আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 69, আল হাক্কাহ্ (অবশ্যম্ভাবী ঘটনা)

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 69, আল হাক্কাহ্ (অবশ্যম্ভাবী ঘটনা)



মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা: ৫২, রুকু সংখ্যা: ০২

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-১৮অতীতে আখিরাত অস্বীকারকারী জাতিগুলো ধ্বংস হয়েছে। কিয়ামতের দৃশ্য।
১৯-২৪বিশ্বাসীরা আমলনামা পাবে ডান হাতে; তারা থাকবে মহাসুখে।
২৫-৩৭অপরাধীদের আমলনামা দেয়া হবে বাম হাতে; তাদের পরকালীন দুর্দশা।
৩৮-৫২কুরআন রাববুল আলামিন কর্তৃক অবতীর্ণ, অন্য কারো রচনা নয়। কুরআন কাফিরদের হতাশাগ্রস্ত করে দেয়।
69-1 : অবশ্যি ঘটবে সে ঘটনা!
69-2 : অবশ্যি ঘটবে কী ঘটনা?
69-3 : তুমি কিভাবে জানবে, অবশ্যি ঘটবে কী ঘটনা?
69-4 : আদ ও সামুদ জাতি অস্বীকার করেছিল সেই মহাদুর্ঘটনাকে।
69-5 : এর মধ্যে রয়েছে সামুদ জাতি, তাদের ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রলয়ংকর বিপর্যয় দিয়ে।
69-6 : এর মধ্যে রয়েছে আদ জাতি, তাদের ধ্বংস করা হয়েছিল প্রচন্ড ঘুর্ণিঝড় দিয়ে।
69-7 : আল্লাহ সেটি তাদের উপর প্রবাহিত রেখেছিলেন সাত রাত আট দিন অবিরাম। তুমি সেখানে উপস্থিত থাকলে দেখতে, পুরো জাতিটি সেখানে (মরে) লুটিয়ে পড়ে আছে উপড়ে পড়া খেজুর গাছের কান্ডের মতো।
69-8 : তুমি তাদের কাউকেও অবশিষ্ট দেখতে পাচ্ছো কি?
69-9 : তারপর এসেছিল ফেরাউন, তার পূর্ববর্তীরা আর পাপাচারে লিপ্ত থাকা উল্টে দেয়া জনপদ (অর্থাৎ কওমে লুত)।
69-10 : তারা তাদের প্রভুর রসূলকে অমান্য করেছিল। এর ফলে তিনি তাদের পাকড়াও করেন কঠোর পাকড়াও।
69-11 : (এর আগে নূহের সময়) পানি যখন উথলে উঠেছিল আমরা তোমাদের তুলে নিয়েছিলাম নৌযানে,
69-12 : এসব ঘটনাকে আমরা তোমাদের জন্যে বানিয়েছি শিক্ষার বিষয়। আর যেসব কান এগুলো শুনে তারা যেনো এগুলো সংরক্ষণ করে।
69-13 : তারপর যখন শিঙায় ফুৎকার দেয়া হবে, একটি (প্রথম) ফুৎকার,
69-14 : এবং পৃথিবী ও পর্বতমালাকে উঠিয়ে নিক্ষেপ করা হবে, তখন এক ধাক্কায়ই সেগুলো হয়ে যাবে চুর্ণবিচুর্ণ।
69-15 : সেদিনই সংঘটিত হবে ওয়াকিয়া (মহাদুর্ঘটনা)।
69-16 : তখন ফেটে চৌচির হয়ে যাবে আকাশ এবং তা পড়তে থাকবে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে।
69-17 : ফেরেশতারা অবস্থান করবে তার (আকাশের) প্রান্তে। সেদিন তাদের উপর আটজন (ফেরেশতা) ধারণ করবে তোমার প্রভুর আরশ।
69-18 : সেদিন তোমাদের উপস্থিত করা হবে এবং তোমাদের কোনো কিছুই থাকবেনা গোপন।
69-19 : তখন যার কিতাব (কৃতকর্মের রেকর্ড) দেয়া হবে তার ডান হাতে, সে বলবে: ‘‘নাও পড়ে দেখো আমার কিতাব (রেকর্ড),
69-20 : আমি বিশ্বাস করতাম, আমাকে অবশ্যি হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে।’’
69-21 : ফলে সে এমন জীবন যাপন করবে, যাতে সে রাজি খুশি ও সন্তুষ্ট থাকবে।
69-22 : সে থাকবে মর্যাদাপূর্ণ জান্নাতে (বাগ বাগিচায়),
69-23 : তার ফলরাশি নুয়ে থাকবে নাগালের মধ্যেই।
69-24 : (তাদের বলা হবে:) খাও, পান করো পরিতুষ্টির সাথে, সেই কাজের বিনিময়ে যা তোমরা করেছিলে অতীত দিনে (পৃথিবীর জীবনে)।
69-25 : কিন্তু যাকে তার কিতাব (রেকর্ড) দেয়া হবে তার বাম হাতে, সে বলবে: ‘‘হায়, আমার ধ্বংস, (কতো ভালো হতো) আমাকে যদি দেয়া না হতো আমার কিতাব!
69-26 : (হায়,) আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব।
69-27 : (হায়,) আমার মৃত্যুই যদি হতো আমার শেষ ফায়সালা।
69-28 : আমার মাল - সম্পদ তো আমার কোনো কাজেই এলোনা।
69-29 : আমার সমস্ত ক্ষমতা - দাপটই তো আমার থেকে হয়ে গেছে হালাক।’’
69-30 : (ফেরেশতাদের বলা হবে:) ‘‘একে পাকড়াও করো এবং বেড়ি লাগাও তার গলায়।
69-31 : তারপর নিক্ষেপ করো জাহিমে।
69-32 : অতপর তাকে বাঁধো সত্তর হাত লম্বা শিকল দিয়ে।’’
69-33 : সে ঈমান আনেনি মহান আল্লাহর প্রতি,
69-34 : (মানুষকে) উৎসাহ দেয়নি মিসকিনদের আহার করাতে।
69-35 : তাই তার জন্যে আজ এখানে নেই কোনো সহমর্মী,
69-36 : (তার জন্যে) নেই কোনো খাবার ক্ষতের পূঁজ ছাড়া,
69-37 : যা আর কেউই খাবেনা অপরাধীরা ছাড়া।
69-38 : আমি কসম করছি সেসবের, যা তোমরা দেখতে পাও,
69-39 : আর সেসবের যা তোমরা দেখতে পাওনা:
69-40 : নিশ্চয়ই এ (কুরআন) একজন সম্মানিত রসূলের কথা।
69-41 : এটি কোনো কবি রচিত কথা নয়; তবে খুব কমই তোমরা বিশ্বাস করো।
69-42 : এটি কোনো গণকের কথাও নয়, তবে খুব কমই তোমরা উপলব্ধি করো।
69-43 : এটি হলো রাববুল আলামিনের নাযিল করা (কিতাব)।
69-44 : সে (মুহাম্মদ) যদি আমাদের নামে কোনো কথা বানিয়ে নিয়ে চালাবার চেষ্টা করতো,
69-45 : আমরা অবশ্যি ধরে ফেলতাম তার ডান হাত,
69-46 : তারপর কেটে ফেলতাম তার জীবন - ধমনী।
69-47 : তোমাদের মধ্যে এমন কেউই থাকতো না, যে রক্ষা করতে পারতো তাকে।
69-48 : নিশ্চয়ই এ (কুরআন) এক উপদেশ মুত্তাকি (সতর্ক) লোকদের জন্যে।
69-49 : অবশ্যি আমরা জানি, তোমাদের মধ্যে রয়েছে মিথ্যাবাদীরা।
69-50 : অবশ্যি এ (কুরআন) কাফিরদের জন্যে এক অনুতাপের কারণ।
69-51 : নিশ্চয়ই এ (কুরআন) এক বাস্তব সত্য।
69-52 : সুতরাং তুমি তসবিহ করতে থাকো তোমার মহান প্রভুর নাম নিয়ে।