লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ

‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা। মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই এর প্রভাব, গুরুত্ব, মর্যাদা এবং ফজিলত অনেক বেশি। মুসলিম উম্মাহ তাদের আজান, ইকামাত, বক্তৃতা-বিবৃতি এবং আলোচনা-সভা-সমাবেশে বলিষ্ঠ কণ্ঠে এ সত্য ঘোষণা দেন- ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই’।

সন্দেহ নেই, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ সর্বোত্তম, সর্বশ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে পরিপূর্ণ যিকির, যা আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য মুখে উচ্চারণ করাই যথেষ্ট নয়, বরং তার প্রকৃত অর্থ ও মৌলিক শিক্ষা বাস্তবায়ন করা জরুরি, যেমন শির্ক প্রত্যাখ্যান করা, সকল ইবাদতের মালিকানা আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করা, কালেমার সংশ্লিষ্ট বিষয়কে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা। এভাবে বান্দা প্রকৃত মুসলিম ও লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর পরিবারভুক্ত হয়।

‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র অর্থ, আল্লাহ ব্যতীত কোনো বস্তু ও সত্তা ইলাহ হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। তিনি ব্যতীত সকল বস্তুর উপাসনা পথভ্রষ্টতা, বড় যুলুম ও চূড়ান্ত পর্যায়ের গোমরাহী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَنۡ أَضَلُّ مِمَّن يَدۡعُواْ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَن لَّا يَسۡتَجِيبُ لَهُۥٓ إِلَىٰ يَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِ وَهُمۡ عَن دُعَآئِهِمۡ غَٰفِلُونَ ٥ وَإِذَا حُشِرَ ٱلنَّاسُ كَانُواْ لَهُمۡ أَعۡدَآءٗ وَكَانُواْ بِعِبَادَتِهِمۡ كَٰفِرِينَ ٦﴾ [الاحقاف: ٥، ٦]

“তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে, যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কাউকে ডাকে, যে কিয়ামত দিবস পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে না? আর তারা তাদের আহ্বান সম্পর্কে উদাসীন। আর যখন মানুষকে একত্র করা হবে, তখন এ উপাস্যগুলো তাদের শত্রু হবে এবং তারা তাদের ইবাদাত অস্বীকার করবে”। [সূরা আল-আহকাফ, আয়াত: ৫-৬]

﴿ ذَٰلِكَ بِأَنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدۡعُونَ مِن دُونِهِۦ هُوَ ٱلۡبَٰطِلُ وَأَنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡعَلِيُّ ٱلۡكَبِيرُ ٦٢ ﴾ [الحج : ٦٢]

“আর এটা এ জন্য যে, নিশ্চয় আল্লাহই সত্য এবং তার পরিবর্তে যাকে তারা ডাকে, অবশ্যই তা বাতিল। আর নিশ্চয় আল্লাহ তো সমুচ্চ, সুমহান”। [সূরা আল-হাজ, আয়াত: ৬২]

অপর আয়াতে তিনি বলেন,

﴿ إِنَّ ٱلشِّرۡكَ لَظُلۡمٌ عَظِيمٞ ١٣ ﴾ [لقمان: ١٣]

“নিশ্চয় শির্ক হলো বড় যুলুম”। [সূরা লুকমান, আয়াত: ১৩]

অপর আয়াতে তিনি বলেন,

﴿وَٱلۡكَٰفِرُونَ هُمُ ٱلظَّٰلِمُونَ ٢٥٤ ﴾ [البقرة: ٢٥٤]

“আর কাফিররাই যালিম”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৫৪]

যুলুম অর্থ কোনো বস্তুকে তার উপযুক্ত জায়গায় না রাখা। ইবাদাতের উপযুক্ত হকদার আল্লাহ তা‘আলা, তাই তাকে ত্যাগ করে গায়রুল্লাহকে ইবাদাত সোপর্দ করা সবচেয়ে বড় যুলুম বা কুফুরী। কারণ, গায়রুল্লাহকে ইবাদাত সোপর্দ করলে ইবাদাত সঠিক স্থান থেকে বিচ্যুত হয়, যার থেকে বড় যুলুম আর নেই।

এতে সন্দেহ নেই যে, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর অর্থ বুঝা ও আয়ত্ত করা জরুরি। কারণ, সকল আলেম একমত যে, কালেমার অর্থ বুঝা ও তার দাবির ওপর আমল করা ছাড়া শুধু তার উচ্চারণ কারো জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَا يَمۡلِكُ ٱلَّذِينَ يَدۡعُونَ مِن دُونِهِ ٱلشَّفَٰعَةَ إِلَّا مَن شَهِدَ بِٱلۡحَقِّ وَهُمۡ يَعۡلَمُونَ ٨٦﴾ [الزخرف: ٨٦]

“আর তিনি ছাড়া যাদেরকে তারা আহ্বান করে তারা সুপারিশের মালিক হবে না, তবে তারা ছাড়া যারা জেনে-শুনে সত্য সাক্ষ্য দেয়”। [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ৮৬]

মুফাসসিরদের মতে আয়াতের অর্থ: যে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর অর্থ জেনে-বুঝে অন্তর থেকে তার সাক্ষ্য দিবে ও মুখে উচ্চারণ করবে এখানে তার কথাই বলা হয়েছে। কারণ সাক্ষ্য প্রদান করার অর্থ হচ্ছে, সাক্ষীদাতা তার সাক্ষ্য সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞাত, যদি মূর্খতা থেকে সাক্ষ্য দেয়, তাহলে এটা সাক্ষ্যই নয়। অনুরূপ সাক্ষ্য ঘটনার সত্যতা ও আমল দাবি করে। এ থেকে স্পষ্ট হয় যে, কালেমার জ্ঞানার্জনের সাথে বাহ্যিক আমল ও অন্তরের সত্যতা জরুরি, তবেই কালেমা উচ্চারণকারী বান্দা খৃস্টানদের নীতি থেকে পরিত্রাণ পাবে, যারা ইলম ব্যতীত আমল করে। অনুরূপ মুক্ত হবে ইয়াহূদীদের তরিকা থেকে, যারা জানা সত্ত্বেও তার ওপর আমল করে না। আর কালেমার প্রতি অন্তরের সত্যতা প্রকাশ করে মুনাফিকদের তরিকা থেকে মুক্ত হবে, যারা অন্তর দিয়ে কালেমা বিশ্বাস করে না। তবেই বান্দা সিরাতে মুস্তাকীমের পরিবারভুক্ত হবে, যাদের ওপর আল্লাহ নি‘আমত দান করেছেন এবং যারা অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্ট নয়।

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ তাকেই উপকৃত করবে, যে জানে কালেমা কি প্রমাণ করে আর কি প্রত্যাখ্যান করে এবং তা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে ও তার ওপর আমল করে; পক্ষান্তরে অন্তরের বিশ্বাস ব্যতীত যে কালেমা বলে ও তার ওপর আমল করে সে মুনাফিক। আর যে কালেমা উচ্চারণ করে তার পরিপন্থী বস্তু শির্কে লিপ্ত হয় সে কাফির। অনুরূপ কেউ যদি কালেমা উচ্চারণ করে মুরতাদ হয়, বা তার অবশ্য জরুরি কোনো বিষয় বা দাবি অস্বীকার করে, তাকেও কালেমা উপকৃত করবে না, যদিও সে কালেমা হাজার বার উচ্চারণ করে। অনুরূপ কেউ যদি কালেমার সাক্ষ্য প্রদান করে কোনো প্রকার ইবাদাত গায়রুল্লাকে প্রদান করে। যেমন, দো‘আ, জবেহ, মান্নত, ফরিয়াদ, তাওয়াক্কুল, প্রত্যাবর্তন, আশা, ভয়, মহব্বত এবং এ জাতীয় অন্যান্য ইবাদাত, যা আল্লাহ ব্যতীত কারো জন্য প্রযোজ্য নয়, তার কোনোটি যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য প্রদান করে, তবে সে আল্লাহর সাথে শির্ককারী মুশরিক, যদিও সে মুখে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ উচ্চারণ করে। কারণ, সে কালেমার দাবি তাওহীদ ও ইখলাসের ওপর আমল করে নি, যা কালেমার মূল ও মৌলিক শিক্ষা।

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর অর্থ: এক ইলাহ ব্যতীত সত্যিকার কোনো মা‘বুদ নেই, তিনি এক তার কোনো শরীক নেই। অভিধানগত ইলাহ অর্থ: মা‘বুদ। আর লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ অর্থ আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোনো মা‘বুদ নেই। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿وَمَآ أَرۡسَلۡنَا مِن قَبۡلِكَ مِن رَّسُولٍ إِلَّا نُوحِيٓ إِلَيۡهِ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّآ أَنَا۠ فَٱعۡبُدُونِ ٢٥﴾ [الانبياء: ٢٥]

“আর তোমার পূর্বে এমন যে রাসূলই আমরা পাঠিয়েছি, যার প্রতি আমরা এই ওহী নাযিল করেছি যে, ‘আমি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। সুতরাং তোমরা কেবল আমারই ইবাদাত কর”। [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ২৫]

অপর আয়াতে তিনি বলেন,

﴿وَلَقَدۡ بَعَثۡنَا فِي كُلِّ أُمَّةٖ رَّسُولًا أَنِ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَٱجۡتَنِبُواْ ٱلطَّٰغُوتَۖ ٣٦﴾ [النحل: ٣٦]

“আর আমরা অবশ্যই প্রত্যেক জাতিতে একজন রাসূল প্রেরণ করেছি যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং পরিহার কর তাগুতকে”। [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৩৬]

এ থেকে স্পষ্ট হল, ইলাহ অর্থ মা‘বুদ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ অর্থ, একনিষ্ঠভাবে সকল ইবাদাত আল্লাহকে সোপর্দ করা এবং তাগুতের ইবাদাত প্রত্যাখ্যান করা। এ জন্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কার কাফেরদের বলেছেন, তোমরা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বল, তখন তারা বলেছিল:

﴿أَجَعَلَ ٱلۡأٓلِهَةَ إِلَٰهٗا وَٰحِدًاۖ إِنَّ هَٰذَا لَشَيۡءٌ عُجَابٞ ٥﴾ [ص : ٥]

“সে কি সকল উপাস্যকে এক উপাস্য বানিয়ে নিয়েছে? নিশ্চয় এ তো এক আশ্চর্য বিষয়”। [সূরা সাদ, আয়াত: ৫]

অনুরূপ হূদ আলাইহিস সালামের কাওম তাদের নবীকে বলেছিল, যখন তিনি বলেছেন: তোমরা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বল:

﴿قَالُوٓاْ أَجِئۡتَنَا لِنَعۡبُدَ ٱللَّهَ وَحۡدَهُۥ وَنَذَرَ مَا كَانَ يَعۡبُدُ ءَابَآؤُنَا ٧٠﴾ [الاعراف: ٦٩]

“তারা বলল, ‘তুমি কি আমাদের নিকট এ জন্য এসেছ যে, আমরা এক আল্লাহর ইবাদাত করি এবং ত্যাগ করি আমাদের পিতৃপুরুষগণ যার ইবাদাত করত”? [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৭০]

নবীগণ যখন কওমকে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর দাওয়াত দিয়েছেন, তখন কওম এসব উত্তর দিয়েছে। কারণ, তারা জানত কালেমার অর্থ, আল্লাহ ব্যতীত সকল সত্তার উপাসনা ত্যাগ করা, যিনি ইবাদাতের হকদার তার জন্যই সকল ইবাদাত সাব্যস্ত করা। অতএব, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ দু’টি অর্থকে অন্তর্ভুক্ত করে: অস্বীকার করা ও সাব্যস্ত করা, অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত সকল ইলাহের ইবাদত অস্বীকার করা। সুতরাং আল্লাহ ছাড়া যেসব মালায়েকা ও নবীগণ রয়েছেন (অন্যদের কথা তো বাদ) তারা কেউ ইলাহ নয়, কোনো ইবাদাতে তাদের অধিকার নেই। আর আল্লাহর জন্য সকল ইবাদত সাব্যস্ত করা, অর্থাৎ বান্দা আল্লাহ ব্যতীত কারো সাথে যুক্ত হবে না, তিনি ব্যতীত কোনো বস্তুর প্রতি একনিষ্ঠভাবে মনোযোগী হবে না। এটাই অন্তরের মনোযোগ, কোনো বস্তু বা সত্তার প্রতি এ জাতীয় মনোযোগ থেকে বান্দা ইবাদত উৎসর্গে প্রলুব্ধ হয়, যেমন দো‘আ, জবেহ ও মান্নত ইত্যাদি।

কুরআনুল কারীমের বহু জায়গায় লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর অর্থ, দাবি ও উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَإِلَٰهُكُمۡ إِلَٰهٞ وَٰحِدٞۖ لَّآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلرَّحۡمَٰنُ ٱلرَّحِيمُ ١٦٣﴾ [البقرة: ١٦٣]

“আর তোমাদের ইলাহ এক ইলাহ। তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই। তিনি অতি দয়াময়, পরম দয়ালু”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৬৩]

অপর আয়াতে তিনি বলেন,

﴿وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ حُنَفَآءَ ٥﴾ [البينة: ٥]

“আর তাদেরকে কেবল এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে, তারা যেন আল্লাহর ইবাদাত করে তারই জন্য দীনকে একনিষ্ঠ করে”। [সূরা আল-বাইয়্যিনাহ, আয়াত: ৫]

অপর আয়াতে বলেন,

﴿وَإِذۡ قَالَ إِبۡرَٰهِيمُ لِأَبِيهِ وَقَوۡمِهِۦٓ إِنَّنِي بَرَآءٞ مِّمَّا تَعۡبُدُونَ ٢٦ إِلَّا ٱلَّذِي فَطَرَنِي فَإِنَّهُۥ سَيَهۡدِينِ ٢٧ وَجَعَلَهَا كَلِمَةَۢ بَاقِيَةٗ فِي عَقِبِهِۦ لَعَلَّهُمۡ يَرۡجِعُونَ ٢٨﴾ [الزخرف: ٢٦، ٢٨]

“আর স্মরণ কর, যখন ইবরাহীম স্বীয় পিতা ও তার কাওমকে বলেছিল, ‘তোমরা যেগুলোর ইবাদাত কর, নিশ্চয় আমি তাদের থেকে সম্পর্কমুক্ত। তবে (তিনি ছাড়া) যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর নিশ্চয় তিনি আমাকে শীঘ্রই হিদায়াত দিবেন। আর এটিকে সে তার উত্তরসূরিদের মধ্যে এক চিরন্তন বাণী বানিয়ে রেখে গেল, যাতে তারা প্রত্যাবর্তন করতে পারে”। [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ২৮]

সূরা ইয়াসীনে এক মুমিন ব্যক্তির কথা উদ্ধৃত করে আল্লাহ বলেন,

﴿وَمَا لِيَ لَآ أَعۡبُدُ ٱلَّذِي فَطَرَنِي وَإِلَيۡهِ تُرۡجَعُونَ ٢٢ ءَأَتَّخِذُ مِن دُونِهِۦٓ ءَالِهَةً إِن يُرِدۡنِ ٱلرَّحۡمَٰنُ بِضُرّٖ لَّا تُغۡنِ عَنِّي شَفَٰعَتُهُمۡ شَيۡ‍ٔٗا وَلَا يُنقِذُونِ ٢٣ إِنِّيٓ إِذٗا لَّفِي ضَلَٰلٖ مُّبِينٍ ٢٤﴾ [يس: ٢٢، ٢٤]

“আর আমি কেন তার ইবাদাত করব না যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন? আর তার কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। আমি কি তার পরিবর্তে অন্য ইলাহ গ্রহণ করব? যদি পরম করুণাময় আমার কোনো ক্ষতি করার ইচ্ছা করেন, তাহলে তাদের সুপারিশ আমার কোনো কাজে আসবে না এবং তারা আমাকে উদ্ধারও করতে পারবে না। এরূপ করলে নিশ্চয় আমি স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পতিত হব”। [সূরা ইয়াসীন, আয়াত: ২২-২৪]

অপর আয়াতে তিনি বলেন,

﴿قُلۡ إِنِّيٓ أُمِرۡتُ أَنۡ أَعۡبُدَ ٱللَّهَ مُخۡلِصٗا لَّهُ ٱلدِّينَ ١١ وَأُمِرۡتُ لِأَنۡ أَكُونَ أَوَّلَ ٱلۡمُسۡلِمِينَ ١٢ قُلۡ إِنِّيٓ أَخَافُ إِنۡ عَصَيۡتُ رَبِّي عَذَابَ يَوۡمٍ عَظِيمٖ ١٣ قُلِ ٱللَّهَ أَعۡبُدُ مُخۡلِصٗا لَّهُۥ دِينِي ١٤﴾ [الزمر: ١١، ١٤]

“বল, নিশ্চয় আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আমি যেন আল্লাহর ইবাদাত করি তারই জন্য আনুগত্যকে একনিষ্ঠ করে। আমাকে আরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন আমি প্রথম মুসলিম হই। বল, আমি যদি আমার রবের অবাধ্য হই তবে আমি এক মহা-দিবসের আজাবের আশঙ্কা করি। বল, আমি আল্লাহরই ইবাদত করি, তারই জন্য আমার আনুগত্য একনিষ্ঠ করে”। [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ১১-১৪]

ফির‘আউনের পরিবারের মুমিন ব্যক্তির কথা উদ্ধৃত করে আল্লাহ বলেন,

﴿وَيَٰقَوۡمِ مَا لِيٓ أَدۡعُوكُمۡ إِلَى ٱلنَّجَوٰةِ وَتَدۡعُونَنِيٓ إِلَى ٱلنَّارِ ٤١ تَدۡعُونَنِي لِأَكۡفُرَ بِٱللَّهِ وَأُشۡرِكَ بِهِۦ مَا لَيۡسَ لِي بِهِۦ عِلۡمٞ وَأَنَا۠ أَدۡعُوكُمۡ إِلَى ٱلۡعَزِيزِ ٱلۡغَفَّٰرِ ٤٢ لَا جَرَمَ أَنَّمَا تَدۡعُونَنِيٓ إِلَيۡهِ لَيۡسَ لَهُۥ دَعۡوَةٞ فِي ٱلدُّنۡيَا وَلَا فِي ٱلۡأٓخِرَةِ وَأَنَّ مَرَدَّنَآ إِلَى ٱللَّهِ وَأَنَّ ٱلۡمُسۡرِفِينَ هُمۡ أَصۡحَٰبُ ٱلنَّارِ ٤٣﴾ [غافر: ٤١، ٤٣]

“আর হে আমার কাওম, আমার কী হলো যে, আমি তোমাদেরকে মুক্তির দিকে ডাকছি আর তোমরা আমাকে ডাকছ আগুনের দিকে! তোমরা আমাকে ডাকছ আমি যেন আল্লাহর সাথে কুফুরী করি, তার সাথে শরীক করি যে ব্যাপারে আমার কোনো জ্ঞান নেই, আর আমি তোমাদেরকে ডাকছি মহা-পরাক্রমশালী পরম ক্ষমাশীলের দিকে। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে, যার দিকে তোমরা আমাকে ডাকছ, সে দুনিয়া বা আখিরাতে কারো ডাকের যোগ্য নয়। আর আমাদের প্রত্যাবর্তন হবে আল্লাহর দিকে এবং নিশ্চয় সীমালংঘনকারীরা হবে আগুনের সাথী”। [সূরা গাফির, আয়াত: ৪১-৪৩]

এরূপ অর্থ প্রদানকারী আয়াত অনেক রয়েছে, যা থেকে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর অর্থ স্পষ্ট হয়, অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত সকল সুপারিশকারী ও অংশীদারদের ইবাদত ত্যাগ করা, একমাত্র আল্লাহকে সকল ইবাদত সোপর্দ করা। এটাই হচ্ছে হিদায়াত ও সত্য দীন, যা দিয়ে আল্লাহ রাসূলদের প্রেরণ ও কিতাব নাযিল করেছেন। আর যারা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর অর্থ না জেনে ও তার দাবি মোতাবেক আমল না করে মুখে কালেমা উচ্চারণ করে, বরং কতক সময় গায়রুল্লাহকে কতিপয় ইবাদত সোপর্দ করে। যেমন, দো‘আ, ভয়, জবেহ, মান্নত ও অন্যান্য ইবাদাত, কালেমার এ জাতীয় উচ্চারণ তাদেরকে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর পরিবারভুক্ত করবে না এবং কিয়ামতের দিন তারা আল্লাহর শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে না।

অতএব, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ অর্থহীন কোনো নাম নয় কিংবা বাস্তবতাহীন কোনো কথা নয় অথবা এমন বাক্য নয়, যার সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয়বস্তু নেই, যেমন কতক লোকের ধারণা। তাদের ধারণা, কালেমার মূল উদ্দেশ্য মুখে উচ্চারণ করা, অন্তরে তার বিশ্বাস থাকা জরুরি নয় অথবা শুধু উচ্চারণ করাই যথেষ্ট, তার নীতি ও অর্থ বাস্তবায়ন করা জরুরি নয়। তাদের ধারণা সঠিক নয়, এটা কখনো কালেমার প্রকৃতি নয়, বরং এ কালেমা মহান অর্থের ধারক, বিরাট অর্থপূর্ণ বাক্য, যা সকল বাক্যের অর্থ থেকে বড়।

আল্লাহ ব্যতীত সকল কিছুর ইবাদাত থেকে মুক্ত হওয়া এবং আনুগত্য, বিনয়, আশা, প্রত্যাশা, মনোযোগ, তাওয়াক্কুল, দো‘আ ও প্রার্থনাসহ আল্লাহর প্রতি মনোনিবেশ করা, সুতরাং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর ধারক আল্লাহ ব্যতীত কারো নিকট প্রার্থনা করে না, ফরিয়াদ করে না, তিনি ব্যতীত কারো ওপর তাওয়াক্কুল করে না, কারো কাছে আশা করে না, কারো জন্য জবেহ করে না এবং তিনি ব্যতীত কাউকে কোনো প্রকার ইবাদত উৎসর্গ করে না, বরং আল্লাহ ব্যতীত যাদের ইবাদাত করা হয়, তাদের সবাইকে অস্বীকার করে এবং একমাত্র আল্লাহর দিকে প্রত্যর্পণ করে।লক্ষ্য করুন! লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর অর্থ কী মহান, কী স্পষ্ট, কী দ্ব্যর্থহীন, তবে আল্লাহ তাআলার তাওফীক ব্যতীত তা অর্জন করা সম্ভব নয়। একমাত্র তিনিই তাওফীক দাতা।

Shop Al Quran

loader-image
নুরানী কুরআন শরীফের বাংলা অনুবাদ ও উচ্চারণ, মিনি তাফসীর- রঙিন (বড়)
Original price was: ৳ 2,000.00.Current price is: ৳ 1,850.00.
নুরানী বাংলা কোরআন শরীফ
Original price was: ৳ 1,800.00.Current price is: ৳ 1,650.00.
হাফেজী কালার কোডেড কোরআন
Original price was: ৳ 2,200.00.Current price is: ৳ 1,550.00.
Interpretation of the meaning The Noble Quran
Original price was: ৳ 1,850.00.Current price is: ৳ 1,700.00.
নূরানি কোরআন- কালার কোডেড
Original price was: ৳ 2,500.00.Current price is: ৳ 2,350.00.
Nurani Color Coded Quran
Original price was: ৳ 2,500.00.Current price is: ৳ 2,350.00.
Nurani Quran Mena Book House
Original price was: ৳ 1,150.00.Current price is: ৳ 980.00.
বর্ণ ও বিষয়ভিত্তিক- আল কুরআনুল করীম
Original price was: ৳ 2,200.00.Current price is: ৳ 1,590.00.
Bangla Al Quran
Original price was: ৳ 4,000.00.Current price is: ৳ 1,980.00.
সহীহ নুরানী কুরআন
Original price was: ৳ 1,250.00.Current price is: ৳ 920.00.
নুরানী বাংলা কোরআন শরীফ
Original price was: ৳ 1,200.00.Current price is: ৳ 690.00.
হাফেজী কালার কোডেড কোরআন
Original price was: ৳ 2,200.00.Current price is: ৳ 1,550.00.
The Noble Quran
Original price was: ৳ 4,000.00.Current price is: ৳ 3,850.00.
The Holy Quran Color Coded
Original price was: ৳ 3,000.00.Current price is: ৳ 1,750.00.
Quranul Karim
Original price was: ৳ 900.00.Current price is: ৳ 880.00.
নুরানী হাফেজী আল কুরআনুল কারীম
Original price was: ৳ 2,200.00.Current price is: ৳ 1,950.00.
নুরানী কোরআন শরীফ বাংলা অর্থ এবং উচ্চারণ
Original price was: ৳ 1,200.00.Current price is: ৳ 1,050.00.
Al Quran
Original price was: ৳ 4,000.00.Current price is: ৳ 1,980.00.
Rainbow Quran - Orange
Original price was: ৳ 2,500.00.Current price is: ৳ 2,250.00.
Bangla Arabic Al Quran
Original price was: ৳ 4,000.00.Current price is: ৳ 1,980.00.

Select options This product has multiple variants. The options may be chosen on the product page

নুরানী কোরআন শরীফ
Original price was: ৳ 1,050.00.Current price is: ৳ 950.00.
নূরানী তাজভীদ কোরআন
Original price was: ৳ 4,000.00.Current price is: ৳ 1,950.00.
English Quran Majid
Original price was: ৳ 800.00.Current price is: ৳ 750.00.
সহীহ নুরানী কোরআন শরীফ
Original price was: ৳ 1,525.00.Current price is: ৳ 1,050.00.
টপ আর্ট পেপারে নূরানী কুরআন শরীফ
Original price was: ৳ 2,000.00.Current price is: ৳ 1,850.00.
বঙ্গানুবাদ নূরানী কোরআন শরীফ
Original price was: ৳ 1,050.00.Current price is: ৳ 850.00.
আমার সখের নূরানী কোরআন শরীফ
Original price was: ৳ 3,000.00.Current price is: ৳ 1,990.00.
হাফেজী কালার কোডেড কোরআন
Original price was: ৳ 2,200.00.Current price is: ৳ 1,550.00.
নুরানী কোরআন শরীফ
Original price was: ৳ 2,500.00.Current price is: ৳ 1,750.00.
The Holy Quran
Original price was: ৳ 2,500.00.Current price is: ৳ 1,950.00.
তারতীলুল কুরআন
Original price was: ৳ 2,200.00.Current price is: ৳ 1,380.00.
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন
Original price was: ৳ 2,000.00.Current price is: ৳ 1,380.00.
Quran Majid Bangla Color Print
Original price was: ৳ 2,000.00.Current price is: ৳ 1,290.00.
আমার সখের নূরানী কোরআন শরীফ
Original price was: ৳ 3,000.00.Current price is: ৳ 1,990.00.
The Holy Quran Color Coded with English Translation
Original price was: ৳ 2,950.00.Current price is: ৳ 2,750.00.
Mushaf Madinah Arabic Quran
Original price was: ৳ 2,500.00.Current price is: ৳ 2,450.00.
কাবা ডিজাইনে মিডিয়াম সাইজ হাফেজি কুরআন
Original price was: ৳ 2,500.00.Current price is: ৳ 1,500.00.
আমার সখের নূরানী কোরআন শরীফ
Original price was: ৳ 3,000.00.Current price is: ৳ 1,990.00.
সহজ কোরআন সম্পূর্ণ ৩০ পারা (গোল্ড ক্বাবা ডিজাইন)
Original price was: ৳ 2,200.00.Current price is: ৳ 1,490.00.
Nurani Color Coded Quran
Original price was: ৳ 2,500.00.Current price is: ৳ 2,350.00.
Nurani Color Coded Quran
Original price was: ৳ 2,500.00.Current price is: ৳ 2,350.00.
কুরআন মাজীদ
Original price was: ৳ 1,180.00.Current price is: ৳ 990.00.
সখের নূরানী কোরআন শরীফ
Original price was: ৳ 3,000.00.Current price is: ৳ 1,990.00.
নূরানী হাফেজী তাজভীদ কোরআন মাজীদ
Original price was: ৳ 1,350.00.Current price is: ৳ 1,150.00.
Shahi Hafezi Quran (Golden Sleeve Zipper) -XL
Original price was: ৳ 2,000.00.Current price is: ৳ 1,750.00.
বাংলা তাফসির কুরআনুল কারীম
Original price was: ৳ 3,200.00.Current price is: ৳ 2,900.00.
আমার সখের নূরানী কোরআন শরীফ (বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ সহ)
Original price was: ৳ 3,000.00.Current price is: ৳ 1,990.00.
হাফেজী কালার কোডেড কোরআন
Original price was: ৳ 2,200.00.Current price is: ৳ 1,550.00.