23-1 : মুমিনরা অবশ্য সাফল্যলাভ করেই চলছে, - - |
23-2 : যারা স্বয়ং তাদের নামাযে বিনয় - নম্র হয়, |
23-3 : আর যারা অসার ক্রিয়াকলাপ থেকে নিজেরাই সরে থাকে, |
23-4 : আর যারা স্বয়ং যাকাতদানে করিতকর্মা, |
23-5 : আর যারা নিজেরাই তাদের আঙ্গিক কর্তব্যাবলী সম্পর্কে যত্নবান, - - |
23-6 : তবে নিজেদের দম্পতি অথবা তাদের ডানহাতে যাদের ধরে রেখেছে তাদের ছাড়া, কেননা সেক্ষেত্রে তারা নিন্দনীয় নহে, |
23-7 : কিন্ত যে এর বাইরে যাওয়া কামনা করে তাহলে তারা নিজেরাই হবে সীমালংঘনকারী। |
23-8 : আর যারা স্বয়ং তাদের আমানত সন্বন্ধে ও তাদের অংগীকার সন্বন্ধে সজাগ থাকে, |
23-9 : আর যারা নিজেরা তাদের নামায সন্বন্ধে সদা - যত্নবান। |
23-10 : তারা নিজেরাই হবে পরম সেভাগ্যের অধিকারী, - - |
23-11 : যারা উত্তরাধিকার করবে বেহেশত, তাতে তারা থাকবে স্থায়ীভাবে। |
23-12 : আর আমরা নিশ্চয়ই মানুষকে সৃষ্টি করেছি কাদার নির্যাস থেকে, |
23-13 : তারপর আমরা তাকে বানাই শুক্রকীট এক নিরাপদ অবস্থান স্থলে, |
23-14 : তারপর আমরা শুক্রকীটটিকে বানাই একটি রক্তপিন্ড, তারপর রক্তপিন্ডকে আমরা বানাই একটি মাংসের তাল, তারপর মাংসের তালে আমরা সৃষ্টি করি হাড়গোড়, তারপর হাড়গোড়কে আমরা ঢেকে দিই মাংসপেশী দিয়ে, তারপরে আমরা তাকে পরিণত করি অন্য এক সৃষ্টিতে। সেইজন্য আল্লাহ্রই অপার মহিমা, কত শ্রেষ্ঠ এই স্রষ্টা! |
23-15 : তারপর নিঃসন্দেহ তোমরা এর পরে তো মৃত্যু বরণ করবে। |
23-16 : তারপর তোমাদের অবশ্যই কিয়ামতের দিনে পুনরুত্থিত করা হবে। |
23-17 : আর আমরা নিশ্চয়ই তোমাদের উপরে সৃষ্টি করেছি সাতটি পথ, আর সৃষ্টি সন্বন্ধে আমরা কখনও উদাসীন নই। |
23-18 : আর আমরা আকাশ থেকে বর্ষণ করি পানি একটি পরিমাপ মতো, তারপর আমরা তাকে মাটিতে সংরক্ষিত করি, আর নিঃসন্দেহ আমরা তা সরিয়ে নিতেও সক্ষম। |
23-19 : তারপর তার দ্বারা আমরা তোমাদের জন্য সৃষ্টি করি খেজুরের ও আঙুরের বাগানসমূহ। তোমাদের জন্য তাতে রয়েছে প্রচুর ফলফসল, আর তা থেকে তোমরা খাওয়া - দাওয়া করো। |
23-20 : আর গাছ যা জন্মে সিনাই পাহাড়ে, তা উৎপাদন করে তেল ও জেলি আহারকারীদের জন্য। |
23-21 : আর নিঃসন্দেহ গবাদি - পশুতে তোমাদের জন্য রয়েছে শিক্ষণীয় বিষয়। আমরা তোমাদের পান করতে দিই তাদের পেটের মধ্যে যা আছে তা থেকে, আর তাদের মধ্যে তোমাদের জন্য আছে প্রচুর উপকারিতা, আর তাদের থেকে তোমরা খাও, |
23-22 : আর তাদের উপরে এবং জাহাজে তোমাদের বহন করা হয়। |
23-23 : আর আমরা অবশ্যই নূহকে তাঁর স্বজাতিক কাছে পাঠিয়েছিলাম, তখন তিনি বলেছিলেন, ''হে আমার স্বজাতি! তোমরা আল্লাহ্র উপাসনা করো, তিনি ছাড়া তোমাদের জন্য অন্য কোন উপাস্য নেই। তোমরা কি তবুও ভক্তি - শ্রদ্ধা করবে না?’’ |
23-24 : তখন তাঁর স্বজাতির মধ্যে যারা অবিশ্বাস পোষণ করেছিল তাদের প্রধানরা বললে - - ''সে তো তোমাদের মতো একজন মানুষ ছাড়া আর কিছু নয়, সে তোমাদের উপরে প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। বস্তুতঃ আল্লাহ্ যদি চাইতেন তবে তিনি নিশ্চয়ই ফিরিশ্তাদের পাঠাতে পারতেন। আমরা তো পূর্ববর্তীকালের আমাদের পিতৃপুরুষদের মধ্যে এমনটা শুনি নি। |
23-25 : ''সে তো একজন মানুষ মাত্র যাকে ভূতে ধরেছে, কাজেই কিছুকাল তাকে সহ্য ক’রে চল।’’ |
23-26 : তিনি বললেন - - ''আমার প্রভু! আমাকে সাহায্য করো তারা আমার প্রতি যা মিথ্যারোপ করছে সেজন্য।’’ |
23-27 : কাজেকাজেই আমরা তাঁর কাছে প্রত্যাদেশ পাঠালাম এই বলে - - ''আমাদের চোখের সামনে এবং আমাদের প্রত্যাদেশ মোতাবেক জাহাজটি তৈরি কর, তারপর আমাদের নির্দেশ যখন আসবে ও পানি উথলে উঠবে তখন তাতে উঠিয়ে নাও হরেক রকমের জোড়ায় - জোড়ায়, দুটি ক’রে, আর তোমার পরিবার পরিজনকে, - - তাদের মধ্যের যার বিরুদ্ধে বক্তব্য ঘোষিত হয়েছে তাকে ব্যতীত আর যারা অন্যায়াচরণ করেছে তাদের সন্বন্ধে তুমি আমার কাছে বলাবলি করো না। তারা তো নিমজ্জিত হবেই। |
23-28 : ''আর যখন তুমি জাহাজে আরোহণ করবে, তুমি ও যারা তোমার সাথে রয়েছে তারা তখন বলো - - 'সকল প্রশংসা আল্লাহ্র যিনি আমাদের উদ্ধার করেছেন অত্যাচারী জাতির থেকে।’ |
23-29 : ''আর বলো - - 'আমার প্রভু! আমাকে পুণ্যময় অবতরণ করতে দাও, কেননা অবতরণকারকদের মধ্যে তুমিই সর্বশ্রেষ্ঠ’।’’ |
23-30 : নিঃসন্দেহ এতে তো নিদর্শন রয়েছে, আর আমরা তো শৃঙ্খলাবদ্ধ করছিলাম। |
23-31 : তারপর আমরা তাদের পরে পত্তন করেছিলাম অন্য এক বংশকে। |
23-32 : তখন আমরা তাদের মধ্যে পাঠিয়েছিলাম তাদেরই মধ্যে থেকে একজন রসূল এই বলে - - ''আল্লাহ্র উপাসনা করো, তিনি ব্যতীত তোমাদের জন্য অন্য উপাস্য নেই। তোমরা কি তবে ভক্তি - শ্রদ্ধা করবে না?’’ |
23-33 : আর তাঁর স্বজাতির মধ্যের প্রধানরা যারা অবিশ্বাস পোষণ করেছিল ও পরকালের মুলাকাতকে অস্বীকার করেছিল এবং এই দুনিয়ার জীবনে আমরা যাদের ভোগ - সার দিয়েছিলাম তারা বললে - - ''এ তো তোমাদের মতো একজন মানুষ ছাড়া আর কিছুই নয়, তোমরা যা থেকে খাও সেও তা থেকেই খায় এবং তোমরা যা পান কর সেও তা থেকেই পান করে। |
23-34 : ''আর তোমরা যদি তোমাদের ন্যায় একজন মানুষেরই আজ্ঞা - পালন কর তাহলে তো তোমরা সেই মুহূর্তেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। |
23-35 : ''সে কি তোমাদের প্রতিশ্রুতি দেয় যে যখন তোমরা মারা যাবে এবং তোমরা ধুলোমাটি ও হাড়পাঁজরাতে পরিণত হবে তখন তোমরা বহির্গত হবে? |
23-36 : ''বহুদূর! তোমাদের যা ওয়াদা করা হচ্ছে তা বহুদূর। |
23-37 : ''আমাদের এই দুনিয়ার জীবন ছাড়া কিছুই তো নেই, আমরা মরব আর আমরা বেঁচে আছি, আর আমরা তো পুনরুত্থিত হব না। |
23-38 : ''সে একজন মানুষ বৈ তো নয় যে আল্লাহ্ সন্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে, আর আমরা তো তার প্রতি আস্থাবান হতে পারছি না।’’ |
23-39 : তিনি বললেন - - ''আমার প্রভু! আমাকে তুমি সাহায্য করো যেহেতু তারা আমার প্রতি মিথ্যারোপ করছে।’’ |
23-40 : তিনি বললেন - - ''অল্পক্ষণের মধ্যেই তারা আলবৎ অনুতাপ করতে থাকবে।’’ |
23-41 : কাজেই এক মহাগর্জন তাদের পাকড়াও করল সঙ্গতভাবেই, আর আমরা তাদের বানিয়ে দিলাম আবর্জনা, তাই দূর হ’ল অত্যাচারী জাতি! |
23-42 : তারপর আমরা তাদের পরে পত্তন করলাম অন্যান্য বংশদের। |
23-43 : কোনো সম্প্রদায়ই তার নির্ধারিত কাল ত্বরান্বিত করতে পারবে না, আর তা বিলন্বিত করতেও পারবে না। |
23-44 : তারপর আমরা একের পর এক আমাদের রসূলগণকে পাঠিয়েছিলাম। যখনই কোনো সম্প্রদায়ের কাছে তার রসূল এসেছিলেন, তাঁকে তারা প্রত্যাখ্যান করেছিল, তাই আমরা তাদের একদলকে অন্য দলের পশ্চাদ্ধাবন করিয়েছিলাম, আর তাদের বানিয়েছিলাম কাহিনী। সুতরাং দূর হ’ তেমন জাতি যারা ঈমান আনে না! |
23-45 : তারপর আমরা পাঠালাম মূসা ও তাঁর ভাই হারূনকে আমাদের নিদর্শনাবলী ও সুস্পষ্ট বিধান দিয়ে, - - |
23-46 : ফিরআউন ও তার পরিষদবর্গের কাছে, কিন্ত তারা অহংকার দেখিয়েছিল এবং তারা ছিল এক উদ্ধত জাতি। |
23-47 : কাজেই তারা বললে - - ''আমরা কি বিশ্বাস করব আমাদের ন্যায় দুজন মানুষকে, অথচ তাদের স্বজাতি আমাদেরই সেবারত?’’ |
23-48 : সেজন্য তারা এদের দুজনকে প্রত্যাখ্যান করল, তার ফলে তারা ধ্বংসপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হ’ল। |
23-49 : আর আমরা অবশ্যই মূসাকে গ্রন্থ দিয়েছিলাম যেন তারা সৎপথ অবলন্বন করতে পারে। |
23-50 : আর আমরা মরিয়ম - পুত্র ও তাঁর মাতাকে করেছিলাম এক নিদর্শন, এবং তাঁদের উভয়কে আমরা আশ্রয় দিয়েছিলাম তৃণাচ্ছাদিত ও ঝরনা - রাজিতে ভরা এক পার্বত্য - উপত্যকায়। |
23-51 : হে প্রিয় রসূলগণ! পবিত্র বস্তু থেকে তোমরা খাওয়া - দাওয়া করো আর ভাল কাজ করো। তোমরা যা করছ সে সন্বন্ধে আমি নিশ্চয়ই সর্বজ্ঞাতা। |
23-52 : আর - - ''নিঃসন্দেহ তোমাদের এই সম্প্রদায় একই সম্প্রদায়, আর আমিই তোমাদের প্রভু, অতএব আমাকেই তোম রা ভক্তিশ্রদ্ধা করো।’’ |
23-53 : কিন্ত তারা নিজেদের মধ্যে তাদের অনুশাসন টুকরো - টুকরো ক’রে কেটে ফেলল। প্রত্যেক দলই তাদের কাছে যেসব রয়েছে তাতেই সন্তষ্ট। |
23-54 : সেজন্য তাদের থাকতে দাও তাদের বিভ্রান্তিতে কিছুকালের জন্য। |
23-55 : তারা কি ভাবে যে যেহেতু আমরা তাদের মাল - আসবাব ও সন্তান - সন্ততি দিয়ে যাচ্ছি, - - |
23-56 : আমরা তাদের জন্য মঙ্গলময় বস্তু ত্বরান্বিত করছি? না, তারা বুঝতে পারছে না। |
23-57 : নিঃসন্দেহ যারা খোদ তাদের প্রভুর ভয়ে ভীত - সন্ত্রস্ত, |
23-58 : আর যারা স্বয়ং তাদের প্রভুর নির্দেশাবলীতে বিশ্বাস স্থাপন করে, |
23-59 : আর যারা তাদের প্রভুর সঙ্গে শরিক করে না, |
23-60 : আর যারা প্রদান করে যা দেবার আছে, আর তাদের হৃদয় ভীত - কম্পিত যেহেতু তারা তাদের প্রভুর কাছে প্রত্যাবর্তনকারী, - - |
23-61 : এরাই মঙ্গল সাধনে প্রতিযোগিতা করে, আর এরাই তো এতে অগ্রগামী হয়। |
23-62 : আর আমরা কোনো সত্ত্বাকে তার ক্ষমতার অতিরিক্ত কষ্ট দিই না, আর আমাদের কাছে আছে একটি গ্রন্থ যা হক কথা বলে দেয়, আর তাদের অন্যায় করা হয় না। |
23-63 : কিন্ত তাদের হৃদয় এ ব্যাপারে তালগোল পাকানো অবস্থায় রয়েছে, আর এ ছাড়াও তাদের জন্য রয়েছে অন্যান্য কীর্তিকলাপ যে - সবে তারা করিতকর্মা। |
23-64 : যে পর্যন্ত না আমরা তাদের মধ্যের সমৃদ্ধিশালী লোকদের শাস্তি দিয়ে পাকড়াও করি তখনই তারা আর্তনাদ ক’রে ওঠে। |
23-65 : ''আজ আর্তনাদ করো না, নিঃসন্দেহ তোমাদের ক্ষেত্রে - - আমাদের থেকে তোমাদের সাহায্য করা হবে না। |
23-66 : তোমাদের কাছে আমার বাণীসমূহ অবশ্যই পাঠ করা হত, কিন্ত তোমরা তোমাদের গোড়ালির উপরে মোড় ফিরে চলে যেতে - - |
23-67 : ''অহংকারের সাথে, এ ব্যাপারে সারারাত আবোল - তাবোল গল্পগুজব করতে করতে।’’ |
23-68 : তবে কি তারা চিন্তা করে না এ বাণী সন্বন্ধে? অথবা তাদের কাছে কি এমন কিছু এসেছে যা তাদের পূর্ববর্তী বাপদাদাদের কাছে আসে নি? |
23-69 : অথবা তারা কি তাদের রসূলকে চিনতে পারছে না যেজন্য তারা তাঁর প্রতি বিমুখ রয়েছে? |
23-70 : অথবা তারা কি বলে যে তাঁকে জিন - ভূতে ধরেছে? বস্তুতঃ তিনি তাদের কাছে সত্য নিয়ে এসেছেন, কিন্ত তাদের অধিকাংশই সত্য - সন্বন্ধে উদাসীন। |
23-71 : আর যদি সত্য তাদের কামনার অনুসরণ করত তবে মহাকাশ - মন্ডলী ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যে যা আছে সবই বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ত। পক্ষান্তরে আমরা তাদের কাছে তাদের স্মরণীয় বার্তা নিয়ে এসেছি, কিন্ত তারা তাদের স্মারক - গ্রন্থ থেকে বিমুখ থাকে। |
23-72 : অথবা তুমি কি তাদের কাছ থেকে কোনো প্রতিদান চাইছ। বস্তুতঃ তোমার প্রভুর প্রতিদানই সর্বোত্তম, আর রিযেক - দাতাদের মধ্যে তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ। |
23-73 : আর নিঃসন্দেহ তুমি তো তাদের আহ্বান করছ সহজ - সঠিক পথের দিকে। |
23-74 : আর যারা পরকালে বিশ্বাস করে না তারা নিঃসন্দেহ পথ থেকে তো বিপথগামী। |
23-75 : আর আমরা যদি তাদের প্রতি দয়া করি ও দুঃখ - দৈন্যের যা কিছু তাদের রয়েছে তা দূর করে দিই তথাপি তারা তাদের বিভ্রান্তিতে লেগে থাকবে অন্ধ - চক্কর দিতে দিতে। |
23-76 : আর আমরা ইতিপূর্বেই তাদের শাস্তিদ্বারা পাকড়াও করেছি, তথাপি তারা তাদের প্রভুর কাছে বিনত হ’ল না, আর তারা কাকুতি - মিনতিও করল না। |
23-77 : শেষ পর্যন্ত যখন আমরা তাদের উপরে খুলে দিই কঠিন কঠিন শাস্তি থাকা দরজা তখন তারা হতাশ হয়ে পড়ে। |
23-78 : আর তিনিই সেইজন যিনি তোমাদের জন্য কান ও চোখ ও অন্তঃকরণ বানিয়ে দিয়েছেন। কিন্ত তোমরা তো অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। |
23-79 : আর তিনিই সেইজন যিনি পৃথিবীতে তোমাদের বহুগুণিত করেছেন, আর তাঁরই কাছে তোমাদের একত্রিত করা হবে। |
23-80 : আর তিনিই সেইজন যিনি জীবনদান করেন ও মৃত্যু ঘটান, আর রাত ও দিনের বিবর্তন তাঁরই অধীনে রয়েছে। তবুও কি তোমরা বুঝবে না? |
23-81 : এতদসত্ত্বে পূর্ববর্তীরা যেমন বলত তেমনি এরাও বলাবলি করে। |
23-82 : তারা বললে - - ''কি! আমরা যখন মরে যাই এবং ধুলো - মাটি ও হাড় - পাঁজরাতে পরিণত হই, তখন কি আমরা ঠিকঠিকই পুনরুত্থিত হব? |
23-83 : ''অবশ্যই এর আগে এটি আমাদের ওয়াদা করা হয়েছিল - - আমাদের কাছে ও আমাদের বাপদাদাদের কাছে। নিঃসন্দেহ এটি সেকালের উপকথা বৈ তো নয়।’’ |
23-84 : তুমি বলো - - ''এই পৃথিবী ও এতে যারা আছে তারা কার, - - যদি তোমরা জানো?’’ |
23-85 : তারা তখন বলবে - - ''আল্লাহ্র!’’ তুমি বল - - ''কেন তবে তোমরা মনোনিবেশ করো না?’’ |
23-86 : বল - - ''কে সাত আসমানের প্রভু ও কে আরশের অধিপতি?’’ |
23-87 : তারা সঙ্গে সঙ্গে বলবে - - ''আল্লাহ্র।’’ তুমি বল - - ''তবে কেন তোমরা ভক্তিশ্রদ্ধা কর না?’’ |
23-88 : বল - - ''কে তিনি যাঁর হাতে সব - কিছুর কর্তৃত্ব রয়েছে, আর কে নিরাপত্তা প্রদান করেন অথচ তাঁকে নিরাপত্তা প্রদান করতে হয় না, যদি তোমরা জানো?’’ |
23-89 : তারা সঙ্গে সঙ্গে বলবে - - ''আল্লাহ্র।’’ তুমি বল - - ''তবে কেমন ক’রে তোমাদের সম্মোহন করা হচ্ছে?’’ |
23-90 : বস্তুতঃ আমরা তাদের কাছে সত্য নিয়ে এসেছি, কিন্ত তারা তো নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী। |
23-91 : আল্লাহ্ কোনো সন্তান গ্রহণ করেন নি, আর তাঁর সঙ্গে অন্য কোনো উপাস্যও নেই, যদি থাকত তবে প্রত্যেক উপাস্য আলবৎ নিয়ে যেত যা - কিছু সে সৃষ্টি করেছে, আর তাদের কেউ - কেউ অন্যদের উপরে প্রাধান্য বিস্তার করত। সকল মহিমা আল্লাহ্র, তারা যা আরোপ করে তা থেকে তিনি উর্ধ্বে, - - |
23-92 : তিনি অদৃশ্য ও দৃশ্য সন্বন্ধে পরিজ্ঞাত, কাজেই তারা যা শরিক করে তিনি সে - সবের বহু উর্ধ্বে? |
23-93 : বলো - - ''আমার প্রভু! যদি তুমি আমাকে দেখতে দাও যা তাদের ওয়াদা করা হয়েছে, - - |
23-94 : ''আমার প্রভু! তাহলে আমাকে তুমি অত্যাচারী জাতির সঙ্গে স্থাপন করো না।’’ |
23-95 : আর নিঃসন্দেহ তাদের আমরা যা ওয়াদা করেছি তা তোমাকে দেখাতে আমরা অবশ্যই সক্ষম। |
23-96 : যা শ্রেষ্ঠ তাই দিয়ে মন্দ বিষয় প্রতিরোধ করো। আমরা ভাল জানি যা তারা আরোপ করে। |
23-97 : আর বল - - ''আমার প্রভু! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাইছি শয়তানদের কুমন্ত্রণা থেকে, |
23-98 : ''আর আমার প্রভু! তোমারই কাছে আমি আশ্রয় নিচ্ছি পাছে তারা আমার কাছে হাজির হয়।’’ |
23-99 : যে পর্যন্ত না তাদের কারোর কাছে মৃত্যু উপস্থিত হয় তখন সে বলে - - ''আমার প্রভু! আমাকে ফেরত পাঠাও - - |
23-100 : ''যেন আমি সৎকর্ম করতে পারি সেইখানে যা আমি ছেড়ে এসেছি।’’ কখনোই না! এ তো শুধু একটি মুখের কথা যা সে বলছে। আর তার সামনে রয়েছে 'বরযখ’ সেইদিন পর্যন্ত যখন তাদের পুনরুত্থান করা হবে। |
23-101 : তারপর যখন শিঙায় ফুকে দেঁওয়া হবে, তখন তাদের মধ্যে সেইদিন কোনো আত্মীয়তার বন্ধন থাকবে না, আর তারা খোঁজ - খবরও নেবে না। |
23-102 : কাজেই যাদের পাল্লা ভারী হবে তারা নিজেরাই তবে হচ্ছে সফলকাম। |
23-103 : আর যাদের পাল্লা হাল্কা হবে এরাই তবে তারা যারা নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে, তারা জাহান্নামে থাকবে দীর্ঘকাল। |
23-104 : আগুন তাদের মুখ পুড়িয়ে দেবে। আর তারা সেখানে হবে বিকৃত - বীভৎস। |
23-105 : ''তোমরা কি এমন যে আমার বাণীসমূহ তোমাদের কাছে পাঠ করা হয় নি, যে - জন্যে তোমরা সে - সব প্রত্যাখ্যান করতে?’’ |
23-106 : তারা বলবে - - ''আমাদের প্রভু! আমাদের দুর্দশা আমাদের উপরে প্রভাব বিস্তার করেছিল, এবং আমরা পথভ্রষ্ট জাতি হয়ে গিয়েছিলাম। |
23-107 : ''আমাদের প্রভু! এখান থেকে আমাদের বের করে দাও, তখন যদি আমরা ফিরি তাহলে আমরা নিশ্চয়ই অন্যায়কারী হব।’’ |
23-108 : তিনি বললেন - - ''এর মধ্যেই তোমরা ঢোকে থাক। আর আমার সঙ্গে কথা বল না। |
23-109 : ''নিঃসন্দেহ আমার বান্দাদের মধ্যের একটি দল ছিল যারা বলত, 'আমার প্রভু! আমরা ঈমান এনেছি, কাজেই আমাদের পরিত্রাণ করো, যেহেতু তুমিই তো করুণাময়দের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ!’ |
23-110 : ''কিন্ত তোমরা তাদের হাসি - ঠাট্টার পাত্ররূপে গ্রহণ করেছিলে যে পর্যন্ত না এ - সব তোমাদের ভুলিয়ে দিয়েছিল আমাকে স্মরণ করা, আর তোমরা তাদের নিয়ে উপহাস করে চলেছ। |
23-111 : ''নিঃসন্দেহ তারা যা অধ্যবসায় করত সেজন্য আজকের দিনে আমি তাদের পুরস্কার দান করছি, আর তারা তো নিজেরাই হচ্ছে সফলকাম।’’ |
23-112 : তিনি বলবেন - - ''তোমরা পৃথিবীতে বছর গুনতিতে কতকাল অবস্থান করেছিলে?’’ |
23-113 : তারা বলবে - - ''আমরা অবস্থান করেছিলাম একটি দিন বা দিনের কিছু অংশ, আপনি না হয় জিজ্ঞাসা করুন গণনাকারীদের।’’ |
23-114 : তিনি বলবেন - - ''তোমরা মাত্র অল্পকালই অবস্থান করেছিলে - - যদি তোমরা জানতে পারতে!’’ |
23-115 : ''তোমরা কি তবে মনে করেছিলে যে আমরা তোমাদের অনর্থক সৃষ্টি করেছি, এবং আমাদের কাছে তোমাদের ফিরিয়ে আনা হবে না?’’ |
23-116 : বস্তুতঃ আল্লাহ্ মহিমান্নিত, মহারাজাধিরাজ, চিরন্তন সত্য, তিনি ব্যতীত অন্য উপাস্য নেই, সম্মানিত আরশের অধিপতি তিনি। |
23-117 : আর যে কেউ আল্লাহ্র সঙ্গে অন্য উপাস্যকে ডাকে, - - যার জন্য তার কাছে কোনো সনদ নেই, - - তার হিসাবপত্র তবে নিশ্চয়ই তার প্রভুর কাছে রয়েছে। নিঃসন্দেহ অবিশ্বাসীদের সফলকাম করা হয় না। |
23-118 : বলো - - ''আমার প্রভু! পরিত্রাণ করো, আর দয়া করো, কেননা তুমিই তো করুণাময়দের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।’’ |