21-1 : মানুষের কাছে তাদের হিসেব - নিকেশ আসন্ন, তথাপি তারা বেখেয়ালিতে ফিরে যাচ্ছে। |
21-2 : আর তাদের কাছে তাদের প্রভুর কাছ থেকে কোনো নতুন স্মারক আসে না যা তারা শোনে যখন তারা খেলতে থাকে, - - |
21-3 : তাদের হৃদয় কোনো মনোযোগ দেয় না। আর যারা অন্যায়কারী তারা গোপনে শলাপরামর্শ করে - - এই জন কি তোমাদের মতন একজন মানুষ ছাড়া আর কিছু? তোমরা কি তবে জাদুর বশীভূত হবে, অথচ তোমরা দেখতে পাচ্ছ।’’ |
21-4 : বলো - - ''আমার প্রভু জানেন সব কথাবার্তা মহাকাশ - মন্ডলীতে ও পৃথিবীতে, কেননা তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।’’ |
21-5 : তারা বলে - - ''না, এলোমেলো স্বপ্ন! না, সে এটি তৈরি করেছে! না, সে একজন কবি। সে বরং আমাদের কাছে এক নিদর্শন নিয়ে আসুক যেমন পূর্ববর্তীদের পাঠানো হয়েছিল।’’ |
21-6 : ওদের আগে যেসব জনপদ বিশ্বাস করে নি তাদের আমরা ধ্বংস করেছি। এরা কি তবে বিশ্বাস করবে? |
21-7 : আর তোমার আগে আমরা মানুষ ছাড়া অন্য কাউকে পাঠাই নি যাদের কাছে আমরা প্রত্যাদেশ দিয়েছিলাম, কাজেই স্মারকগ্রন্থের অধিকারীদের তোমরা জিজ্ঞেস করো, যদি তোমরা না জানো। |
21-8 : আর আমরা তাঁদের এমন শরীর দিই নি যে তাঁরা খাদ্য খাবেন না, আর তাঁরা চিরস্থায়ীও ছিলেন না। |
21-9 : তারপর তাঁদের কাছে আমরা ওয়াদা পূর্ণ করেছিলাম, সুতরাং আমরা তাঁদের উদ্ধার করেছিলাম আর তাদেরও যাদের আমরা ইচ্ছা করেছিলাম, আর আমরা ধ্বংস করেছিলাম সীমা - লংঘনকারীদের। |
21-10 : আমরা অবশ্যই তোমাদের কাছে অবতারণ করেছি এক গ্রন্থ যাতে রয়েছে তোমাদের মহত্ত্ব। তোমরা কি তবে বুঝবে না? |
21-11 : আর আমরা চূর্ণবিচূর্ণ করেছিলাম কত জনপদ যারা অত্যাচার করেছিল, আর তাদের পরে পত্তন করেছিলাম অপর লোকদের। |
21-12 : তারপর তারা যখন অনুভব করেছিল আমাদের ক্ষমতা, দেখো! তারা এখান থেকে পলায়নপর হয়েছিল। |
21-13 : ''পালিও না, বরং ফিরে এসো তাতে যাতে তোমরা বিভোর ছিলে, - - তোমাদের বাসস্থানে যেন তোমাদের সওয়াল করা যেতে পারে।’’ |
21-14 : তারা বলেছিল - - ''হায় আমাদের দুর্ভোগ! আমরা তো আলবৎ অন্যায়কারী ছিলাম।’’ |
21-15 : ফলে তাদের এই আর্তনাদ থামে নি যে পর্যন্ত না আমরা তাদের বানিয়েছিলাম কাটা শস্যের ন্যায়, পুড়িয়ে ফেলা। |
21-16 : আর আকাশ ও পৃথিবী এবং এ দুইয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সে - সমস্ত আমরা খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করি নি। |
21-17 : আমরা যদি চাইতাম আমোদ - প্রমোদের জন্য গ্রহণ করতে, তবে আমরা অবশ্যই আমাদের নিজেদের থেকেই তাকে গ্রহণ করতাম, আমরা নিশ্চয়ই তা করব না। |
21-18 : না, আমরা সত্যের দ্বারা মিথ্যার উপর আঘাত হানি, ফলে তার মগজ চুরমার হয়ে যায়, তখন দেখো! তা অন্তর্হিত হয়। আর ধিক তোমাদের প্রতি! তোমরা যা আরোপ কর সেজন্য। |
21-19 : আর যারাই আছে মহাকাশগুলীতে ও পৃথিবীতে তারা সবাই তাঁর। আর যারা তাঁর সান্নিধ্যে রয়েছে তারা তাঁর উপাসনা করা থেকে গর্ববোধ করে না, আর তারা ক্লান্তও হয় না, - - |
21-20 : তারা রাতে ও দিনে জপতপ করে, তারা শিথিলতা করে না। |
21-21 : অপরপক্ষে তারা কি মাটি থেকে উপাস্যদের গ্রহণ করেছে যারা প্রাণবন্ত করতে পারে? |
21-22 : যদি ও দুইয়ের মধ্যে আল্লাহ্ ছাড়া অন্যান্য উপাস্যরা থাকত তবে এ দুটোই বিশৃঙ্খল হয়ে যেত। সুতরাং সকল মহিমা আল্লাহ্র, যিনি আরশের অধিপতি, - - তারা যা আরোপ করে তার উর্ধ্বে! |
21-23 : তিনি যা করেন যে বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা যাবে না, কিন্তু তাদের প্রশ্ন করা হবে। |
21-24 : অথবা, তারা কি তাঁকে ছেড়ে দিয়ে উপাস্যদের গ্রহণ করেছে? বলো - - ''তোমাদের প্রমাণ নিয়ে এস। এ হচ্ছে স্মরণীয় বার্তা তাদের জন্য যারা আমার সঙ্গে রয়েছে এবং স্মরণীয় বার্তা আমার পূর্ববর্তীদের জন্যেও।’’ কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না, ফলে তারা সত্য থেকে বিমুখ থাকে। |
21-25 : আর তোমার পূর্বে আমরা কোনো রসূল পাঠাই নি যাঁর কাছে আমরা প্রত্যাদেশ না দিয়েছি এই বলে যে, ''আমি ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই, কাজেই আমারই উপাসনা করো’’। |
21-26 : আর তারা বলে - - ''পরম করুণাময় একটি পুত্র গ্রহণ করেছেন।’’ তাঁরই সব মহিমা! বরং তাঁরা তো সম্মানিত বান্দা, - - |
21-27 : তাঁরা কথা বলতে তাঁর আগে বেড়ে যান না, আর তাঁরই আদেশ মোতাবেক তাঁরা কাজ করেন। |
21-28 : তিনি জানেন যা কিছু আছে তাঁদের সম্মুখে আর যা আছে তাঁদের পশ্চাতে, আর তাঁরা সুপারিশ করেন না তার জন্য ছাড়া যার প্রতি তিনি সন্তষ্ট হয়েছেন, আর তাঁর ভয়ে তাঁরা ভীত - সন্ত্রস্ত। |
21-29 : আর তাঁদের মধ্যের যে বলবে - - ''তাঁর পরিবর্তে আমিই একজন উপাস্য’’, তার ক্ষেত্রে তাহলে - - আমরা তাকে প্রতিদান দেব জাহান্নাম। এইভাবেই আমরা প্রতিদান দিই অন্যায়কারীদের। |
21-30 : যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা কি দেখে না যে মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবী উভয়ে একাকার ছিল, তারপর আমরা তাদের দুটিকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম, আর পানি থেকে আমরা সৃষ্টি করলাম প্রাণবন্ত সবকিছু। তারা কি তবুও বিশ্বাস করবে না? |
21-31 : আর পৃথিবীতে আমরা পাহাড় - পর্বত স্থাপন করেছি পাছে তাদের সঙ্গে এটি আন্দোলিত হয়, আর ওতে আমরা বানিয়েছি চওড়া পথঘাট যেন তারা সৎপথ প্রাপ্ত হয়। |
21-32 : আর আমরা আকাশকে করেছি এক সুরক্ষিত ছাদ। কিন্তু তারা এর নিদর্শনাবলী থেকে বিমুখ থাকে। |
21-33 : আর তিনিই সেই জন যিনি রাত ও দিনকে এবং সূর্য ও চন্দ্রকে সৃষ্টি করেছেন। সব ক’টি কক্ষপথে ভেসে চলেছে। |
21-34 : আর তোমার আগে আমরা কোনো মানুষের জন্য স্থায়িত্ব দিই নি। সুতরাং যদি তোমাকেই মারা যেতে হয় তবে কি তারা চিরজীবী হবে? |
21-35 : প্রত্যেক সত্ত্বাকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে। আর আমরা তোমাদের পরীক্ষা করি মন্দ ও ভাল দিয়ে যাচাই ক’রে। আর আমাদের কাছেই তোমাদের ফিরিয়ে আনা হবে। |
21-36 : আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা যখন তোমাকে দেখে তখন তারা তোমাকে বিদ্রপের পাত্র ছাড়া অন্যভাবে গ্রহণ করে না। ''একি সে যে তোমাদের দেবদেবী সন্বন্ধে সমালোচনা করে?’’ বস্তুতঃ তারা নিজেরাই পরম করুণাময়ের নাম - কীর্তনের বেলা অবিশ্বাস ভাজন করে। |
21-37 : মানুষ সৃষ্ট হয়েছে ব্যস্তসমস্ত ছাঁদে। আমি শীঘ্রই তোমাদের দেখাব আমার নিদর্শন সমূহ, সুতরাং তোমারা আমাকে তাড়াতাড়ি করতে বলো না। |
21-38 : আর তারা বলে - - ''কখন এই ওয়াদা ফলবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?’’ |
21-39 : যারা অবিশ্বাস পোষণ করে তারা যদি জানত সেই সময়ের কথা যখন তারা আগুন সরিয়ে দিতে পারবে না তাদের মুখের থেকে, আর তাদের পিঠের থেকেও না, আর তাদের সাহায্যও করা হবে না। |
21-40 : বস্তুতঃ তা তাদের উপরে এসে পড়বে অতর্কিতভাবে, ফলে তাদের তা হতবুদ্ধি করে দেবে, সেজন্যে তা এড়াবার ক্ষমতা থাকবে না, এবং তাদের অবকাশও দেওয়া হবে না। |
21-41 : আর তোমার পূর্বেও রসূলগণকে নিশ্চয়ই বিদ্রপ করা হয়েছিল, তারপর তাদের মধ্যের যারা বিদ্রপ করেছিল তারা যে সন্বন্ধে বিদ্রপ করত সেটাই তাদের পরিবেষ্টন করল। |
21-42 : বলো - - ''কি তোমাদের রক্ষা করবে রাতে ও দিনে পরম করুণাময়ের শাস্তি থেকে?’’ বস্তুতঃ তাদের প্রভুর নামকীর্তন থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়। |
21-43 : অথবা আমাদের ছেড়ে তোমাদের কি দেবদেবী রয়েছে যারা তাদের রক্ষা করতে পারে? তারা তাদের নিজেদের সাহায্য করার ক্ষমতা রাখে না, আর তারা আমাদের থেকেও রক্ষা পাবে না। |
21-44 : বস্তুতঃ আমরা এদের আর এদের পিতৃপুরুষদের ভোগ - সম্ভার দিয়েছিলাম যে পর্যন্ত না তাদের জন্য জীবন সুদীর্ঘ হয়েছিল। তারা কি তবে দেখে না যে আমরা দেশটাতে এগিয়ে আসছি এর চৌহদ্দিকে সংকুচিত ক’রে নিয়ে? তারা কি এমতাবস্থায় জয়ী হতে পারবে? |
21-45 : বলো - - ''আমি তো তোমাদের সতর্ক করি কেবল প্রত্যাদেশের দ্বারা, আর বধির লোকে আহ্বান শোনে না যখন তাদের সতর্ক করা হয়।’’ |
21-46 : আর যদি তোমার প্রভুর শাস্তির তোড় তাদের স্পর্শ করত তবে তারা নিশ্চয়ই বলত - - ''হায় আমাদের দুর্ভোগ! আমরা নিঃসন্দেহ অন্যায়াচারী ছিলাম।’’ |
21-47 : আর কিয়ামতের দিনে আমরা ন্যায়বিচারের মানদন্ড স্থাপন করব, সেজন্য কারো প্রতি এতটুকুও অন্যায় করা হবে না। আর যদি তা সরসে - বীজের ওজন পরিমাণও হয় আমরা সেটা নিয়ে আসব। আর হিসাব গ্রহণকারীরূপে আমরাই যথেষ্ট। |
21-48 : আর আমরা অবশ্যই মূসা ও হারূনকে দিয়েছিলাম ফুরকান, আর আলো, আর স্মরণীয় গ্রন্থ - - ধর্মনিষ্ঠদের জন্য, - - |
21-49 : যারা তাদের প্রভুকে ভয় করে নিভৃতে আর তারা ঘড়িঘন্টা সন্বন্ধে ভীত সন্ত্রস্ত। |
21-50 : আর এটি এক কল্যাণময় স্মারকগ্রন্থ যা আমরা অবতারণ করেছি। তোমরা কি তবে এটির প্রতি অমান্যকারী হবে? |
21-51 : আর অবশ্যই আমরা ইব্রাহীমকে ইতিপূর্বে তাঁর সত্যনিষ্ঠতা দিয়েছিলাম, আর তাঁর সন্বন্ধে আমরা সম্যক পরিজ্ঞাত ছিলাম। |
21-52 : স্মরণ করো! তিনি তাঁর পিতৃপুরুষকে এবং তাঁর লোকদের বললেন - - ''এই মূর্তিগুলো কী যাদের উপাসনায় তোমরা লেগে আছ?’’ |
21-53 : তারা বললে - - ''আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদের এগুলোকে পূজো করতে দেখেছি।’’ |
21-54 : তিনি বললেন - - ''নিশ্চয়ই তোমরা, তোমরা ও তোমাদের পিতৃপুরুষরা, রয়েছ স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে।’’ |
21-55 : তারা বললে - - ''তুমি কি আমাদের কাছে সত্য নিয়ে এসেছ, না কি তুমি ঠাট্টাবিদ্রপকারীদের একজন?’’ |
21-56 : তিনি বললেন - - ''বরং তোমাদের প্রভু হচ্ছেন মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর অধীশ্বর যিনি এগুলো শুরুতেই সৃষ্টি করেছেন, এবং এসব সন্বন্ধে আমি সাক্ষ্যদানকারীদের মধ্যেকার। |
21-57 : ''আর আল্লাহ্র কসম, আমি অবশ্যই তোমাদের প্রতিমাদের সন্বন্ধে পরিকল্পনা গ্রহণ করব তোমরা যখন পিটটান দিয়ে ফিরে যাবে।’’ |
21-58 : তারপর তিনি তাদের টুক্রো টুক্রো করে ফেললেন তাদের বড়টি ছাড়া, যাতে তারা এর কাছে ফিরে আসতে পারে। |
21-59 : তারা বললে - - ''আমাদের দেবতাদের প্রতি এ কাজ কে করেছে? নিঃসন্দেহ সে তো অন্যায়কারীদের একজন।’’ |
21-60 : তারা বললে - - ''আমরা এদের সন্বন্ধে একজন যুবককে বলাবলি করতে শুনেছিলাম, তাকে বলা হয় ইব্রাহীম।’’ |
21-61 : তারা বললে - - ''তাহলে তাকে লোকদের চোখের সামনে নিয়ে এসো, যেন তারা সাক্ষ্য দিতে পারে।’’ |
21-62 : তারা বললে - - ''হে ইব্রাহীম, তুমিই কি আমাদের দেবতাদের প্রতি এই কাজ করেছ? |
21-63 : তিনি বললেন - - ''আলবৎ কেউ এটা করেছে, এই তো এদের প্রধান, কাজেই এদের জিজ্ঞেস করো, যদি তারা বলতে পারে।’’ |
21-64 : তখন তারা নিজেদের দিকে ফিরল এবং বললে - - ''নিঃসন্দেহ তোমরা নিজেরাই অন্যায়াচারী।’’ |
21-65 : তারপর তাদের হেটঁ করা হ’ল তাদের মাথার উপরে ''তুমি তো অবশ্যই জানো যে এরা কথা বলে না।’’ |
21-66 : তিনি বললেন - - ''তোমরা কি তবে আল্লাহ্কে ছেড়ে দিয়ে এমন কিছুর উপাসনা কর যা তোমাদের কোনো উপকার করতে পারে না আর তোমাদের অপকারও করে না? |
21-67 : ''ধিক্ তোমাদের প্রতি এবং আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে তোমরা যাদের উপাসনা কর তাদেরও প্রতি! তোমরা কি তবুও বুঝবে না?’’ |
21-68 : তারা বললে - - ''তাকে পুড়িয়ে ফেলো, এবং তোমাদের দেবতাদের সাহায্য করো যদি তোমরা কিছু করতে চাও।’’ |
21-69 : আমরা বললাম - - ''হে আগুন! তুমি শীতল ও শান্ত হও ইব্রাহীমের উপরে।’’ |
21-70 : আর তারা চেয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে, কিন্তু আমরা তাদেরই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছিলাম। |
21-71 : আর আমরা তাঁকে এবং লূতকে উদ্ধার করে এনেছিলাম সেই দেশে যেখানে আমরা জগদ্বাসীর জন্য কল্যাণ রেখেছিলাম। |
21-72 : আর আমরা তাঁকে দিয়েছিলাম ইসহাক এবং পৌত্ররূপে ইয়াকুবকে। আর সবাইকে আমরা বানিয়েছিলাম সৎপথাবলন্বী। |
21-73 : আর আমরা তাঁদের বানিয়েছিলাম নেতৃবৃন্দ, তাঁরা আমাদের নির্দেশ অনুসারে সৎপথে চালাতেন, আর তাঁদের কাছে আমরা প্রত্যাদেশ দিয়েছিলাম সৎকাজ করতে ও নামায কায়েম করতে ও যাকাত প্রদান করতে, আর তাঁরা আমাদের প্রতি বন্দনাকারী ছিলেন। |
21-74 : আর লূতের ক্ষেত্রে - - আমরা তাঁকে দিয়েছিলাম বুদ্ধি - বিবেচনা ও জ্ঞান - বিজ্ঞান, আর আমরা তাঁকে উদ্ধার করেছিলাম সেই জনপদ থেকে যারা জঘন্য কাজ করত। নিঃসন্দেহ তারা ছিল দুষ্ট দুরাচারী সম্প্রদায়। |
21-75 : আর তাঁকে আমরা ভর্তি করেছিলাম আমাদের অনুগ্রহের মধ্যে। নিঃসন্দেহ তিনি ছিলেন সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত। |
21-76 : আর নূহের ক্ষেত্রে, - - স্মরণ করো, তিনি ইতিপূর্বে আহ্বান করেছিলেন, সেজন্য আমরা তাঁর প্রতি সাড়া দিয়েছিলাম, তাই তাঁকে ও তাঁর পরিজনবর্গকে আমরা উদ্ধার করেছিলাম এক বিরাট সংকট থেকে। |
21-77 : আর আমরা তাঁকে সাহায্য করেছিলাম সেই লোকদের বিরুদ্ধে যারা আমাদের নির্দেশাবলী প্রত্যাখ্যান করেছিল। নিঃসন্দেহ তারা ছিল দুষ্ট লোক, তাই তাদের সবাইকে আমরা ডুবিয়ে দিয়েছিলাম। |
21-78 : আর দাউদ এবং সুলাইমানের ক্ষেত্রে, - - স্মরণ করো, তাঁরা হুকুম দিয়েছিলেন এক শস্যক্ষেত্র সম্পর্কে যাতে লোকদের ভেড়া ঢুকে পড়েছিল রাতের বেলা, আর আমরা তাঁদের হুকুমের সাক্ষী ছিলাম। |
21-79 : আর আমরা সুলাইমানকে এটি বুঝতে দিয়েছিলাম। আর উভয়কেই আমরা দিয়েছিলাম বিচার - বিবেচনা ও জ্ঞান - বিজ্ঞান, আর আমরা দাউদের সঙ্গে পাহাড় - পর্বতকে ও পাখিগুলোকে মহিমা ঘোষণায় অনুগত করেছিলাম। আর আমরাই কার্যকর্তা। |
21-80 : আর আমরা তাঁকে শিখিয়েছিলাম তোমাদের জন্য বর্ম তৈরি করতে যেন তা তোমাদের রক্ষা করতে পারে তো মাদের যুদ্ধবিগ্রহে। তোমরা কি তবে কৃতজ্ঞ হবে না? |
21-81 : আর সুলাইমানকে প্রবল বাতাস, - - তা প্রবাহিত হয়েছিল তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী সেই দেশের দিকে যেখানে আমরা কল্যাণ নিহিত করেছিলাম। আর সব বিষয়ে আমরা সম্যক অবগত। |
21-82 : আর শয়তানদের কতক তাঁর জন্য ডুব দিত আর তা ছাড়া আরো কাজ করত, আর আমরা ছিলাম তাদের তত্ত্বাবধায়ক। |
21-83 : আর আইয়ুবের ক্ষেত্রে, - - স্মরণ করো, তাঁর প্রভুকে তিনি আহ্বান ক’রে বললেন - - ''নিঃসন্দেহ বিপদ আমাকে স্পর্শ করেছে, আর তুমিই তো দয়াশীলদের মধ্যে পরম করুণাময়।’’ |
21-84 : সুতরাং আমরা তাঁর প্রতি সাড়া দিলাম, এবং দুঃখকষ্টের যা থেকে তিনি ভুগছিলেন তা দূর করে দিলাম, আর তাঁকে তাঁর পরিবারবর্গ দিয়েছিলাম এবং তাদের সাথে তাদের মতো লোকদেরও - - আমাদের তরফ থেকে এ এক করুণা, আর বন্দনাকারীদের জন্য স্মরণীয় বিষয়। |
21-85 : আর ইসমাইল ও ইদরীস ও যুল - কিফল, - - সবাই ছিলেন অধ্যবসায়ীদের মধ্যেকার। |
21-86 : আর তাঁদের আমরা প্রবেশ করিয়েছিলাম আমাদের করুণাভান্ডারে। নিঃসন্দেহ তাঁরা ছিলেন সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত । |
21-87 : আর যুন - নূন, - - স্মরণ করো, তিনি চলে গিয়েছিলেন রেগেমেগে, আর তিনি ভেবেছিলেন যে আমরা কখনো তাঁর উপরে ক্ষমতা চালাব না, তখন সেই সংকটে তিনি আহ্বান করলেন যে ''তুমি ছাড়া অন্য উপাস্য নেই, তোমারই সব মহিমা, আমি নিশ্চয়ই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছি।’’ |
21-88 : সুতরাং আমরা তাঁর প্রতি সাড়া দিলাম এবং দুশ্চিন্তা থেকে তাঁকে উদ্ধার করলাম। আর এইভাবেই আমরা মুমিনদের উদ্ধার করে থাকি। |
21-89 : আর যাকারিয়ার ক্ষেত্রে, - - স্মরণ করো, তিনি তাঁর প্রভুকে আহ্বান করে বললেন - - ''আমার প্রভু! আমাকে একলা রেখো না, আর তুমি উত্তরাধিকারীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।’’ |
21-90 : সুতরাং আমরা তাঁর প্রতি সাড়া দিয়েছিলাম এবং তাঁকে দিয়েছিলাম ইয়াহ্য়া, আর তাঁর স্ত্রীকে তাঁর জন্য সুস্থ করেছিলাম। নিঃসন্দেহ তাঁরা সৎকাজে প্রতিযোগিতা করতেন, এবং আমাদের ডাকতেন আশা নিয়ে ও ভয়ের সাথে। আর আমাদের প্রতি তাঁরা ছিলেন বিনীত। |
21-91 : আর তাঁর ক্ষেত্রে, যিনি তাঁর সতীত্ব রক্ষা করেছিলেন, সেজন্য আমরা তার মধ্যে আমাদের কাছের আত্মা থেকে ফুঁকে দিয়েছিলাম, আর আমরা তাকে ও তার ছেলেকে একটি নিদর্শন বানিয়েছিলাম। |
21-92 : ''নিঃসন্দেহ তোমাদের এই সম্প্রদায় একই সম্প্রদায়, আর আমিই তোমাদের প্রভু, সুতরাং আমাকেই তোমরা উপাসনা করো।’’ |
21-93 : কিন্তু তারা নিজেদের মধ্যে তাদের অনুশাসন কেটে ফেলল। সকলেই আমাদের কাছে ফিরে আসবে। |
21-94 : সুতরাং যে কেউ সৎকাজগুলো থেকে কাজ করে যায় আর সে মুমিন হয়, তবে তার কর্মপ্রচেষ্টার কোনো অস্বীকৃতি হবে না, আর নিঃসন্দেহ আমরা হচ্ছি তার জন্য লিপিকার। |
21-95 : আর এটি নিষিদ্ধ সেই জনপদের জন্য যাকে আমরা ধ্বংস করেছি, - - যে তারা আর ফিরে আসবে না। |
21-96 : যদিবা ইয়াজুজ ও মাজুজকে ছেড়ে দেওয়া হয় আর তারা ছড়িয়ে আসে প্রতি ঊর্ধ্বদেশ থেকে। |
21-97 : আর যথার্থ ওয়াদা ঘনিয়ে আসছে, তখন দেখবে, যারা অবিশ্বাস পোষণ করেছিল তাদের চক্ষু স্থির হয়ে যাবে। ''ধিক্ আমাদের, আমরা তো এ বিষয়ে উদাসীনতায় পড়ে রয়েছিলাম! বরং আমরা অন্যায়কারী ছিলাম।’’ |
21-98 : নিঃসন্দেহ তোমরা, আর আল্লাহ্কে ছেড়ে দিয়ে তোমরা যে - সবের উপাসনা কর তারা তো জাহান্নামের ইন্ধন, তোমরা এতে আসতেই চলেছ। |
21-99 : এইগুলো যদি উপাস্য হতো তাহলে তারা এতে আসত না। বস্তুতঃ সকলেই এতে স্থায়ীভাবে থাকবে। |
21-100 : তাদের জন্য তাতে রয়েছে আর্তনাদ, আর সেখানে তারা শুনতে পারবে না। |
21-101 : নিঃসন্দেহ যাদের জন্য আমাদের তরফ থেকে কল্যাণ ইতিমধ্যে ধার্য হয়ে গেছে তদের এ থেকে বহু দূরে রাখা হ বে, |
21-102 : তারা এর হিস্হিস্ শন্দটুকুও শুনবে না, আর তাদের অন্তর যা কামনা করে সেইখানেই তারা স্থায়ীভাবে থাকবে। |
21-103 : ভয়ংকর আতঙ্ক তাদের বিষাদগ্রস্ত করবে না, আর ফিরিশ্তারা তাদের সঙ্গে মুলাকাত করবে - - ''এই হচ্ছে তোমাদের দিন যে সন্বন্ধে তোমাদের ওয়াদা করা হয়েছিল।’’ |
21-104 : সেই দিনে আমরা আকাশকে গুটিয়ে নেব যেমন গুটানো হয় লিখিত নথিপত্র! যেভাবে আমরা প্রথম সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেইভাবে আমরা এটি পুনর্সৃষ্টি করব। ওয়াদা রক্ষাকরণ আমাদের উপরে ন্যস্ত। নিঃসন্দেহ আমরা কর্মকর্তা। |
21-105 : আর স্মারক - গ্রন্থের পরে আমরা যবূর - গ্রন্থে লিখে দিয়েছি যে, দেশটা - - এটাকে উত্তরাধিকার করবে আমার সৎকর্মী বান্দারা। |
21-106 : বস্তুতঃ এতে রয়েছে বাণী উপাসনাকারী লোকদের জন্য। |
21-107 : আর আমরা তোমাকে পাঠাই নি বিশ্বজগতের জন্য এক করুণারূপে ভিন্ন। |
21-108 : বলো - - ''আমার কাছে আলবৎ প্রত্যাদিষ্ট হয়েছে যে, নিঃসন্দেহ তোমাদের উপাস্য একক উপাস্য। তোমরা কি তবে আত্মসমর্পণকারী হবে না?’’ |
21-109 : কিন্তু যদি তারা ফিরে যায় তবে তুমি বলো - - ''আমি তোমাদের সাবধান করে দিয়েছি যথাযথভাবে। আর আমি জানি না তোমাদের যা ওয়াদা করা হয়েছে তা আসন্ন না দূরবর্তী। |
21-110 : ''নিঃসন্দেহ তিনি জানেন কথাবার্তার প্রকাশ্য দিক আর জানেন যা তোমরা গোপন কর। |
21-111 : ''আর জানি না, হতে পারে এ তোমাদের জন্য একটি পরীক্ষা, এবং কিছুকালের জন্য জীবনোপভোগ।’’ |
21-112 : তিনি বললেন - - ''আমার প্রভু! ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করে দাও।’’ আর আমাদের প্রভু পরম করুণাময় যাঁর সাহায্য প্রার্থনীয় তোমরা যা আরোপ কর তার বিরুদ্ধে। |