51-1 : শপথ ধূলিঝঞ্ঝার, |
51-2 : শপথ বোঝা বহনকারী মেঘপুঞ্জের, |
51-3 : শপথ স্বচ্ছন্দগতি নৌযানের, |
51-4 : শপথ কর্ম বণ্টনকারী ফিরিশ্তাগণের - |
51-5 : তোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অবশ্যই সত্য। |
51-6 : কর্মফল দিবস অবশ্যম্ভাবী। |
51-7 : শপথ বহু পথবিশিষ্ট আকাশের, |
51-8 : তোমরা তো পরস্পর বিরোধী কথায় লিপ্ত। |
51-9 : যে ব্যক্তি সত্যভ্রষ্ট সে - ই উহা পরিত্যাগ করে, |
51-10 : অভিশপ্ত হউক মিথ্যাচারীরা, |
51-11 : যাহারা অজ্ঞ ও উদাসীন! |
51-12 : উহারা জিজ্ঞাসা করে, ‘কর্মফল দিবস কবে হইবে?’ |
51-13 : বল, ‘সেই দিন যখন উহাদেরকে শাস্তি দেওয়া হইবে অগ্নিতে।’ |
51-14 : ‘তোমরা তোমাদের শাস্তি আস্বাদন কর, তোমরা এই শাস্তিই ত্বরান্বিত করিতে চাহিয়াছিলে।’ |
51-15 : সেদিন নিশ্চয়ই মুত্তাকীরা থাকিবে প্রস্রবণ - বিশিষ্ট জান্নাতে, |
51-16 : উপভোগ করিবে তাহা যাহা তাহাদের প্রতিপালক তাহাদেরকে দিবেন; কারণ পার্থিব জীবনে তাহারা ছিল সৎকর্মপরায়ণ, |
51-17 : তাহারা রাত্রির সামান্য অংশই অতিবাহিত করিত নিদ্রায়, |
51-18 : রাত্রির শেষ প্রহরে তাহারা ক্ষমা প্রার্থনা করিত, |
51-19 : এবং তাহাদের ধন - সম্পদে রহিয়াছে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতের হক। |
51-20 : নিশ্চিত বিশ্বাসীদের জন্য নিদর্শন রহিয়াছে ধরিত্রীতে |
51-21 : এবং তোমাদের মধ্যেও। তোমরা কি অনুধাবন করিবে না? |
51-22 : আকাশে রহিয়াছে তোমাদের রিযিক ও প্রতিশ্রুতি সমস্ত কিছু। |
51-23 : আকাশ ও পৃথিবীর প্রতিপালকের শপথ! অবশ্যই তোমাদের বাক্স্ফূর্তির মতই এই সকল সত্য। |
51-24 : তোমার নিকট ইব্রাহীমের সম্মানিত মেহমানদের বৃত্তান্ত আসিয়াছে কি? |
51-25 : যখন উহারা তাহার নিকট উপস্থিত হইয়া বলিল, ‘সালাম’। উত্তরে সে বলিল,‘সালাম’। ইহারা তো অপরিচিত লোক। |
51-26 : অতঃপর ইব্রাহীম তাহার স্ত্রীর নিকট গেল এবং একটি মাংসল গো - বৎস ভাজা লইয়া আসিল |
51-27 : ও তাহাদের সামনে রাখিল এবং বলিল, ‘তোমরা খাইতেছ না কেন?’ |
51-28 : ইহাতে উহাদের সম্পর্কে তাহার মনে ভীতির সঞ্চার হইল। উহারা বলিল, ‘ভীত হইও না।’ অতঃপর উহারা তাহাকে এক জ্ঞানী পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিল। |
51-29 : তখন তাহার স্ত্রী চিৎকার করিতে করিতে সম্মুখে আসিল এবং গাল চাপড়াইয়া বলিল, ‘এই বৃদ্ধ - বন্ধ্যার সন্তান হইবে!’ |
51-30 : তাহারা বলিল, ‘তোমার প্রতিপালক এইরূপই বলিয়াছেন ; তিনিই প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ।’ |
51-31 : ইব্রাহীম বলিল, ‘হে ফিরিশ্তাগণ! তোমাদের বিশেষ কাজ কী?’ |
51-32 : উহারা বলিল, ‘আমাদেরকে এক অপরাধী সম্প্রদায়ের প্রতি প্রেরণ করা হইয়াছে। |
51-33 : ‘উহাদের উপর নিক্ষেপ করিবার জন্য মাটির শক্ত ঢেলা, |
51-34 : ‘যাহা সীমালংঘনকারীদের জন্য চিহ্নিত তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে।’ |
51-35 : সেখানে যেসব মু’মিন ছিল আমি তাহাদেরকে উদ্ধার করিয়াছিলাম, |
51-36 : আর সেখানে আমি একটি পরিবার ব্যতীত কোন আত্মসর্মপণকারী পাই নাই। |
51-37 : যাহারা মর্মন্তুদ শাস্তিকে ভয় করে আমি তাহাদের জন্য উহাতে একটি নিদর্শন রাখিয়াছি। |
51-38 : এবং নিদর্শন রাখিয়াছি মূসার বৃত্তান্তে, যখন আমি তাহাকে স্পষ্ট প্রমাণসহ ফির‘আওনের নিকট প্রেরণ করিয়া - ছিলাম, |
51-39 : তখন সে ক্ষমতার দম্ভে মুখ ফিরাইয়া লইল এবং বলিল, ‘এই ব্যক্তি হয় এক জাদুকর, না হয় এক উন্মাদ। |
51-40 : সুতরাং আমি তাহাকে ও তাহার দলবলকে শাস্তি দিলাম এবং উহাদের সমুদ্রে নিক্ষেপ করিলাম, সে তো ছিল তিরস্কারযোগ্য। |
51-41 : এবং নিদর্শন রহিয়াছে ‘আদের ঘটনায়, যখন আমি তাহাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করিয়াছিলাম অকল্যাণকর বায়ু ; |
51-42 : ইহা যাহা কিছুর উপর দিয়া বহিয়া গিয়াছিল তাহাকেই চূর্ণ - বিচূর্ণ করিয়া দিয়াছিল, |
51-43 : আরও নিদর্শন রহিয়াছে সামূদের বৃত্তান্তে, যখন তাহাদেরকে বলা হইয়াছিল, ‘ভোগ করিয়া নাও স্বল্পকাল।’ |
51-44 : কিন্তু উহারা উহাদের প্রতিপালকের আদেশ অমান্য করিল ; ফলে উহাদের প্রতি বজ্রাঘাত হইল এবং উহারা উহা দেখিতেছিল। |
51-45 : উহারা উঠিয়া দাঁড়াইতে পারিল না এবং উহা প্রতিরোধ করিতেও পারিল না। |
51-46 : আমি ধ্বংস করিয়াছিলাম ইহাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়কে, ইহারা তো ছিল সত্যত্যাগী সম্প্রদায়। |
51-47 : আমি আকাশ নির্মাণ করিয়াছি আমার ক্ষমতাবলে এবং আমি অবশ্যই মহা - সম্প্রসারণকারী। |
51-48 : আর ভূমি, আমি উহাকে বিছাইয়া দিয়াছি, আমি কত সুন্দর প্রসারণকারী! |
51-49 : আর প্রত্যেক বস্তু আমি সৃষ্টি করিয়াছি জোড়ায় জোড়ায়, যাহাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। |
51-50 : অতএব তোমরা আল্লাহ্র দিকে ধাবিত হও, আমি তো তোমাদের প্রতি আল্লাহ্ - প্রেরিত স্পষ্ট সতর্ককারী। |
51-51 : তোমরা আল্লাহ্র সঙ্গে কোন ইলাহ্ স্থির করিও না; আমি তোমাদের প্রতি আল্লাহ্ - প্রেরিত স্পষ্ট সতর্ককারী। |
51-52 : এইভাবে উহাদের পূর্ববর্তীদের নিকট যখনই কোন রাসূল আসিয়াছে উহারা তাহাকে বলিয়াছে, ‘তুমি তো এক জাদুকর, না হয় এক উন্মাদ!’ |
51-53 : উহারা কি একে অপরকে এই যন্ত্রণাই দিয়া আসিয়াছে? বস্তুত উহারা সীমা - লংঘনকারী সম্প্রদায়। |
51-54 : অতএব তুমি উহাদেরকে উপেক্ষা কর, ইহাতে তুমি অভিযুক্ত হইবে না। |
51-55 : তুমি উপদেশ দিতে থাক, কারণ উপদেশ মু’মিনদেরই উপকারে আসে। |
51-56 : আমি সৃষ্টি করিয়াছি জিন এবং মানুষকে এইজন্য যে, তাহারা আমারই ‘ইবাদত করিবে। |
51-57 : আমি উহাদের নিকট হইতে জীবিকা চাহি না এবং ইহাও চাহি না যে, উহারা আমার আহার্য যোগাইবে। |
51-58 : আল্লাহ্ই তো রিযিক দান করেন এবং তিনি প্রবল, পরাক্রান্ত। |
51-59 : জালিমদের প্রাপ্য তাহাই যাহা অতীতে উহাদের সমমতাবলম্বীরা ভোগ করিয়াছে। সুতরাং উহারা ইহার জন্য আমার নিকট যেন ত্বরা না করে। |
51-60 : কাফিরদের জন্য দুর্ভোগ তাহাদের সেই দিনের, যেই দিনের বিষয়ে উহাদেরকে সতর্ক করা হইয়াছে। |