাদ দিয়ে কে সেইটি — যে হবে তোমাদের জন্য সেনাবাহিনী যে তোমাদের সাহায্য করবে? অবিশ্বাসীরা তো বিভ্রান্তিতে থাকা ছাড়া আর কোথাও নয়।
67|21| অথবা কে সে যে তোমাদের জীবিকা দেবে যদি তিনি তাঁর রিযেক বন্ধ করে দেন? বস্তুত তারা অবাধ্যতায় ও বিতৃষ্ণায় অনড় রয়েছে।
67|22| আচ্ছা, যে তার মুখের উপরে থুবড়ে থুবড়ে চলে সে কি তবে বেশি সৎপথে চালিত, না সেইজন যে সোজা হয়ে চলে শুদ্ধ-সঠিক পথে?
67|23| বলো — ”তিনিই সেইজন যিনি তোমাদের বিকশিত করেছেন, আর তোমাদের জন্য বানিয়ে দিয়েছেন শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি ও অন্তঃকরণ। তোমরা যা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর সে তো যৎসামান্য!’’
67|24| তুমি বলে যাও — ”তিনিই সেইজন যিনি পৃথিবীতে তোমাদের ছড়িয়ে দিয়েছেন, আর তাঁরই কাছে তোমাদের একত্রিত করা হবে।’’
67|25| আর তারা বলে — ”কখন এই ওয়াদা হবে? যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’’
67|26| তুমি বলো — ”জ্ঞান কেবল আল্লাহ্রই কাছে আছে, আর আমি নিঃসন্দেহ একজন স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।’’
67|27| তারপর তারা যখন এটি আসন্ন দেখতে পাবে তখন যারা অবিশ্বাস করেছিল তাদের চেহারা হবে মলিন, আর বলা হবে — ”এটিই তাই যা তোমরা ডেকে আনছিলে।’’
67|28| তুমি বলো — ”তোমরা কি ভেবে দেখেছ, — যদি আল্লাহ্ আমাকে ও যারা আমার সঙ্গে রয়েছে তাদের ধ্বংস করেন অথবা আমাদের প্রতি করুণা করেন, কিন্তু কে অবিশ্বাসীদের রক্ষা করবে মর্মন্তুদ শাস্তি থেকে?’’
67|29| বলো — ”তিনি পরম করুণাময়, আমরা তাঁতে ঈমান এনেছি এবং তাঁরই উপরে আমরা আস্থা রেখেছি, সুতরাং অচিরেই তোমরা জানতে পারবে কে সেইজন যে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে।’’
67|30| বলে যাও — ”তোমরা কি ভেবে দেখেছ — যদি তোমাদের পানি সাত-সকালে ভূগর্ভে চলে যায়, তাহলে কে তোমাদের জন্য নিয়ে আসবে প্রবহমান পানি?’’
