আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম, Chapter: 72, আল জিন

Go Back
Book Id: 10030

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম

Chapter: 72, আল জিন



মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা ২৮, রুকু সংখ্যা: ০২

এই সূরার আলোচ্যসূচি

আয়াতআলোচ্য বিষয়
০১-১৯একদল জিন রসূলের কাছে কুরআন শুনেছে বলে রসূলকে জানানো হয়েছে। তারপর জিনেরা তাদের জাতির কাছে গিয়ে ঈমান ও ইসলামের যে দাওয়াত দেয় তার বিবরণ।
২০-২৮রসূলকে তাওহীদ ও আখিরাতের দাওয়াত দানের নির্দেশ।
72-1 : হে নবী! বলো: আমার কাছে অহি করা হয়েছে যে, একদল জিন মনোযোগ দিয়ে (কুরআন) শুনেছে। তারপর তারা (তাদের সম্প্রদায়ের কাছে গিয়ে) বলেছে: ‘‘আমরা শুনে এসেছি এক বিস্ময়কর কুরআন,
72-2 : সেটি হিদায়াত করে সঠিক পথের দিকে। তাই আমরা সেটির প্রতি ঈমান এনেছি। আমরা কখনো আমাদের প্রভুর সাথে কাউকেও শরিক করবোনা।
72-3 : নিশ্চয়ই অনেক উঁচু আমাদের মহান প্রভুর মর্যাদা। তিনি না কোনো স্ত্রী গ্রহণ করেছেন, না সন্তান।
72-4 : আমাদের নির্বোধরা তাঁর সম্পর্কে অবাস্তব কথাবার্তা বলতো।
72-5 : আমরা মনে করতাম, মানুষ এবং জিন আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করেনা।
72-6 : আর মানুষের মধ্যে কিছু লোক কিছু জিনের আশ্রয় গ্রহণ করতো। এটা জিনদের দাম্ভিকতা বাড়িয়ে দিতো।’’
72-7 : জিনেরা তাদের সম্প্রদায়ের কাছে আরো বলেছিল: ‘‘তোমাদের মতো মানুষও মনে করতো, আল্লাহ কাউকেও পুনরুত্থিত করবেননা।
72-8 : আমরা চেয়েছিলাম আকাশের খবর সংগ্রহ করতে, কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম সেখানে কঠোর প্রহরীতে ভরা, আরো দেখতে পেলাম ব্যাপক উল্কা পিন্ড।
72-9 : ইতোপূর্বে আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে খবর সংগ্রহের জন্যে বসতাম। কিন্তু এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে নিক্ষেপের জন্যে প্রস্ত্তত উল্কাপিন্ডের সম্মুখীন হয়।
72-10 : আমরা জানিনা, বিশ্ববাসীর মন্দই কি চাওয়া হচ্ছে, নাকি তাদের প্রভু তাদের সঠিক পথে আনতে চাইছেন?
72-11 : আমাদের মধ্যে কিছু পুণ্যবানও আছে, কিছু আছে এর ব্যতিক্রমও। মূলত আমরা ছিলাম বহু পথের অনুসারী।
72-12 : এখন আমরা বুঝতে পেরেছি, বিশ্বের বুকে আমরা আল্লাহকে পরাভূত করতে পারবো না এবং তাঁকে আমরা ব্যর্থও করতে পারবোনা।
72-13 : আমরা যখন হিদায়াতের বাণী শুনলাম, আমরা তাতে ঈমান আনলাম। যে কেউ তার প্রভুর প্রতি ঈমান আনবে তার কোনো ক্ষতি বা অন্যায়ের আশংকা থাকবেনা।
72-14 : আমাদের মধ্যে মুসলিমও আছে, সীমালংঘনকারীও আছে। যারা মুসলিম (আত্মসমর্পনকারী) হয়েছে তারা স্বাধীনভাবে সঠিক পথ বেছে নিয়েছে।
72-15 : কিন্তু সীমালংঘনকারীরা তো হবে জাহান্নামেরই জ্বালানি।’’
72-16 : তারা যদি সত্য পথে কায়েম থাকতো, অবশ্যি আমরা প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করে তাদের সমৃদ্ধ করতাম।
72-17 : তার মাধ্যমে আমরা তাদের পরীক্ষা করতাম। যে কেউ তার প্রভুর যিকির থেকে বিমুখ হবে, তিনি তাকে প্রবেশ করাবেন দুঃসহ আযাবে।
72-18 : মসজিদসমূহ আল্লাহর, সুতরাং তোমরা আল্লাহর সাথে কাউকেও ডেকোনা।
72-19 : আল্লাহর দাস (মুহাম্মদ) যখন তাঁকে ডাকার জন্যে (সালাতে) দাঁড়ায়, তখন তারা তার কাছে ভীড় জমায়।
72-20 : হে মুহাম্মদ! বলো: ‘নিশ্চয়ই আমি আমার প্রভুকে ডাকি তাঁর কাছেই দোয়া করি, কিন্তু তাঁর সাথে কাউকেও শরিক করিনা।’
72-21 : বলো: ‘আমি তোমাদের ক্ষতি বা লাভের মালিক নই।’
72-22 : বলো: ‘‘আল্লাহর পাকড়াও থেকে কেউই আমাকে রক্ষা করতে পারবেনা এবং তাঁকে ছাড়া আমি কোনো আশ্রয়ও পাবোনা।
72-23 : আল্লাহর বার্তা পৌঁছে দেয়াই কেবল আমার দায়িত্ব।’’ যে কেউ আল্লাহকে এবং তাঁর রসূলকে অমান্য করবে, তার জন্যে জাহান্নামই অবধারিত, চিরদিন চিরকাল তারা পড়ে থাকবে সেখানেই।
72-24 : তারা যখন প্রতিশ্রুত শাস্তি দেখতে পাবে, তখনই জানতে পারবে সাহায্যকারী হিসেবে কে দুর্বল আর কে সংখ্যায় নগণ্য?
72-25 : হে নবী! বলো: ‘‘আমি জানিনা, তোমাদেরকে যে বিষয়ের ওয়াদা দেয়া হয়েছে তা কি নিকটে নাকি আমার প্রভু সেটার জন্যে দীর্ঘ সময় নির্দিষ্ট করবেন।
72-26 : তিনিই আলেমুল গায়েব - গায়েব - এর জ্ঞানী। তাঁর গায়েবি জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করা হয়না।’’
72-27 : তবে তাঁর মনোনীত কোনো রসূলকেই তিনি তা অবহিত করেন। সেক্ষেত্রে ঐ রসূলের সামনে এবং পেছনে তিনি প্রহরী নিযুক্ত করেন,
72-28 : রসূলরা তাদের প্রভুর বার্তা পৌঁছে দিয়েছে কিনা তা জানার জন্যে। তাদের কাছে যা আছে তা তাঁর জ্ঞানের পরিবেষ্টনেই রয়েছে। তিনি গুণে গুণে হিসাব রাখেন সব কিছুর।