আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 49, আল হুজুরাত (বাসগৃহসমূহ)

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 49, আল হুজুরাত (বাসগৃহসমূহ)



মদিনায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা: ১৮, রুকু সংখ্যা: ০২

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-০৫আল্লাহর রসূলের প্রটোকল।
০৬-১০ফাসিকের সংবাদ গ্রহণে সতর্ক হওয়ার নির্দেশ। রসূলের আনুগত্যের নির্দেশ। মুমিনদের দু’পক্ষ বিবাদে জড়িয়ে পড়লে বিরোধ মীমাংসার পদ্ধতি।
১১-১২মুমিনদের প্রতি কতিপয় মন্দ গুণাবলি পরিহার করার নির্দেশ।
১৩সৃষ্টিগতভাবে সব মানুষ সমান। আল্লাহর কাছে অধিক মর্যাদাবান লোক তারা, যারা তাকওয়ার দিক থেকে অগ্রগামী।
১৪-১৮প্রকৃত মুমিন কারা? ইসলাম গ্রহণ করা আল্লাহর উপকার করা নয়, বরং এটা ইসলাম গ্রহণকারীদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ।
49-1 : হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের সামনে কোনো বিষয়ে অগ্রগামী হয়ে যেয়োনা। আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সব দেখেন, সব শুনেন।
49-2 : হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা নবীর আওয়াযের উপর নিজেদের আওয়াযকে উঁচু করোনা এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উঁচু স্বরে কথা বলো তার সাথে সেভাবে উঁচু স্বরে কথা বলোনা। কারণ, এর ফলে নিষ্ফল হয়ে যাবে তোমাদের আমল, যা তোমরা টেরও পাবেনা।
49-3 : নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর রসূলের সামনে নিজেদের আওয়ায নিচু করে, আল্লাহ্ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্যে পরীক্ষা করে নিয়েছেন। তাদের জন্যে রয়েছে মাগফিরাত এবং এক মহাপুরস্কার।
49-4 : (হে নবী !) নিশ্চয়ই যারা তোমাকে তোমার ঘরের বাইরে থেকে ডাকাডাকি করে, তাদের অধিকাংশই বে - আকল।
49-5 : তুমি বের হয়ে তাদের কাছে আসা পর্যন্ত যদি তারা ধৈর্য ধরতো, সেটাই হতো তাদের জন্যে কল্যাণকর। আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়াময়।
49-6 : হে ঈমানদার লোকেরা! কোনো ফাসিক ব্যক্তি যদি তোমাদের কাছে কোনো খবর নিয়ে আসে, তোমরা তাকে পরীক্ষা করে দেখবে। কারণ, অজ্ঞতাবশত যেনো তোমরা কোনো গোষ্ঠীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না বসো এবং পরে যেনো তোমাদের কৃতকর্মের জন্যে তোমাদের অনুতপ্ত হতে না হয়।
49-7 : তোমরা মনে রাখবে, তোমাদের মধ্যে রয়েছেন আল্লাহর রসূল। সে অনেক বিষয়ে তোমাদের কথা মেনে নিলে তোমরাই সমস্যায় পড়বে। কিন্তু আল্লাহ্ তোমাদের কাছে ঈমানকে প্রিয় বানিয়ে দিয়েছেন এবং ঈমানকে তোমাদের হৃদয়ে করেছেন সুশোভিত। আর তিনি তোমাদের অপ্রিয় করে দিয়েছেন কুফুরি, ফাসেকি এবং অবাধ্যতাকে। এরাই সঠিক পথের অনুসারী,
49-8 : আল্লাহর অনুগ্রহ এবং দান হিসেবে। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞানী, প্রজ্ঞাবান।
49-9 : মুমিনদের দুটি দল যদি দ্বন্দ - সংঘাতে লিপ্ত হয়, তবে তোমরা তাদের মাঝে মীমাংসা করে দেবে। তাদের একটি দল যদি অপর দলের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করে, তবে যারা বাড়াবাড়ি করে তাদের বিরুদ্ধে তোমরা যুদ্ধ করবে যতোক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি তারা ফিরে আসে, তখন তাদের মাঝে ন্যায়সংগত ভাবে ফায়সালা করে দাও এবং সুবিচার করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পছন্দ করেন সুবিচারকদের।
49-10 : মুমিনরা পরস্পর ভাই ভাই, সুতরাং তোমরা ভাইদের মাঝে মীমাংসা করে দাও এবং আল্লাহকে ভয় করো, যাতে করে তোমরা রহমত প্রাপ্ত হও।
49-11 : হে ঈমানদার লোকেরা! কোনো পুরুষ যেনো অন্য পুরুষকে তিরস্কার না করে। কারণ যাকে তিরস্কার করা হয়, সে তিরস্কারকারী থেকে উত্তম হতে পারে। কোনো নারীও যেনো অপর নারীকে উপহাস না করে। কারণ, যাকে উপহাস করা হয়, সে উপহাসকারিণীর চাইতে উত্তম হতে পারে। তোমরা পরস্পরের প্রতি দোষারোপ করোনা এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকোনা। ঈমান আনার পর মন্দ নামে ডাকা অতি মন্দ। (এমনটি করার পর) যারা তওবা করবে না (অনুতপ্ত হবেনা) তারা যালিম।
49-12 : হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা বেশি বেশি ধারণা অনুমান করা থেকে দূরে থাকো, কারণ কোনো কোনো ধারণা অনুমান পাপ। তোমরা অপরের গোপন বিষয় সন্ধান করোনা এবং একে অপরের গীবত করোনা। তোমাদের কেউ কি তার মরা ভাইয়ের গোশ্ত খেতে চাইবে? তোমরা এমন কাজকে ঘৃণাই করো। আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তওবা কবুলকারী, পরম দয়াবান।
49-13 : হে মানুষ! আমরা তোমাদের সৃষ্টি করেছি একজন পুরুষ এবং একজন নারী থেকে, তারপর তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে করে তোমরা পরস্পরের সাথে পরিচিত হতে পারো। নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই অধিক মর্যাদাবান, যে অধিক মুত্তাকি। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ জ্ঞানী এবং অবগত।
49-14 : বেদুঈনরা বলে: ‘আমরা ঈমান এনেছি।’ তুমি বলো: ‘তোমরা ঈমান আনোনি, বরং তোমরা বলো: ‘আমরা আত্মসমর্পণ করেছি।’ কারণ, ঈমান এখনো তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি। তোমরা যদি আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করো, তাহলে তোমাদের আমল কিছুমাত্র কমানো হবেনা। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়াবান।
49-15 : মুমিন হলো তারা, যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও তাঁর রসূলের প্রতি এবং অত:পর আর সন্দেহ পোষণ করেনি, বরং আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে মাল - সম্পদ এবং জান - প্রাণ দিয়ে, এরাই (ঈমানের দাবিতে) সত্যবাদী।
49-16 : বলো: ‘তোমরা কি তোমাদের দীন সম্পর্কে আল্লাহকে জ্ঞান দিতে চাও? অথচ মহাকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই আল্লাহ্ জানেন। আল্লাহ্ প্রতিটি বিষয়ে জ্ঞানী।’
49-17 : তারা মনে করে, ইসলামে প্রবেশ করে তারা তোমাকে ধন্য করেছে। বলো: ‘তোমাদের ইসলামে প্রবেশ আমাকে ধন্য করেছে মনে করোনা। বরং তোমাদেরকে ঈমানের দিকে পরিচালিত করে আল্লাহ্ই তোমাদের ধন্য করেছেন। যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো (তবে একথা স্বীকার করো)।
49-18 : নিশ্চয়ই আল্লাহ্ জানেন মহাকাশ এবং পৃথিবীর সমস্ত গায়েব (অদৃশ্য)। তোমরা যা করো, আল্লাহ তা দেখেন।