আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, জহুরুল হক, Chapter: 51, আল যারিয়াত

Go Back
Book Id: 10060

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, জহুরুল হক

Chapter: 51, আল যারিয়াত

51-1 : ভাবো - - বিক্ষেপকারীদের বিক্ষেপের কথা, - -
51-2 : তারপর বহনকারীদের বোঝার কথা, - -
51-3 : তারপর চলমানদের স্বচ্ছন্দগমনের কথা, - -
51-4 : তারপর বিতরণকারীদের কাজকর্মের কথা, - -
51-5 : নিঃসন্দেহ তোমাদের প্রতি যা ওয়াদা করা হয়েছিল তা অবশ্যই সত্য, - -
51-6 : আর নিঃসন্দেহ ন্যায়বিচার অবশ্যাম্ভাবী।
51-7 : ভাবো আকাশের কথা - - অজস্র পথ বিশিষ্ট,
51-8 : তোমরা তো নিশ্চয়ই পরস্পর বিরোধী কথায় রয়েছ,
51-9 : যে মুখ ফিরিয়ে থাকে তাকে এ থেকে ফিরিয়েই রাখা হয়।
51-10 : কোতল হোক মিথ্যারচনাকারীরা - -
51-11 : যারা খোদ গহবরে, বেখেয়াল!
51-12 : তারা জিজ্ঞাসা করে - - ''কবে আসবে বিচারের দিন?’’
51-13 : সেই দিনটাতে আগুনে তাদের পরীক্ষা করা হবে।
51-14 : ''তোমাদের অত্যাচার তোমরা আস্বাদন কর। এইটিই সেই যেটি তোমরা ত্বরান্বিত করতে চেয়েছিল।’’
51-15 : নিঃসন্দেহ ধর্মভীরুরা থাকবে স্বর্গোউদ্যানসমূহে ও ঝরনা - রাজিতে, - -
51-16 : তাদের প্রভু যা তাদের দেবেন তারা তা গ্রহণ করতে থাকবে। তারা এর আগে নিশ্চয়ই ছিল সৎকর্মশীল।
51-17 : তারা রাতের সামান্য সময়ই ঘুমিয়ে কাটাত।
51-18 : আর নিশিভোরে তারা পরিত্রাণ খুঁজত।
51-19 : আর তাদের ধনসম্পদের মধ্যে ভিখারীর জন্য ও বঞ্চিতের জন্য হক্ রেখেছে।
51-20 : আর পৃথিবীতে নিদর্শনাবলী রয়েছে নিশ্চিত - বিশ্বাসীদের জন্য, - -
51-21 : আর তোমাদের নিজেদের মধ্যে। তবুও কি তোমরা চেয়ে দেখবে না?
51-22 : আর আকাশে রয়েছে তোমাদের জীবিকা, আর যা তোমাদের ওয়াদা করা হয়েছে।
51-23 : অতএব মহাকাশ ও পৃথিবীর প্রভুর শপথ - - নিঃসন্দেহ এ আলবৎ সত্য, যেমনটা তোমরা বস্তুত বাক্যালাপ কর।
51-24 : তোমার কাছে ইব্রাহীমের সম্মানিত অতিথিদের সংবাদ এসেছে কি?
51-25 : তারা যখন তাঁর দরবারে প্রবেশ করল তারা তখন বললে - - ''সালাম’’। তিনিও বললেন - - ''সালাম’’, অপরিচিত লোক।
51-26 : তিনি তখন তাঁর পরিবারের কাছে নীরবে ছুটলেন এবং একটি পুষ্ট বাছুর নিয়ে এলেন,
51-27 : তারপর তিনি এটি তাদের সামনে এগিয়ে দিলেন, তিনি বললেন - - ''আপনারা কি খাবেন না?’’
51-28 : সুতরাং তাদের সম্পর্কে তিনি ভয় অনুভব করলেন। তারা বললে - - ''ভয় করো না।’’ পক্ষান্তরে তারা তাঁকে সুসংবাদ দিল এক জ্ঞানবান ছেলের।
51-29 : তারপর তাঁর স্ত্রী এগিয়ে এলেন বিলাপ করতে - করতে, আর তিনি তাঁর গালে চাপড় মারছেন এবং বলছেন, ''এক বুড়ি, বন্ধ্যা!’’
51-30 : তারা বললে - - ''এমনটাই হবে, তোমার প্রভু বলেছেন।’’ নিঃসন্দেহ তিনি স্বয়ং পরমজ্ঞানী, সর্বজ্ঞাতা।
51-31 : তিনি বললেন - - ''তাহলে তোমাদের বিশেষ বার্তা কি, হে বার্তাবাহকগণ?’’
51-32 : তারা বললে - - ''আমাদের অবশ্য প্রেরণ করা হয়েছে এক অপরাধী লোকদের প্রতি, - -
51-33 : ''যেন তাদের উপরে আমরা বর্ষণ করতে পারি মাটির পাথর,
51-34 : ''যা অমিতাচারীদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে তোমার প্রভুর কাছে।’’
51-35 : তারপর মুমিনদের মধ্যের যারা সেখানে রয়েছিল তাদের আমরা বের করে আনলাম,
51-36 : কিন্ত আমরা সেখানে মুসলিমদের একটি পরিবার ব্যতীত আর কাউকে পাইনি।
51-37 : আর আমরা সেখানে রেখে দিয়েছিলাম এক নিদর্শন তাদের জন্য যারা মর্মন্তুদ শাস্তিকে ভয় করে।
51-38 : আর মূসার মধ্যেও। দেখো! আমরা তাঁকে পাঠিয়েছিলাম ফিরআউনের কাছে সুস্পষ্ট কর্তৃত্ব দিয়ে।
51-39 : কিন্ত সে ফিরে গিয়েছিল তার শক্তিমত্তার দিকে এবং বলেছিল - - ''একজন জাদুকর অথবা একজন পাগল।’’
51-40 : তখন আমরা তাকে ও তার দলবলকে পাকড়াও করলাম এবং তাদের নিক্ষেপ করলাম অথৈ জলে, আর সে ছিল দোষী।
51-41 : আর 'আদ জাতির ক্ষেত্রেও। দেখো! আমরা তাদের বিরুদ্ধে পাঠিয়েছিলাম এক বিধ্বংসী ঝড়।
51-42 : এ যার উপরে এসে পড়েছিল তার কোনো কিছুই রেখে যায় নি, এটিকে তা করে দিয়েছিল ছাইয়ের মতো।
51-43 : আর ছামুদ - জাতির ক্ষেত্রেও। দেখো! তাদের বলা হয়েছিল - - ''কিছুকাল উপভোগ করে নাও।’’
51-44 : তথাপি তাদের প্রভুর আদেশের বিরুদ্ধে তারা দাঁড়িয়েছিল, ফলে এক বজ্রনাদ তাদের পাকড়ালো, আর তারা তাকিয়ে রয়েছিল।
51-45 : তাদের আর দাঁড়াবার ক্ষমতা রইল না, আর তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হতেও পারে নি।
51-46 : আর পূর্বকালীন নূহের লোকদলকেও। নিঃসন্দেহ তারা ছিল সত্যত্যাগী জাতি।
51-47 : আর মহাকাশমন্ডল - - আমরা তা নির্মাণ করেছি হাতে, আর আমরাই বিশালতার নির্মাতা।
51-48 : আর পৃথিবী - - আমরা একে বিছিয়ে দিয়েছি, কাজেই কত সুন্দর এই বিস্তারকারী!
51-49 : আর প্রত্যেক বস্তুর মধ্যে আমরা জোড়া - জোড়া সৃষ্টি করেছি, যেন তোমরা মনোনিবেশ করো।
51-50 : ''অতএব তোমরা বেগে আল্লাহ্‌র দিকে ছুটো। আমি নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট তাঁর কাছ থেকে একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
51-51 : ''আর আল্লাহ্‌র সাথে অন্য কোনো উপাস্য দাঁড় করো না। নিঃসন্দেহ আমি তোমাদের নিকট তাঁর কাছ থেকে এক জন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।’’
51-52 : এইভাবেই। এদের আগে যারা ছিল তাদের কাছে এমন কোনো রসূল আসেন নি যাঁকে তারা না বলেছিল - - ''একজন জাদুকর, না হয় একজন পাগল।’’
51-53 : এরা কি এটিকেই মৌরুসি বিষয় বানিয়েছে? না, তারা হচ্ছে সীমালংঘনকারী জাতি।
51-54 : অতএব তাদের থেকে তুমি মুখ ফিরিয়ে নাও, কেননা তুমি তো দোষী নও।
51-55 : তবুও তুমি উপদেশ দিতে থাকো, কেননা নিঃসন্দেহ উপদেশদান মুমিনদের উপকার করবে।
51-56 : আর আমি জিন ও মানুষকে, তারা আমাকে উপাসনা করুক - - এইজন্য ছাড়া সৃষ্টি করি নি।
51-57 : আমি তাদের থেকে কোনো জীবিকা চাই না, আর আমি চাই না যে তারা আমাকে খাওয়াবে।
51-58 : বরঞ্চ আল্লাহ - - তিনিই বিরাট রিযেকদাতা, ক্ষমতার অধিকারী, শক্তিমান।
51-59 : সুতরাং যারা অন্যায়াচরণ করেছে তাদের জন্য অবশ্যই রয়েছে এক ঝুড়ি তাদের সাঙ্গোপাঙ্গদের ঝুড়ির ন্যায়, সেজন্য তারা যেন আমার কাছে তড়িঘড়ি না করে।
51-60 : অতএব ধিক্ তাদের জন্য যারা অবিশ্বাস পোষণ করে - - তাদের সেই দিনটির কারণে যেটি তাদের ওয়াদা করা হয়েছে!