আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, জহুরুল হক, Chapter: 10, ইউনুস

Go Back
Book Id: 10060

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, জহুরুল হক

Chapter: 10, ইউনুস

10-1 : আলিফ, লাম, রা। এগুলো জ্ঞানগর্ভ গ্রন্থের আয়াতসমূহ।
10-2 : এ কি মানবগোষ্ঠীর জন্য বিস্ময়ের ব্যাপার যে তাদেরই মধ্যেকার একজন মানুষকে আমরা প্রত্যাদেশ দিয়েছি এই ব’লে - - ''তুমি মানবজাতিকে সতর্ক করো, আর যারা ঈমান এনেছে তাদের সুসংবাদ দাও যে তাদের জন্য তাদের প্রভুর কাছে রয়েছে সুনিশ্চিত পদমর্যাদা’’? অবিশ্বাসীরা বলে - - ''নিঃসন্দেহ এ একজন জলজ্যান্ত জাদুকর।’’
10-3 : নিঃসন্দেহ তোমাদের প্রভু হচ্ছেন আল্লাহ্ যিনি মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, তখন তিনি অধিষ্ঠিত হলেন আরশের উপরে, তিনি সমস্ত ব্যাপার নিয়ন্ত্রণ করেন। তাঁর অনুমতিক্রমে ব্যতীত কোনো সুপারিশকারী নেই। এই - ই আল্লাহ্ - - তোমাদের প্রভু, অতএব তাঁরই উপাসনা করো। তোমরা কি তবে খেয়াল করো না।
10-4 : তাঁরই দিকে তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন। আল্লাহ্‌র এই প্রতি‌শ্রুতি ধ্রুবসত্য। নিঃসন্দেহ তিনিই সৃষ্টির সূচনা করেন, তারপর তিনি তার পুনরাবর্তন ঘটান, যেন তিনি ন্যায়সঙ্গতভাবে পারিতোষিক দিতে পারেন তাদের যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে। আর যারা অবিশ্বাস করে তাদের জন্যে রয়েছে ফুটন্ত জলের পানীয়, আর মর্মন্তুদ শাস্তি, কেননা তারা অবিশ্বাস পোষণ করত।
10-5 : তিনিই তো সূর্যকে করেছেন তেজস্কর, আর চন্দ্রকে জ্যোতির্ময়, আর তার জন্য নির্ধারিত করেছেন অবস্থানসমূহ যেন তোমরা জানতে পারো বৎসরের গণনা ও হিসাব। আল্লাহ্ এ সৃষ্টি করেন নি সার্থকতা ছাড়া। তিনি নির্দেশাবলী বিশদ - ব্যাখ্যা করেন সেইসব লোকের জন্য যারা জ্ঞান রাখে।
10-6 : নিঃসন্দেহ রাত ও দিনের বিবর্তনের মধ্যে, আর আল্লাহ্ যা - কিছু সৃষ্টি করেছেন মহাকাশে ও পৃথিবীতে, সে - সমস্তে রয়েছে নিদর্শন সেইসব লোকের জন্যে যারা ধর্মপরায়ণ।
10-7 : নিঃসন্দেহ যারা আমাদের সাথে মুলাকাত আশা করে না আর পার্থিব জীবনেই পরিতৃপ্ত থাকে আর তাতেই নিশ্চিন্ত বোধ করে, আর যারা আমাদের নির্দেশাবলীতে অমনোযোগী, - -
10-8 : এরাই - - এদের আবাসস্থল হচ্ছে আগুন, তারা যা উপার্জন করেছে সেজন্য।
10-9 : নিঃসন্দেহ যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের প্রভু তাদের পথ দেখিয়ে নেবেন তাদের বিশ্বাসের দ্বারা, - - তাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলবে ঝরনারাজি আনন্দময় বাগানে।
10-10 : সেখানে তাদের আহ্বান হবে - - ''তোমারই মহিমা হোক, হে আল্লাহ্‌?’’ আর তাদের অভিবাদন সেখানে হবে - - ''সালাম’’, আর তাদের শেষ আহ্বান হবে - - ''সকল প্রশংসা হচ্ছে আল্লাহ্‌র যিনি সমস্ত বিশ্বজগতের প্রভু’’।
10-11 : আল্লাহ্ যদি মানুষের জন্য অকল্যাণ ত্বরান্বিত করতেন যেমন তারা তাদের জন্য কল্যাণ ত্বরান্বিত করতে চায়, তাহলে তাদের শেষ - পরিণতি তাদের উপরে ঘটে যেত। কিন্তু যারা আমাদের সাথে মুলাকাত করা পছন্দ করে না - - তাদের আমরা অন্ধভাবে ঘুরে বেড়াতে দিই তাদের অবাধ্যতার মধ্যে।
10-12 : আর যখন কোনো দুঃখ - দুর্দশা মানুষকে স্পর্শ করে সে তখন আমাদের ডাকে কাত হয়ে শায়িত অবস্থায় অথবা বসা অবস্থায় অথবা দাঁড়িয়ে থেকে, কিন্তু যখন আমরা তার থেকে তার বিপদ দূর করে দিই, সে তখন ঘুরে বেড়ায় যেন সে আমাদের কদাচ ডাকে নি বিপদের সময়ে যা তাকে স্পর্শ করেছিল। এইভাবে দায়িত্বহীনদের কাছে চিত্তাকর্ষক করা হয় যা তারা করে চলে।
10-13 : আর ইতিমধ্যে তোমাদের পূর্ববর্তী অনেক মানবগোষ্ঠীকে আমরা ধ্বংস করেছিলাম যখন তারা অনাচার করেছিল, আর তাদের রসূলগণ তাদের কাছে এসেছিলেন স্পষ্ট প্রমাণাবলী নিয়ে, কিন্তু তারা বিশ্বাস করতে প্রস্তুত ছিল না। এইভাবে আমরা প্রতিদান দিই অপরাধী সম্প্রদায়কে।
10-14 : তারপর আমরা তোমাদের এই পৃথিবীতে প্রতিনিধি বানিয়ে - ছিলাম তাদের পরে যেন আমরা দেখতে পারি তোমরা কেমনতর কাজ কর।
10-15 : আর যখন তাদের কাছে পাঠ করা হয় আমাদের সুস্পষ্ট বণীসমূহ, যারা আমাদের সাথে মুলাকাতের আশা করে না তারা বলে - - ''এ ছাড়া অন্য এক কুরআন আনো অথবা এটি বদলাও।’’ বলো, ''একে আমার নিজের ইচ্ছায় বদলানো আমার কাজ নয়। আমার কাছে যা প্রত্যাদিষ্ট হয় শুধু তারই আমি অনুসরণ করি। আমি আলবৎ ভয় করি, - - যদি আমি আমার প্রভুর অবাধ্য হই, - - এক ভয়ঙ্কর দিনের শাস্তির।’’
10-16 : বলো - - ''যদি আল্লাহ্ ইচ্ছা করতেন তবে আমি তোমাদের কাছে এ পাঠ করতাম না আর তিনিও তোমাদের কাছে এ জানাতেন না। আমি তো তোমাদের মধ্যে এর আগে এক জীবনকাল কাটিয়েছি। তোমরা কি তবে বোঝো না?’’
10-17 : কে তবে বেশি অন্যায়কারী তার চাইতে যে আল্লাহ্ সম্পর্কে মিথ্যা রচনা করে অথবা তাঁর নির্দেশসমূহ প্রত্যাখ্যান করে? নিঃসন্দেহ অপরাধীরা সফলকাম হবে না।
10-18 : আর ওরা আল্লাহ্‌কে ছেড়ে দিয়ে তার উপাসনা করে যা তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারে না বা তাদের উপকারও করতে পারে না, আর তারা বলে - - ''এরা আমাদের জন্য আল্লাহ্‌র কাছে সুপারিশকারী।’’ বলো - - ''তোমরা কি আল্লাহ্‌কে জানাতে চাও যা তিনি জানেন না মহাকাশে আর পৃথিবীতেও না?’’ তারঁই সব মহিমা! আর তারা যাকে অংশী করে তা হতে তিনি বহু ঊর্ধ্বে।
10-19 : মানবগোষ্ঠী একই জাতি বইতো নয়, তারপর তারা মতপার্থক্য করলো। আর যদি তোমার প্রভুর কাছ থেকে ঘোষণাটি বলা না হতো তাহলে যে বিষয়ে তারা মতভেদ করছে তা তাদের মধ্যে মীমাংসা হয়ে যেতো।
10-20 : আর তারা বলে - - ''তার প্রভুর কাছ থেকে কেন একটি নিদর্শন তার কাছে পাঠানো হয় না?’’ তবে বলো - - ''অদৃশ্য কেবল আল্লাহ্‌রই রয়েছে, কাজেই অপেক্ষা করো, নিঃসন্দেহ আমিও তোমাদেরই সঙ্গে অপেক্ষাকারীদের মধ্যেকার।’’
10-21 : আর যখন আমরা লোকদের করুণার আস্বাদ দিই কোনো দুঃখ - দুর্দশা তাদের স্পর্শ করার পরে, দেখো! তারা আমাদের নিদর্শনসমূহের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। বলো - - ''আল্লাহ্ পরিকল্পনা করায় অধিকতর তৎপর।’’ নিঃসন্দেহ আমাদের দূতরা লিখে রাখে যে ষড়যন্ত্র তোমরা করো।
10-22 : তিনিই সেইজন যিনি তোমাদের ভ্রমণ করান স্থলে ও জলে। তারপর তোমরা যখন জাহাজে থাকো, আর তাদের নিয়ে তা যাত্রা করে অনুকুল হওয়ায়, আর তারা তাতে মৌজ করে, তাতে এসে পড়ে এক ঝড়ো বাতাস, আর চতুর্দিক থেকে ঢেউ আসতে থাকে তাদের কাছে, আর তারা মনে করে যে তারা আলবৎ এর দ্বারা ঘেরাও হয়ে পড়েছে, তারা আল্লাহ্‌কে ডাকে তাঁর প্রতি আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে - - ''যদি এ থেকে তুমি আমাদের উদ্ধার করো তবে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হবো।’’
10-23 : তারপর তিনি যখন তাদের উদ্ধার করেন, দেখো! তারা পৃথিবীতে দৌরা‌ত্ম্য শুরু করে অন্যায়ভাবে। ওহে মানবগোষ্ঠি! তোমাদের দৌরা‌ত্ম্য বস্তুতঃ তোমাদেরই বিরুদ্ধে, দুনিয়ার জীবনের সামান্য উপভোগ, তারপর আমাদেরই কাছে তোমাদের প্রত্যাবর্তন, তখন আমরা তোমাদের জানিয়ে দেবো যা তোমরা করে চলেছিলে।
10-24 : এই দুনিয়ার জীবনের তুলনা হচ্ছে বৃষ্টির ন্যায় যা আমরা আকাশ থেকে বর্ষণ করি, তখন তার দ্বারা পৃথিবীর গাছপালা ভুইঁফোঁড়ে বাড়ে যা থেকে মানুষ ও জীবজন্তু আহার করে থাকে, তারপর যখন পৃথিবী তার সোনালী শোভা ধারণ করে ও সাজসজ্জা পরে, আর এর মালিকেরা ভাবে যে তারা আলবৎ এর উপরে আয়ত্তাধীন, তখন আমাদের আদেশ এর উপরে এসে পড়ে রাতে অথবা দিনে, ফলে আমরা একে বানাই কাটা শস্যের মতন যেন গতকালও তার প্রাচুর্য ছিল না। এইভাবে আমরা নির্দেশাবলী বিশদ ব্যাখ্যা করি সেইসব সম্প্রদায়ের জন্য যারা চিন্তা করে।
10-25 : আর আল্লাহ্ আহ্বান করেন শান্তির আলয়ে, আর যাকে তিনি ইচ্ছে করেন তাকে পরিচালিত করেন সহজ - সঠিক পথের দিকে।
10-26 : যারা ভালো করে তাদের জন্য রয়েছে ভালো এবং আরো বেশি। আর তাদের মুখমন্ডলকে আচ্ছাদন করবে না কোনো কালিমা এবং কোনো অপমানও নয়। এরাই হচ্ছে বেহেশতের অধিবাসী, তারা সেখানে থাকবে স্থায়ীভাবে।
10-27 : আর যারা মন্দ অর্জন করে মন্দকাজের প্রতিফল হবে তার অনুরূপ, আর তাদের আচ্ছাদন হবে অপমান। তাদের জন্য আল্লাহ্ থেকে কোনো রক্ষক নেই, - - যেন তাদের মুখমন্ডল আচ্ছাদিত হয়েছে নিশীথের গহন অন্ধকারের একাংশ দিয়ে। এরাই হচ্ছে আগুনের অধিবাসী, তারা সেখানে থাকবে দীর্ঘকাল।
10-28 : আর যেদিন আমরা ওদের সবাইকে সমবেত করবো, তারপর যারা অংশী দাঁড় করেছিল তাদের বলবো - - ''তোমরা ও তোমাদের অংশীরা নিজ নিজ স্থানে অবস্থান করো।’’ তারপর আমরা তাদের একে অন্য থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবো, আর তাদের অংশীরা বলবে - - ''তোমরা তো আমাদের উপাসনা করতে না।
10-29 : ''সেজন্য আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষীরূপে আল্লাহ্‌ই যথেষ্ট যে তোমাদের পূজা - অর্চনা সন্বন্ধে আমরা অনবহিত ছিলাম।’’
10-30 : সেখানে প্রত্যেক আ‌ত্মা উপলব্ধি করবে যা সে পূর্বে পাঠিয়েছে, আর তাদের ফিরিয়ে আনা হবে তাদের প্রকৃত অভিভাবক আল্লাহ্‌র নিকটে, আর তাদের কাছ থেকে বিদায় নেবে যাদের তারা উদ্ভাবন করেছিল।
10-31 : বলো - - ''কে তোমাদের জীবিকা দান করে মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবী থেকে? অথবা শ্রবণশক্তিদৃষ্টিশক্তি কার কর্তৃত্বাধীন? আর কে মৃত থেকে জীবিতকে নির্গত করে ও জীবিত থেকে মৃতকে নির্গত করে? আর কে বিষয় - আশয় নিয়ন্ত্রণ করে?’’ তখন তারা বলবে - - ''আল্লাহ্‌।’’ তাহলে বলো - - ''তবে কেন তোমরা ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করো না?’’
10-32 : এই তবে আল্লাহ্‌, - - তোমাদের আসল প্রভু, সত্যের পরে তবে মিথ্যা ভিন্ন আর কি থাকে? সুতরাং কোথায় তোমরা ফিরে যাচ্ছ?
10-33 : এইভাবে তোমার প্রভুর বাণী সত্যপ্রতিপন্ন হয় তাদের বিরুদ্ধে যারা অবাধ্যাচরণ করে - - ''নিঃসন্দেহ তারা ঈমান আনবে না’’।
10-34 : বলো - - ''তোমাদের অংশীদের মধ্যে কেউ কি আছে যে আদি - সৃষ্টি আর করতে পারে, তারপর তা পুনরুৎপাদন করতে পারে?’’ তুমি বলো - - ''আল্লাহ্‌ই সৃষ্টি শুরু করেন, তারপর তা পুনরুৎপাদন করেন। সুতরাং তোমরা কোথায় চলে যাচ্ছ?’’
10-35 : বলো - - ''তোমাদের অংশীদের মধ্যে কেউ কি আছে যে পরিচালিত করে সত্যের প্রতি?’’ তুমি বলো - - ''আল্লাহ্‌ই সত্যের প্রতি পরিচালিত করেন।’’ অতএব যিনি সত্যের প্রতি পথ দেখান তিনি অনুসরণের অধিকতর দাবিদার, না যে পরিচালন করে না যদি না সে পরিচালিত হয়? তোমাদের তবে কি হয়েছে? কিভাবে তোমরা বিচার করো?
10-36 : আর তাদের অধিকাংশই অনুমান ছাড়া আর কিছুই অনুসরণ করে না। নিঃসন্দেহ সত্যের পরিবর্তে অনুমানের কোনোই মূল্য নেই। ওরা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ্ অবশ্যই সর্বজ্ঞাতা।
10-37 : আর এই কুরআন এমন নয় যা রচনা করতে পারে আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কেউ, পক্ষান্তরে এ সমর্থন করে এর পূর্বে যা ছিল তার, আর গ্রন্থের এ এক বিশদ ব্যাখ্যা - - কোনো সন্দেহ নেই এতে বিশ্বজগতের প্রভুর কাছ থেকে।
10-38 : অথবা তারা কি বলে - - ''তিনি এটি রচনা করেছেন’’? তুমি বলো - - ''তাহলে নিয়ে এস এর মতো একটি সূরা, আর আল্লাহ্‌কে ছেড়ে দিয়ে যাদের পারো ডাকো, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো।’’
10-39 : না, তারা প্রত্যাখ্যান করে যার জ্ঞানের সীমা তারা পায় না, আর এখনও এর মর্ম তাদের কাছে আসে নি। এইভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিল তারা যারা তাদের পূর্বে ছিল, সুতরাং দেখো কেমন হয়েছিল অত্যাচারীদের পরিণাম।
10-40 : আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে যে এতে বিশ্বাস করে, আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে যে এতে বিশ্বাস করে না। আর তোমার প্রভু গন্ডগোল সৃষ্টিকারীদের ভালো জানেন।
10-41 : আর তারা যদি তোমার প্রতি মিথ্যারোপ করে তবে বলো - - ''আমার কাজ আমার জন্য, আর তোমাদের কাজ তোমাদের জন্য, তোমরা দায়ী নও আমি যা করি সে বিষয়ে আর আমিও দায়ী নই তোমরা যা করো সে বিষয়ে।’’
10-42 : আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ তোমার কথা শোনে। তুমি কি বধিরকে শোনাতে পারো, - - পরন্ত তারা বুদ্ধিশুদ্ধি রাখে না?
10-43 : আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ তোমার দিকে তাকিয়ে থাকে। তুমি কি অন্ধকে পথ দেখতে পারো, - - পরন্ত তারা দেখতে পায় না?
10-44 : নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মানুষের প্রতি কোনো অন্যায় করেন না, কিন্তু মানুষরা তাদের নিজেদেরই প্রতি অন্যায় করে।
10-45 : আর যেদিন তিনি তাদের একত্রিত করবেন যেন তারা দিনের এক ঘন্টাও কাটায় নি, তারা একে - অন্যকে চিনতে পারবে। আল্লাহ্‌র সঙ্গে মুলাকাত হওয়াকে যারা মিথ্যা বলেছিল তারা আলবৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আর তারা সঠিক পথে চালিত ছিল না।
10-46 : আর তোমাকে যদি আমরা দেখিয়ে দিই ওদের যা আমরা ওয়াদা করেছিলাম তার কিছুটা, অথবা তোমার মৃত্যু ঘটিয়ে দিই, তা হলেও আমাদের কাছেই তাদের প্রত্যাবর্তন, তার উপর আল্লাহ্ সাক্ষী রয়েছেন যা তারা করে তার।
10-47 : আর প্রত্যেক জাতির জন্যে একজন রসূল, অতএব যখন তাদের রসূল এসেছিলেন তখন ন্যায় - বিচারের সাথে ওদের মধ্যে মীমাংসা হয়েছে, আর তাদের প্রতি অন্যায় করা হয় নি।
10-48 : আর তারা বলে - - ''এ ওয়াদা কবে ফলবে, - - যদি তোমরা সত্যবাদী হও?’’
10-49 : তুমি বলো - - ''আমি নিজের থেকে কোনো অনিষ্ট - সাধনের কর্তৃত্ব রাখি না বা মুনাফা দেবারও নয় - - আল্লাহ্ যা ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত।’’ প্রত্যেক জাতির জন্য এক নির্দিষ্ট সময় আছে, যখন তাদের সময় ঘনিয়ে আসবে তখন তারা ঘন্টাখানেকের জন্যেও দেরি করতে পারবে না বা এগিয়েও আনতে পারবে না।
10-50 : বলো - - ''তোমরা কি ভেবে দেখেছ যে যদি তাঁর শাস্তি তোমাদের উপরে এসে পড়ে রাত্রির আক্রমণরূপে অথবা দিনের বেলায়, তবে এর মধ্যের কোনটা ত্বরান্বিত করতে চায় অপরাধীরা?
10-51 : তবে কি তখন তোমরা এতে বিশ্বাস করবে যখন এটি ঘটবে? ''আহা, এখন! তোমরা তো এটিই ত্বরান্বিত করতে চেয়েছিলে!’’
10-52 : তারপর যারা অন্যায়াচরণ করেছিল তাদের বলা হবে - - ''স্থায়ী শাস্তি আস্বাদন করো। তোমরা যা অর্জন ক’রে চলেছিলে তা ছাড়া অন্য কিছু কি তোমাদের প্রতিদান দেওয়া হচ্ছে?’’
10-53 : আর তারা তোমার কাছে জানতে চায় - - ''এ কি সত্য?’’ বলো - - ''হাঁ, আমার প্রভুর কসম, এ আলবৎ সত্য। আর তোমাদের এড়াবার নহে!’’
10-54 : আর প্রতিটি লোকের, যে অন্যায় করেছে, তার যদি হতো পৃথিবীতে যা কিছু আছে সে অবশ্যই সেগুলো দিয়ে মুক্তি চাইত। আর তারা অনুতাপ অনুভব করবে যখন তারা শাস্তি দেখতে পাবে, কিন্তু তাদের সন্বন্ধে মীমাংসা করা হয়েছে ন্যায়সঙ্গত ভাবে, আর তাদের জুলুম করা হবে না।
10-55 : যা - কিছু মহাকাশে ও পৃথিবীতে রয়েছে সে - সবই কি বাস্তবে আল্লাহ্‌র নয়? আল্লাহ্‌র ওয়াদা কি অবশ্যই সত্য নয়? কিন্তু তাদের অনেকেই জানে না।
10-56 : তিনিই জীবনদান করেন ও মৃত্যু ঘটান, আর তাঁরই কাছে তোমাদের ফিরিয়ে আনা হবে।
10-57 : ওহে মানবগোষ্ঠি! তোমাদের কাছে নিশ্চয়ই তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে এসেছে এক ধর্মোপদেশ আর অন্তরে যা আছে তার জন্য এক আরোগ্য বিধান, আর বিশ্বাসীদের জন্য এক পথনির্দেশ ও এক করুণা।
10-58 : বলো - - ''আল্লাহ্‌র বদান্যতায় ও তাঁর করুণায়’’ - - অতএব এতে তারা তবে আনন্দ প্রকাশ করুক। তারা যা পুঞ্জীভূত করে তার চাইতে এ অধিকতর শ্রেয়।
10-59 : বলো - - ''তোমরা কি দেখেছ আল্লাহ্ তোমাদের জন্য জীবিকা থেকে কত কি পাঠিয়েছেন, তারপর তোমরা তার কিছু হারাম ও হালাল বানিয়েছে?’’ বলো - - ''আল্লাহ্ কি তোমাদের জন্য অনুমতি দিয়েছেন, না তোমরা আল্লাহ্‌র প্রতি মিথ্যারোপ করছো?’’
10-60 : আর যারা আল্লাহ্ সন্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে তারা কিয়ামতের দিন সন্বন্ধে কি ভাবছে? নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মানুষের প্রতি অবশ্যই বদান্যতার সর্বময় কর্তা, কিন্তু তাদের অধিকাংশই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।
10-61 : আর তুমি এমন কোনো কাজে নও বা সে - সম্পর্কে কুরআন থেকে আবৃত্তি করো না, আর তোমরা এমন কোনো কাজ করো না - - আমরা কিন্তু তোমাদের উপরে সাক্ষী রয়েছি যখন তোমরা তাতে নিযুক্ত থাক। আর তোমার প্রভুর কাছ থেকে অণু পরিমাণ কিছুও লুকোনো থাকছে না এ পৃথিবীতে আর মহাকাশেও নয়, আর তার চাইতে ছোটও নেই ও বড়ও নেই যা নয় এক সুস্পষ্ট গ্রন্থে।
10-62 : জেনে রোখো! নিঃসন্দেহ আল্লাহ্‌র বন্ধুরা - - তাদের উপরে কোনো ভয় নেই, আর তারা অনুতাপও করবে না।
10-63 : যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও ভয়ভক্তি করে - -
10-64 : তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ এই পৃথিবীর জীবনে এবং পরকালে। আল্লাহ্‌র বাণীর কোনো পরিবর্তন নেই, - - এটিই হচ্ছে মহা সাফল্য।
10-65 : আর তাদের কথা তোমাকে যেন দুঃখ না দেয়। সম্মান নিঃসন্দেহ সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ্‌র। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা!
10-66 : এটি কি নয় যে নিঃসন্দেহ মহাকাশমন্ডলে যারা আছে ও যারা আছে পৃথিবীতে তারা আল্লাহ্‌র? আর যারা আল্লাহ্‌কে ছেড়ে দিয়ে অংশীদের আরাধনা করে তারা অনুসরণ করে না। তারা তো শুধু অনুমানেরই অনুসরণ করে, আর তারা শুধু মিথ্যাই বলে।
10-67 : তিনিই সেইজন যিনি তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন রাত্রি যেন তোমরা তাতে বিশ্রাম করতে পারো, আর দেখবার জন্য দিন। নিঃসন্দেহ এ - সবে রয়েছে সঠিক নিদর্শনসমূহ সেই লোকদের জন্য যারা শোনে।
10-68 : তারা বলে - - ''আল্লাহ্ একটি পুত্র গ্রহণ করেছেন’’। তাঁরই মহিমা হোক! তিনি স্বয়ং - সমৃদ্ধ। মহাকাশমন্ডলীতে যা - কিছু আছে ও যা - কিছু আছে পৃথিবীতে সে - সবই তাঁর। এ বিষয়ে কোনো সনদ তোমাদের নিকট নেই। তোমরা কি আল্লাহ্ সন্বন্ধে বলো যা তোমরা জানো না?
10-69 : বলো - - ''নিঃসন্দেহ যারা আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে তারা সফলকাম হবে না।’’
10-70 : দুনিয়ার সুখ - সম্ভোগ, এরপর আমাদেরই কাছে তাদের প্রত্যাবর্তন, তখন আমরা তাদের আস্বাদন করাবো কঠোর শাস্তি, যেহেতু তারা অবিশ্বাস পোষণ করেছিল।
10-71 : আর তাদের কাছে নূহ - এর কাহিনী বর্ণনা করো। স্মরণ করো! তিনি তাঁর লোকদের বলেছিলেন - - ''হে আমার সম্প্রদায়! যদি আমার বসবাস এবং আল্লাহ্‌র বাণীদ্বারা আমার উপদেশদান তোমাদের উপরে গুরুভার হয়, তাহলে আল্লাহ্‌র উপরেই আমি নির্ভর করছি, সুতরাং তোমাদের কাজের ধারা ও তোমাদের অংশীদের গুটিয়ে নাও, তারপর তোমাদের কাজের ধারায় যেন তোমাদের কোনো সংশয় না থাকে, তখন আমার দিকে তা খাটাও, এবং আমাকে বিরাম দিয় না।
10-72 : ''কিন্তু যদি তোমরা ফিরে যাও তবে আমি তোমাদের কাছ থেকে কোনো পারিশ্রমিক চাইনি। আমার পারিশ্রমিক কেবল আল্লাহ্‌র কাছেই রয়েছে, আর আমাকে আদেশ করা হয়েছে যেন আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত হই।’’
10-73 : কিন্তু তারা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করল, সেজন্যে আমরা তাঁকে ও তাঁর সঙ্গে যারা ছিল তাদের উদ্ধার করেছিলাম জাহাজে, আর আমরা তাদের প্রতিনিধি করেছিলাম, আর ডুবিয়ে দিয়েছিলাম তাদের যারা আমাদের নির্দেশাবলী প্রত্যাখ্যান করেছিল। অতএব চেয়ে দেখো! কেমন হয়েছিল সতর্কীকৃতদের পরিণাম।
10-74 : অতঃপর তাঁর পরে আমরা রসূলদের দাঁড় করিয়েছিলাম তাঁদের সম্প্রদায়ের কাছে, তাঁরা তাই তাদের কাছে এসেছিলেন স্পষ্ট প্রমাণাবলী নিয়ে, কিন্তু তারা তাতে বিশ্বাস করার মতো ছিল না যা তারা ইতিপূর্বে প্রত্যাখ্যান করেছে। এইভাবে আমরা সীমা - লঙ্ঘনকারীদের হৃদয়ের উপরে মোহর মেরে দিই।
10-75 : অনন্তর তাঁদের পরে আমরা পাঠিয়েছিলাম মূসা ও হারূনকে ফিরআউন ও তার পরিষদবর্গের কাছে আমাদের নিদর্শনসমূহ সঙ্গে দিয়ে, কিন্তু তারা অহংকার করেছিল আর তারা ছিল একটি অপরাধী সম্প্রদায়।
10-76 : তারপর তাদের কাছে যখন আমাদের তরফ থেকে সত্য এল তারা তখন বললে - - ''এ তো নিশ্চয়ই পরিস্কার জাদু।’’
10-77 : মূসা বললেন, ''কি তোমরা বলছ সত্য সন্বন্ধে যখন এ তোমাদের কাছে এল? এ কি জাদু? আর জাদুকররা সফলকাম হয় না।’’
10-78 : তারা বলল - - ''তুমি কি আমাদের কাছে এসেছ আমাদের বিচ্যুত করতে তা থেকে যার উপরে আমাদের পিতৃপুরুষদের পেয়েছি, আর যেন তোমাদের দুজনেরই প্রতিপত্তি হয় এ দেশে? সুতরাং তোমাদের দুজনের প্রতি আমরা তো বিশ্বাসী হচ্ছি না।’’
10-79 : আর ফিরআউন বললে - - ''প্রত্যেক ওস্তাদ জাদুকরকে আমার কাছে নিয়ে এস।’’
10-80 : সুতরাং যখন জাদুকররা এল তখন মূসা তাদের বললেন - - ''তোমাদের যা ফেলবার আছে ফেল।’’
10-81 : যখন তারা ফেলল, মূসা বললেন - - ''তোমরা যা নিয়ে এসেছ তা ভেলকিবাজী। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ একে বাতিল করে দেবেন ।’’ আল্লাহ্ নিশ্চয়ই হুজ্জতকারীদের কাজে ভাল করেন না।
10-82 : আল্লাহ্ তাঁর বাণী অনুযায়ী সত্যকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন যদিও অপরাধীরা অসন্তষ্ট হয়।
10-83 : কিন্তু তাঁর সম্প্রদায়ের সন্তানসন্ততি ব্যতীত আর কেউ মূসার প্রতি বিশ্বাস করে নি ফিরআউন ও তাদের পরিষদবর্গের ভয়ে পাছে তারা তাদের নির্যাতন করে। আর ফিরআউন দেশের মধ্যে অবশ্যই ছিল মহাপ্রতাপশালী, আর সে নিশ্চয়ই ছিল ন্যায়লঙ্ঘন - কারীদের অন্তর্ভুক্ত।
10-84 : আর মূসা বললেন - - ''হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা যদি আল্লাহ্‌র প্রতি বিশ্বাস করে থাক তবে তাঁর উপরেই তোমরা নির্ভর কর যদি তোমরা মুসলিম হও।’’
10-85 : সুতরাং তারা বললে - - ''আল্লাহ্‌র উপরেই আমরা নির্ভর করছি। আমাদের প্রভু! অত্যাচারিগোষ্ঠীর উৎপীড়নের পাত্র আমাদের বানিও না,
10-86 : ''আর তোমার করুণার দ্বারা আমাদের উদ্ধার কর অবিশ্বাসিগোষ্ঠী থেকে।’’
10-87 : আর আমরা মূসা ও তাঁর ভাইয়ের প্রতি প্রত্যাদেশ দিলাম এই বলে - - ''তোমাদের লোকদের জন্য মিশরে বাড়িঘর স্থাপন করো, আর তোমাদের ঘরগুলোকে উপাসনার স্থান বানাও আর নামায কায়েম করো। আর বিশ্বাসীদের সুসংবাদ দাও।’’
10-88 : আর মূসা বললেন - - ''আমাদের প্রভু! নিশ্চয় তুমি ফিরআউন ও তার পরিষদবর্গকে এই দুনিয়ার জীবনে শোভা - সৌন্দর্য ও ধন - দৌলত প্রদান করেছ, যা দিয়ে, আমাদের প্রভু! তারা তোমার পথ থেকে পথভ্রষ্ট করে। আমাদের প্রভু! বিনষ্ট করে দাও তাদের ধনসম্পত্তি, আর কাঠিন্য এনে দাও তাদের হৃদয়ের উপরে, তারা তো বিশ্বাস করে না যে পর্যন্ত না তারা মর্মন্তুদ শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।’’
10-89 : তিনি বললেন - - ''তোমাদের দুজনের দোয়া ইতিমধ্যেই মঞ্জুর হল, কাজেই তোমারা উভয়ে অটল থেকো, আর তাদের পথ অনুসরণ করো না যারা জানে না।’’
10-90 : আর ইসরাইলের বংশধরদের আমরা সমূদ্র পার করালাম, আর ফিরআউন ও তার সৈন্যদল তাদের ধাওয়া করল নির্যাতন ও উৎপীড়নের জন্য! শেষে যখন ডুবে যাওয়া তাকে পাকড়াল সে বললে - - ''আমি ঈমান আনছি যে ইসরাইলের বংশধরেরা যাঁর প্রতি বিশ্বাস করে তিনি ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই, আর আমি হচ্ছি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।’’
10-91 : ''আহা, এখন! আর একটু আগেই তুমি তো অবাধ্যতা করছিলে আর তুমি ছিলে অশান্তি সৃষ্টিকারীদের মধ্যেকার।’’
10-92 : তবে আজকের দিনে আমরা উদ্ধার করব তোমার দেহ, যেন তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাক। কিন্তু মানুষের মধ্যের অনেকেই আমাদের নিদর্শন সন্বন্ধে অবশ্যই বেখেয়াল।
10-93 : আর ইসরাইলের বংশধরদের আমরা অবশ্যই উত্তম আবাসভূমিতে বসবাস করালাম, আর তাদের আমরা উত্তম বিষয়বস্তু দিয়ে জীবিকাদান করলাম, আর তারা বিভেদ সৃষ্টি করে নি যে পর্যন্ত না তাদের কাছে জ্ঞান এল। নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু কিয়ামতের দিনে তাদের মধ্যে বিচার করবেন সে - সন্বন্ধে যাতে তারা মতভেদ করেছিল।
10-94 : কিন্তু যদি তুমি সন্দেহের মধ্যে থাক যা তোমার কাছে আমরা অবতারণ করেছি সে - সন্বন্ধে তবে তাদের জিজ্ঞাসা করো যারা তোমার আগে গ্রন্থ পাঠ করেছে। তোমার কাছে আলবৎ সত্য এসেছে তোমার প্রভুর কাছ থেকে, সুতরাং তুমি সংশয়ীদের মধ্যেকার হয়ো না,
10-95 : আর তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না যারা আল্লাহ্‌র বাণী প্রত্যাখ্যান করে, পাছে তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যেকার হয়ে যাবে।
10-96 : নিঃসন্দেহ যাদের বিরুদ্ধে তোমার প্রভুর বাক্য সাব্যস্ত হয়ে গেছে তারা বিশ্বাস করবে না, - -
10-97 : যদিও তাদের কাছে প্রতিটি নিদর্শন এসে যায়, যে পর্যন্ত না তারা মর্মন্তুদ শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।
10-98 : সুতরাং কেন এমন একটি জনপদবাসী নেই যারা বিশ্বাস করেছিল ও তাদের সেই বিশ্বাস তাদের উপকার করেছিল ইউনুসের লোকদের ব্যতীত? যখন তারা বিশ্বাস করল তখন আমরা তাদের থেকে সরিয়ে নিয়েছিলাম পার্থিব জীবনের হীনতাজনক শাস্তি, এবং তাদের জীবনোপভোগ করতে দিয়েছিলাম কিছু কালের জন্য।
10-99 : আর তোমার প্রভু যদি ইচ্ছা করতেন তবে যারা পৃথিবীতে আছে তাদের সবাই একসঙ্গে বিশ্বাস করত। তুমি কি তবে লোকজনের উপরে জবরদস্তি করবে যে পর্যন্ত না তারা মুমিন হয়?
10-100 : আর কোনো প্রাণীর পক্ষে বিশ্বাস করা সম্ভবপর নয় আল্লাহ্‌র অনুমতি ব্যতীত। আর তিনি কলুষতা নিক্ষেপ করেন তাদের উপরে যারা বুঝে না।
10-101 : বলো - - ''তাকিয়ে দেখ যা - কিছু আছে মহাকাশমন্ডলীতে ও পৃথিবীতে।’’ আর নিদর্শনসমূহ ও সতর্ককারীরা কোনো কাজে আসে না সেই সম্প্রদায়ের জন্য যারা বিশ্বাস করে না।
10-102 : তবে তারা কিসের প্রতীক্ষা করে ওদের দিনের অনুরূপ ব্যতীত যারা তাদের আগে গত হয়ে গেছে? বলোঃ ''তবে তোমরা প্রতীক্ষা কর, নিঃসন্দেহ আমিও তোমাদের সঙ্গে প্রতীক্ষমাণদের মধ্যে রয়েছি।’’
10-103 : তারপর আমরা রসূলগণকে উদ্ধার করি আর যারা বিশ্বাস করেছেন তাদেরও, এইভাবেই, - - বিশ্বাসীদের উদ্ধার করা আমাদের দায়িত্ব।
10-104 : বলো - - ''ওহে মানবগোষ্ঠি! তোমরা যদি আমার ধর্ম সন্বন্ধে সন্দেহের মধ্যে থাক তবে আমি তাদের উপাসনা করি না আল্লাহ্ ব্যতীত যাদের তোমরা উপাসনা কর, আমি কিন্তু আল্লাহ্‌র উপাসনা করি যিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন। আর আমি আদিষ্ট হয়েছি যে আমি মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত হব।’’
10-105 : আর তোমার মুখ ধর্মের প্রতি একনিষ্ঠভাবে প্রতিষ্ঠিত রাখো, আর কখনো মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
10-106 : আর আল্লাহ্‌কে ছেড়ে দিয়ে অন্যকে ডেকো না যে তোমার উপকারও করে না ও অপকারও করে না, কেননা তুমি যদি তা করো তাহলে তুমি তো সে - ক্ষেত্রে অন্যায়কারীদের মধ্যেকার হবে।
10-107 : আর আল্লাহ্ যদি কোনো আঘাত দিয়ে আমাকে পীড়ন করেন তাহলে তিনি ছাড়া এ মোচনকারী আর কেউ নেই, আর তিনি যদি তোমাকে চান ভাল করতে তাহলে তাঁর প্রাচুর্য রদ হবার নয়। তিনি তা আনয়ন করেন তাঁর দাসদের মধ্যের যার প্রতি ইচ্ছা করেন। আর তিনিই তো পরিত্রাণকারী, অফুরন্ত ফলদাতা।
10-108 : বলো - - ''ওহে মানবগোষ্ঠি! নিশ্চয়ই তোমাদের প্রভুর কাছ থেকে তোমাদের কাছে সত্য এসেছে, সেজন্যে যে কেউ সৎপথ অবলন্বন করে সে নিঃসন্দেহ তার নিজের জন্যেই সৎপথে বিচরণ করে, আর যে ভ্রান্তপথ ধরে সে নিঃসন্দেহ তার নিজের বিরুদ্ধেই ভ্রান্তপথে চলে। আর আমি তোমাদের উপরে তো কার্যনির্বাহক নই।’’
10-109 : আর তোমার কাছে যা প্রত্যাদিষ্ট হয়েছে তারই অনুসরণ করো, তবে অধ্যবসায় চালিয়ে যাও যে পর্যন্ত না আল্লাহ্ বিধান দেন, আর তিনিই সর্বোত্তম বিধানকর্তা।