Go Back
Book Id: 10030
আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম
Chapter: 60, আল মুমতাহানা (পরীক্ষনীয় নারী)
মদিনায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা ১৩, রুকু সংখ্যা: ০২এই সূরার আলোচ্যসূচি
|
60-1 : হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা আমার শত্রু এবং তোমাদের শত্রুকে অলি (বন্ধু ও পৃষ্ঠপোষক) হিসেবে গ্রহণ করোনা। তোমরা কি তাদের কাছে বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাচ্ছো? অথচ তোমাদের কাছে যে সত্য এসেছে তারা তার প্রতি কুফুরি করেছে। তোমরা তোমাদের প্রভু আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছো বলে তারা আল্লাহর রসূলকে এবং তোমাদেরকেও দেশ থেকে বের করে দিয়েছে। যদি তোমরা আমার পথে জিহাদে এবং আমার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে বের হয়ে থাকো, তবে কেন তোমরা গোপনে তাদের সাথে বন্ধুতা করছো? তোমরা যা গোপন করো আর যা প্রকাশ করো, তা আমি জানি। তোমাদের যে কেউ এমন কাজ করে, সে তো সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়। |
60-2 : তারা তোমাদের কাবু করতে পারলে তোমাদের শত্রু হয়ে যাবে এবং হাতে ও মুখে তোমাদের অনিষ্ট সাধন করবে। তারা তো কামনা করে তোমরাও যেনো কুফুরি করো। |
60-3 : কিয়ামতের দিন তোমাদের আত্মীয় - স্বজন এবং সন্তান - সন্ততি তোমাদের কোনো কাজে আসবে না। আল্লাহ্ তোমাদের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করে দেবেন। তোমরা যা করো আল্লাহ্ তার প্রতি দৃষ্টি রাখছেন। |
60-4 : তোমাদের জন্যে রয়েছে একটি উত্তম আদর্শ ইবরাহিম এবং তার সাথিদের মধ্যে। তারা তাদের কওমকে বলেছিল: ‘তোমাদের সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের ইবাদত (পূজা উপাসনা) করো তাদের সাথেও। আমরা তোমাদের অমান্য করছি। তোমাদের এবং আমাদের মাঝে শুরু হলো চিরন্তন শত্রুতা আর বিদ্বেষ যতোদিন না তোমরা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে।’ তবে ব্যতিক্রম শুধু নিজের পিতার প্রতি ইবরাহিমের এই কথাটা: ‘আমি আপনার ব্যাপারে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে যাবো, তবে আপনার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে কোনো কিছু করার অধিকার রাখিনা।’ ‘‘আমাদের প্রভু! আমরা তোমার প্রতি তাওয়াক্কুল করলাম, আমরা তোমারই অভিমুখী হলাম এবং প্রত্যাবর্তন তো হবে তোমারই কাছে। |
60-5 : আমাদের প্রভু! তুমি আমাদেরকে কাফিরদের নিপীড়নের পাত্র বানিয়ো না। হে প্রভু! তুমি আমাদের ক্ষমা করে দাও। নিশ্চয়ই তুমি মহাশক্তিধর, মহাপ্রজ্ঞাবান।’’ |
60-6 : তোমরা যারা আল্লাহর (সন্তুষ্টি) এবং পরকালের (সাফল্য) প্রত্যাশা করো, নিশ্চয়ই তাদের মধ্যে রয়েছে তোমাদের জন্যে উত্তম আদর্শ। কেউ যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, সে জেনে রাখুক, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ অভাবমুক্ত সপ্রশংসিত। |
60-7 : যাদের সাথে তোমাদের শত্রুতা রয়েছে, হয়তো আল্লাহ্ তাদের ও তোমাদের মাঝে বন্ধুতা সৃষ্টি করে দেবেন। আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান। আল্লাহ্ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়াবান। |
60-8 : দীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদের ঘরবাড়ি থেকে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে এবং ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ্ তোমাদের নিষেধ করেননা। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সুবিচারকারীদের ভালোবাসেন। |
60-9 : আল্লাহ্ তো কেবল তাদের সাথে বন্ধুতা করতেই নিষেধ করেন, যারা দীনের কারণে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে তোমাদের ঘরবাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে এবং তোমাদের বের করে দিতে সাহায্য করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুতা করে তারা যালিম। |
60-10 : হে ঈমানদার লোকেরা! মুমিন নারীরা মুহাজির হয়ে (তোমাদের) কাছে এলে তোমরা তাদের পরীক্ষা করে নিও। তাদের ঈমান সম্পর্কে আল্লাহ্ই অধিক জানেন। তোমরা যদি জানতে পারো, তারা সত্যি মুমিনা, তবে তাদের কাফিরদের কাছে ফেরত পাঠিয়োনা। কারণ তারা কাফিরদের জন্যে হালাল নয়, আর কাফিররাও তাদের জন্যে হালাল নয়। কাফিররা তাদের জন্যে যা (যে মোহরানা) ব্যয় করেছে তা তাদের ফেরত দেবে। অত:পর মোহরানা দিয়ে তাদের বিয়ে করলে তোমাদের কোনো দোষ হবেনা। তোমরা কাফির নারীদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক বজায় রেখোনা। তোমরা তাদের জন্যে যা (যে মোহরানা) ব্যয় করেছো তা ফেরত চাইবে এবং কাফিররাও চাইবে তারা যা ব্যয় করেছে। এটাই আল্লাহর বিধান। তিনি তোমাদের মাঝে ফায়সালা করে দেন। তিনি জ্ঞানী এবং প্রজ্ঞাবান। |
60-11 : তোমাদের কাফির স্ত্রীদেরকে দেয়া মোহরানার কিছু অংশ যদি তোমরা ফেরত না পাও এবং পরে যদি তোমরা সুযোগ পেয়ে যাও তাহলে যাদের স্ত্রীরা ওদিকে রয়ে গেছে তাদেরকে তাদের দেয়া মোহরানার সমপরিমাণ অর্থ দিয়ে দাও। তোমরা সেই আল্লাহকে ভয় করো যাঁর প্রতি তোমরা মুমিন (বিশ্বাসী)। |
60-12 : হে নবী! মুমিন নারীরা তোমার কাছে এসে বাইয়াত করতে চাইলে এসব শর্তে তাদের বাইয়াত গ্রহণ করে নাও: তারা আল্লাহর সাথে শরিক সাব্যস্ত করবেনা, চুরি করবেনা, জিনা করবেনা, নিজেদের সন্তানদের হত্যা করবেনা, জেনেশুনে অপবাদ রচনা করে রটাবেনা এবং ভালো কাজে তোমার নির্দেশ অমান্য করবেনা। তুমি আল্লাহর কাছে তাদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পরম ক্ষমাশীল, অতীব দয়াবান। |
60-13 : হে ঈমানদার লোকেরা! আল্লাহ্ যে কওমটির প্রতি ক্ষুব্ধ, তোমরা তাদের সাথে বন্ধুতা করোনা। তারা তো আখিরাত সম্পর্কে হতাশ হয়ে পড়েছে, যেমন হতাশ হয়েছে কবরের অধিবাসী কাফিররা। |