আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 53, আন নজম (নক্ষত্র)

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 53, আন নজম (নক্ষত্র)



মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা: ৬২, রুকু সংখ্যা: ০৩

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-১৮মুহাম্মদ সা.-এর রিসালাতের সত্যতা।
১৯-২৫শিরকের অসারতা।
২৬-৩২আখিরাতে অবিশ্বাস এক বিরাট অজ্ঞতা। আখিরাত অনুষ্ঠিত হবে ভালো ও মন্দ কাজের প্রতিফল দেয়ার জন্য। যারা কবিরা গুণাহ্ থেকে বিরত থাকে তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা।
৩৩-৫৫মূসা ও ইবরাহিমের কিতাবে যে উপদেশ ছিলো।
৫৬-৬২রিসালাতে মুহাম্মদীর সত্যতা।
53-1 : শপথ নক্ষত্রের, যখন তারা অস্তমিত হয়,
53-2 : তোমাদের সাথি বিপথগামীও হয়নি, বিভ্রান্তও হয়নি।
53-3 : সে নিজের খেয়াল খুশি মতো কথা বলেনা।
53-4 : সে যা বলে তা তো অহি, যা তার কাছে পাঠানো হয়।
53-5 : তাকে (এ কুরআন) শিক্ষা দেয় এক শক্তিধর
53-6 : প্রজ্ঞাবান (জিবরিল)। নিজের আকৃতিতে সে স্থির হয়েছিল,
53-7 : তখন সে ছিলো উপর দিগন্তে,
53-8 : তারপর সে তার কাছে আসে এবং অতি কাছে,
53-9 : ফলে তাদের মাঝখানে ব্যবধান বাকি থাকে মাত্র দুই ধনুকের ব্যবধান অথবা তার চাইতেও কম।
53-10 : তখন আল্লাহ্ তাঁর বান্দার প্রতি অহি করেন (জিবরিলের মাধ্যমে) যা অহি করার।
53-11 : সে যা দেখেছে তার অন্তর তা মিথ্যা বলেনি।
53-12 : সে যা দেখেছে তোমরা কি সে বিষয়ে তার সাথে বিতর্ক করবে?
53-13 : নিশ্চয়ই সে তাকে পরেও একবার দেখেছিল
53-14 : সিদরাতুল মুনতাহার কাছে।
53-15 : তার কাছেই রয়েছে জান্নাতুল মা’ওয়া।
53-16 : যখন সে সিদরাটি (কুল গাছটি) যা দিয়ে ঢাকার তা দিয়ে আচ্ছাদিত ছিলো।
53-17 : তার নজর বিভ্রম ঘটেনি এবং সে বিচ্যুতও হয়নি।
53-18 : সে তো তার প্রভুর শ্রেষ্ঠ নিদর্শনাবলি দেখেছে।
53-19 : তোমরা কি লাত ও উযযার বিষয়টি ভেবে দেখেছো?
53-20 : আর তৃতীয় আরেকটি মানাতের বিষয়টি?
53-21 : তবে কি তোমাদের জন্যে পুত্র সন্তান আর আল্লাহর জন্যে কন্যা সন্তান?
53-22 : এ ধরণের ভাগ তো সম্পূর্ণ অন্যায়।
53-23 : তোমাদের এগুলো তো কতোগুলো নামমাত্র, তোমরা এবং তোমাদের পূর্ব পুরুষরা এসব নাম দিয়েছো। আল্লাহ্ তো এগুলোর সমর্থনে কোনো প্রমাণ নাযিল করেননি। তোমরা তো অনুমান এবং কামনা - বাসনারই অনুসরণ করো। অথচ এদের কাছে তাদের প্রভুর পক্ষ থেকে হিদায়াত এসেছে।
53-24 : নাকি মানুষ যা চায়, তাই পায়?
53-25 : প্রকৃতপক্ষে, ইহকাল এবং আখিরাত সবই আল্লাহর।
53-26 : মহাকাশে কতো যে ফেরেশতা রয়েছে, তাদের শাফায়াতে কিছুমাত্র লাভ হবেনা, তবে আল্লাহ্ যদি অনুমতি দেন তারপর, এবং তিনি যার জন্যে অনুমতি দেন, আর তিনি যার প্রতি সন্তুষ্ট হন।
53-27 : নিশ্চয়ই যারা আখিরাতের প্রতি ঈমান আনেনা, তারাই ফেরেশতাদের নারীবাচক নাম দিয়ে থাকে।
53-28 : অথচ এ ব্যাপারে তাদের কোনো এলেমই নেই। তারা তো কেবল অনুমানের পিছে ছুটে। কিন্তু অনুমান সত্যের মোকাবেলায় কোনো কাজেই লাগেনা।
53-29 : সুতরাং যে আমার যিকির থেকে বিমুখ, তাকে উপেক্ষা করে চলো। সে তো দুনিয়ার জীবন ছাড়া আর কিছুই কামনা করেনা।
53-30 : তাদের জ্ঞানের দৌড় এ পর্যন্তই শেষ। তোমার প্রভু ভালো করেই জানেন, কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে, আর তিনি তাকেও ভালো করেই জানেন, যে সঠিক পথের অনুসারী।
53-31 : মহাকাশ এবং পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর, যাতে করে যারা বদ আমল করে তাদের মন্দ প্রতিফল দিয়ে দেন, আর যারা নেক আমল করে, তাদের শুভ প্রতিফল দান করেন।
53-32 : যারা কবিরা গুনাহ্ এবং ফাহেশা কাজ থেকে বিরত থাকে, যদিও ছোট খাটো গুনাহ্ হয়েই থাকে, তোমার প্রভু (তাদের ব্যাপারে) উদার ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের সম্পর্কে অবগত আছেন, যখন তিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছিলেন মাটি থেকে এবং যখন তোমরা মায়ের গর্ভে ছিলে ভ্রুণ হিসেবে। সুতরাং তোমরা নিজেদেরকে শুদ্ধতার সার্টিফিকেট দিওনা। তিনি ভালো করেই জানেন কে বেশি মুত্তাকি?
53-33 : তুমি কি ঐ ব্যক্তিকে দেখেছো, যে মুখ ফিরিয়ে নেয় (ইসলাম থেকে)?
53-34 : যে সামান্যই দান করে এবং পরে (তাও) বন্ধ করে দেয়?
53-35 : তার কাছে কি গায়েবের জ্ঞান আছে এবং সে কি সব দেখতে পায়?
53-36 : তাকে কি অবহিত করা হয়নি যা রয়েছে মূসার কিতাবে?
53-37 : এবং ইবরাহিমের কিতাবে, যে পূর্ণ করেছিল তার কর্তব্য?
53-38 : (সেসব কিতাবে রয়েছে:) কোনো বোঝা বহনকারী অপরের (পাপের) বোঝা বহন করবে না।
53-39 : মানুষ তাই পাবে, যা সে চেষ্টা করবে।
53-40 : এবং শীঘ্রি তাকে দেখানো হবে তার প্রচেষ্টা,
53-41 : তারপর তাকে দেয়া হবে পূর্ণ প্রতিফল,
53-42 : (সেসব কিতাবে) আরো রয়েছে যে, সব কিছুর সমাপ্তি হবে তোমার প্রভুর কাছে গিয়েই।
53-43 : তিনিই হাসাবেন এবং তিনিই কাঁদাবেন।
53-44 : তিনিই মউত ঘটান এবং তিনিই হায়াত দান করেন
53-45 : তিনিই সৃষ্টি করেন পুরুষ ও নারীর জোড়া
53-46 : নোতফা (শুক্র বিন্দু) থেকে যখন বীর্যপাত করা হয়।
53-47 : পুনরুত্থান ঘটানোর দায়িত্বও তাঁরই।
53-48 : তিনিই অভাবমুক্ত করেন এবং দান করেন প্রাচুর্য।
53-49 : তিনিই প্রভু শে’রা নক্ষত্রের।
53-50 : তিনিই হালাক (ধ্বংস) করেছিলেন প্রথম আদকে,
53-51 : সামুদ জাতিকেও - যাদের একজনকেও বাকি রাখেননি।
53-52 : এর আগে (ধ্বংস করেছিলেন) নূহের জাতিকেও। এরা সবাই ছিলো বড় যালিম আর চরম বিদ্রোহী।
53-53 : এছাড়াও (সেসব কিতাবে) রয়েছে যে, তিনি ধ্বংস করে দিয়েছিলেন উল্টে দেয়া জনপদকেও (লুতের জাতির শহরকে),
53-54 : তারপর তাদের আচ্ছন্ন করে নিয়েছিল - আচ্ছন্নকারী আযাব।
53-55 : এখন বলো, তোমার প্রভুর কোন্ নিয়ামত সম্পর্কে সন্দেহ করবে?
53-56 : এ নবীও একজন সতর্ককারী অতীতের সতর্ককারীদের মতোই।
53-57 : কিয়ামত সন্নিকটে,
53-58 : আল্লাহ্ ছাড়া কেউই তা উন্মুক্ত করতে সক্ষম নয়।
53-59 : তোমরা কি এই বাণীর (কুরআনের) ব্যাপারে বিস্ময়বোধ করছো?
53-60 : হাসাহাসি করছো? অথচ কাঁদছো না?
53-61 : আসলে তোমরা গাফিল।
53-62 : অতএব, তোমরা সাজদা করো আল্লাহকে এবং ইবাদত করো কেবল তাঁরই। (সাজদা)