আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 52, আত তুর (তুর পাহাড়)

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 52, আত তুর (তুর পাহাড়)



মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা: ৪৯, রুকু সংখ্যা: ০২

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-১৬কিয়ামত অবশ্যি অনুষ্ঠিত হবে, পুনরুত্থান অস্বীকারকারীরা অবশ্যি তাদের পাপের সাজা ভোগ করবে।
১৭-২৮আখিরাতে মুত্তাকিদের অফুরন্ত নিয়ামতের বিবরণ।
২৯-৩৪যারা রসূল ও কুরআনকে অস্বীকার করে তাদের ভ্রান্তি।
৩৫-৪৯তাওহীদের পক্ষে যুক্তি।
52-1 : শপথ তুর (পাহাড়) - এর।
52-2 : শপথ সেই কিতাবের যা ছত্রে ছত্রে লিখিত
52-3 : খোলা পৃষ্ঠায়।
52-4 : শপথ বাইতুল মামুরের।
52-5 : শপথ উঁচু ছাদের (আকাশের),
52-6 : শপথ উত্তাল সাগরের।
52-7 : নিশ্চয়ই তোমার প্রভুর আযাব সংঘটিত হবেই।
52-8 : তা প্রতিরোধ করার কেউ নেই।
52-9 : যেদিন আসমান চলতে থাকবে প্রচন্ড গতিতে,
52-10 : (ভয়ংকর) তীব্র গতিতে চলতে থাকবে পাহাড় পর্বত,
52-11 : সেদিন হবে চরম দুর্ভোগ প্রত্যাখ্যানকারীদের,
52-12 : যারা খেল তামাশার অসার কাজে লিপ্ত।
52-13 : সেদিন তাদের ধাক্কা মারতে মারতে নিয়ে যাওয়া হবে জাহান্নামের আগুনের দিকে।
52-14 : (বলা হবে:) এই সেই জাহান্নাম, যাকে তোমরা মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলে।
52-15 : এটা কি ম্যাজিক, নাকি তোমরা দেখছো না?
52-16 : এতে প্রবেশ করো, এর আযাব তোমরা সহ্য করতে পারো বা না পারো দুটোই সমান। তোমাদেরকে তো তোমাদেরই কৃতকর্মের প্রতিফল দেয়া হয়েছে।
52-17 : নিশ্চয়ই মুত্তাকিদের জন্যে রয়েছে জান্নাত আর নিয়ামতরাজি।
52-18 : তাদের প্রভু তাদের যেসব পুরস্কার দেবেন তারা সেসব ভোগ করতে থাকবে এবং তাদের প্রভু তাদের রক্ষা করবেন জাহিমের (জাহান্নামের) আযাব থেকে।
52-19 : (তাদের বলা হবে:) ‘তোমরা খাও এবং পান করো তৃপ্তি সহকারে তোমাদের নেক আমলের ফল।
52-20 : তারা সেখানে আসন গ্রহণ করবে হেলান দিয়ে সারিবদ্ধভাবে। আমরা তাদের জুড়ি হিসেবে দেবো আয়াতলোচনা হুরদের।
52-21 : আর যারা নিজেরা ঈমান এনেছে এবং তাদের সন্তানরাও ঈমানের পথে তাদের অনুগামী হয়েছে, আমরা তাদের সন্তানদেরকে তাদের সাথে একত্র করে দেবো এবং তাদের আমলের প্রতিদান কিছুমাত্র হ্রাস করবো না। প্রত্যেক ব্যক্তিই নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্যে দায়ী।
52-22 : আমরা তাদের সহযোগিতা করবো ফলফলারি এবং গোশত দিয়ে, যা - ই তারা পছন্দ করবে।
52-23 : তারা সেখানে পরস্পরের মধ্যে আদান প্রদান করতে থাকবে পানপাত্র, যা থেকে পান করলে কেউ অর্থহীন কথাবার্তাও বলবে না এবং কোনো প্রকার পাপ কাজেও লিপ্ত হবেনা।
52-24 : তাদের সেবায় ঘোরাঘুরি করতে থাকবে কিশোরেরা যারা নিয়োজিত থাকবে কেবল তাদেরই সেবায় এবং তারা দেখতে যেনো সুরক্ষিত মুক্তা।
52-25 : তারা একে অপরের মুখোমুখি হয়ে জিজ্ঞাসা করবে,
52-26 : বলবে: ‘‘ইতোপূর্বে (পৃথিবীর জীবনে) আমরা তো পরিবার পরিজনের মধ্যে আল্লাহর ভয়ে ভীত ছিলাম।
52-27 : ফলে আল্লাহ্ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং আমাদের রক্ষা করেছেন অগ্নি বায়ুর আযাব থেকে।
52-28 : আমরা ইতোপূর্বে (পৃথিবীর জীবনে) তাঁকেই ডাকতাম, নিশ্চয়ই তিনি পরম অনুগ্রহশীল, পরম দয়াবান।’’
52-29 : অতএব, তুমি উপদেশ দিয়ে যাও, তোমার প্রভুর অনুগ্রহে তুমি গণকও নও, পাগলও নও।
52-30 : নাকি তারা বলে: ‘সে একজন কবি? আমরা তার জন্যে সময়ের আবর্তনের অপেক্ষা করছি।’
52-31 : তুমি বলো: ‘তোমরা প্রতীক্ষা করো, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষায় থাকলাম।’
52-32 : নাকি তাদের বুদ্ধি তাদেরকে এর জন্যে প্রলুব্ধ করে? আর নাকি তারা সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়?
52-33 : নাকি তারা বলে: ‘এ কুরআন সে নিজে রচনা করে নিয়েছে?’ আসল কথা হলো, তারা বিশ্বাসই রাখেনা।
52-34 : তারা সত্যবাদী হয়ে থাকলে এ কুরআনের মতো কোনো বাণী উপস্থিত করুক।
52-35 : নাকি তারা স্রষ্টা ছাড়াই সৃষ্টি হয়েছে? আর নাকি তারা নিজেরাই স্রষ্টা?
52-36 : নাকি মহাকাশ এবং পৃথিবী তারা নিজেরাই সৃষ্টি করেছে? বরং তারা একীনই রাখেনা।
52-37 : নাকি তোমার প্রভুর ভান্ডার তাদের কাছে রয়েছে? আর নাকি তারা এসব কিছুর পাহারাদার?
52-38 : নাকি তাদের কাছে (আকাশে) আরোহণ করার সিঁড়ি আছে যা দিয়ে উঠে কথা শুনে? থাকলে তাদের সেই শ্রোতা সুস্পষ্ট প্রমাণ হাজির করুক।
52-39 : নাকি কন্যা সন্তান আল্লাহর, আর সব পুত্র সন্তান তোমাদের ?
52-40 : নাকি তুমি তাদের কাছে (তাদের উপদেশ দেয়ার জন্যে) পারিশ্রমিক চাইছো, আর তারা সেটাকে তাদের জন্যে বোঝা মনে করছে?
52-41 : নাকি তারা গায়েব জানে এবং তা তারা লিখে রাখছে?
52-42 : নাকি তারা কোনো চক্রান্ত করছে? জেনে রেখো, চক্রান্তের শিকার হয় কাফিররা নিজেরাই।
52-43 : নাকি আল্লাহর পরিবর্তে তাদের কোনো ইলাহ্ আছে? তাদের কৃত শিরক থেকে আল্লাহ্ পবিত্র ও মহান।
52-44 : তারা আকাশ থেকে কোনো টুকরা ভেঙ্গে পড়তে দেখলে বলবে: ‘এতো মেঘপুঞ্জ।’
52-45 : সুতরাং তাদের উপেক্ষা করো - যতোদিন না তারা সেই দিনটির সাক্ষাত লাভ করে যেদিন বজ্রের আঘাতে তারা হতচকিত হয়ে উঠবে।
52-46 : সেদিন তাদের চক্রান্ত তাদের কোনো কাজেই আসবেনা এবং সেদিন তাদের কোনো সাহায্যও করা হবেনা।
52-47 : যালিমদের জন্যে এছাড়াও আরো আযাব রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ লোকই জানেনা।
52-48 : তুমি তোমার প্রভুর নির্দেশের অপেক্ষায় সবর অবলম্বন করো। তুমি আমাদের দৃষ্টি পথেই রয়েছো। আর তোমার প্রভুর হামদসহ তাঁর তসবিহ করতে থাকো যখন শয্যা ত্যাগ করে উঠবে
52-49 : এবং রাত্রিবেলায়, আর তাঁর তসবিহ করতে থাকো তারকারাজির অস্তগমনের পর।