আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, জহুরুল হক, Chapter: 56, আল ওয়াক্বিয়া

Go Back
Book Id: 10060

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, জহুরুল হক

Chapter: 56, আল ওয়াক্বিয়া

56-1 : যখন বিরাট ঘটনাটি ঘটবে, - -
56-2 : এর সংঘটনকে মিথ্যা বলার কেউ থাকবে না।
56-3 : এটি লাঞ্ছিত করবে, এটি করবে সমুন্নত।
56-4 : যখন পৃথিবী আলোড়িত হবে আলোড়নে,
56-5 : আর পাহাড়গুলো ভেঙ্গে পড়বে চূর্ণ - বিচূর্ণ হয়ে - -
56-6 : ফলে তা হয়ে যাবে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণা,
56-7 : আর তোমরা হয়ে পড়বে তিনটি শ্রেণীতে - -
56-8 : যথা ডান দিকের দল, - - কেমনতর এই ডানদিকের দল!
56-9 : আর বাঁদিকের দল, - - কেমনতর এই বাঁদিকের দল!
56-10 : আর অগ্রগামীগণ তো অগ্রগামী,
56-11 : এরাই হবে নৈকট্যপ্রাপ্ত,
56-12 : আনন্দময় উদ্যানে।
56-13 : প্রথমকালীনদের থেকে অধিক সংখ্যায়,
56-14 : আর পরবর্তীকালীনদের থেকে অল্প সংখ্যায়।
56-15 : কারুকার্যময় সিংহাসনে,
56-16 : তাতে তারা হেলান দিয়ে আসন গ্রহণ করবে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে।
56-17 : তাদের চারিদিকে ঘুরে বেড়াবে চিরনবীন তরুণেরা - -
56-18 : পানপাত্র ও সোরাই নিয়ে ও নির্মল পানীয়ের পেয়ালা।
56-19 : তাদের মাথা ধরবে না তাতে, আর তাদের নেশাও ধরবে না।
56-20 : আর ফল - মূল যা তারা পছন্দ করে;
56-21 : আর পাখির মাংস যা তারা কামনা করে,
56-22 : আর আয়তলোচন হূরগণ - -
56-23 : আবৃত মুক্তার উদাহরণের ন্যায়; - -
56-24 : যা তারা করতো তার পুরস্কার।
56-25 : তারা সেখানে শুনবে না কোনো খেলোকথা, না কোনো পাপবাক্য, - -
56-26 : শুধু এই কথা ছাড়া - - ''সালাম! সালাম!’’
56-27 : আর ডানদিকের দল, - - কেমনতর এই ডানদিকের দল!
56-28 : কাঁটা বিহীন সিদরাহ - গাছের নীচে,
56-29 : আর সারি সারি সাজানো কলাগাছ,
56-30 : আর সুদূরবিস্তৃত ছায়া,
56-31 : আর উছলে ওঠা পানি,
56-32 : আর প্রচুর পরিমাণে ফলমূল,
56-33 : ব্যাহত হবার নয় এবং নিষিদ্ধ হবারও নয়।
56-34 : আর উঁচুদরের গালিচা।
56-35 : নিঃসন্দেহ আমরা ওদের সৃষ্টি করেছি বিশেষ সৃষ্টিতে;
56-36 : আর তাদের বানিয়েছি চিরকুমারী,
56-37 : সোহাগিনী, সমবয়স্কা, - -
56-38 : দক্ষিণপন্থী লোকদের জন্য।
56-39 : প্রথমকালীনদের থেকে অধিক সংখ্যায়,
56-40 : আর পরবর্তীকালীনদের মধ্যে থেকেও অধিক সংখ্যায়।
56-41 : কিন্তু বামপন্থীদল - - কেমনতর এই বামপন্থী দল।
56-42 : উত্তপ্ত বাতাসে ও ফুটন্ত পানিতে,
56-43 : আর কালো ধোঁয়ার ছায়ায়,
56-44 : শীতল নয় এবং সম্মানজনকও নয়।
56-45 : অথচ তারা তো এর আগে ছিল ভোগবিলাসে মগ্ন,
56-46 : আর তারা ঘোরতর পাপাচারে জেদ ধরে থাকত,
56-47 : আর তারা বলত - - ''কী! আমরা যখন মরে যাব ও মাটি ও হাড্ডি হয়ে যাব তখন কি আমরা আদৌ পুনরুত্থিত হব, - -
56-48 : এবং আমাদের পূর্ববর্তী পিতৃপুরুষরাও?
56-49 : তুমি বলো - - ''নিঃসন্দেহ পূর্ববর্তীরা এবং পরবর্তীরা - -
56-50 : ''অবশ্যই সবাইকে একত্রিত করা হবে এক সুবিদিত দিনের নির্ধারিত স্থানে - ক্ষণে,
56-51 : ''তখন নিঃসন্দেহ তোমরাই, হে পথভ্রষ্ট মিথ্যাআরোপকারিগণ!
56-52 : ''তোমরা আলবৎ আহার করবে যিক্কুমের গাছের থেকে,
56-53 : ''এবং তাই দিয়ে তোমরা উদর পূর্ণ করবে,
56-54 : ''তারপর তোমরা তার উপরে পান করবে উত্তপ্ত পানি,
56-55 : ''আর তোমরা পান করবে তৃষ্ণার্ত উটের পান করার ন্যায়।’’
56-56 : এই হবে তাদের আপ্যায়ন বিচারের দিনে।
56-57 : আমরাই তো তোমাদের সৃষ্টি করেছি, তবে কেন তোমরা সত্য বলে স্বীকার কর না?
56-58 : তোমরা কি তবে ভেবে দেখেছ - - যা তোমরা স্খলন কর?
56-59 : তোমরা বুঝি ওকে সৃষ্টি করেছ, না আমরা সৃষ্টিকর্তা?
56-60 : আমরাই তোমাদের মধ্যে মৃত্যু ধার্য করে রেখেছি, আর আমরা প্রতিহত হব না, - -
56-61 : যেন আমরা বদলে দিতে পারি তোমাদের অনুকরণে, এবং তোমাদের রূপান্তরিত করতে পারি তাতে যা তোমরা জান না।
56-62 : আর তোমরা অবশ্য প্রথম অভ্যুত্থান সন্বন্ধে অবগত হয়েছ, তবে কেন তোমরা ভেবে দেখ না?
56-63 : তোমরা কি ভেবে দেখেছ যা তোমরা বপন কর?
56-64 : তোমরা কি তা গজিয়ে তুলো, না আমরা বর্ধনকারী?
56-65 : আমরা যদি চাইতাম তবে আমরা আলবৎ তাকে খড় - কুটোয় পরিণত করতে পারতাম, তখন তোমরা হাহুতাশ করতে থাকবে,
56-66 : ''আমরা তো নিশ্চয় ঋণগ্রস্ত হলাম,
56-67 : ''বরং আমরা বঞ্চিত হলাম।’’
56-68 : তোমরা যে পানি পান কর সে - সন্বন্ধে তোমরা কি ভেবে দেখেছ?
56-69 : তোমরাই কি তা মেঘ থেকে নামিয়ে আন, না আমরা বর্ষণকারী?
56-70 : আমরা যদি চাইতাম তাহলে আমরা তাকে লোনা করে দিতে পারতাম, কেন তবে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না?
56-71 : তোমরা যে আগুন জ্বালাও তা কি তোমরা লক্ষ্য করেছ?
56-72 : তোমরাই কি তার গাছকে জন্মইয়েছ, না আমরা উৎপাদনকারী?
56-73 : আমরাই তাকে বানিয়েছি এক নিদর্শনসামগ্রী এবং মরুচারীদের জন্য এক প্রয়োজনসামগ্রী।
56-74 : অতএব তোমার সর্বশক্তিমান প্রভুর নামের জপতপ করো।
56-75 : না, আমি কিন্তু শপথ করছি নক্ষত্ররাজির অবস্থানের, - -
56-76 : আর নিঃসন্দেহ এটি তো এক বিরাট শপথ, যদি তোমরা জানতে, - -
56-77 : নিঃসন্দেহ এটি তো এক সম্মানিত কুরআন,
56-78 : এক সুরক্ষিত গ্রন্থে।
56-79 : কেউ তা স্পর্শ করবে না পূত - পবিত্র ছাড়া।
56-80 : এটি এক অবতারণ বিশ্বজগতের প্রভুর কাছ থেকে।
56-81 : তা সত্ত্বেও কি সেই বাণীর প্রতি তোমরা তুচ্ছতাচ্ছিল্য ভাবাপন্ন,
56-82 : এবং তোমাদের জীবিকা বানিয়ে নিয়েছ যে তোমরা মিথ্যা আখ্যা দেবে?
56-83 : তবে কেন যখন কন্ঠাগত হয়ে যায়,
56-84 : এবং তোমরা যে - সময়ে তাকিয়ে থাকো,
56-85 : আমরা তখন তোমাদের চাইতে তার বেশী নিকটবর্তী কিন্তু তোমরা দেখতে পাও না।
56-86 : যদি তোমরা আজ্ঞাধীন না হয়ে থাক তবে কেন তোমরা পার না - -
56-87 : তাকে ফিরিয়ে দিতে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?
56-88 : আর পক্ষান্তরে যদি সে নৈকট্যপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়।
56-89 : তাহলে আয়েশ - আরাম ও সৌরভ, এবং আনন্দময় উদ্যান।
56-90 : আর অপরপক্ষে সে যদি দক্ষিণপন্থীদের মধ্যেকার হয়,
56-91 : তাহলে দক্ষিণপন্থীদের দলের থেকে - - ''তোমার প্রতি সালাম।’’
56-92 : আর পক্ষান্তরে সে যদি প্রত্যাখ্যানকারী পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে, - -
56-93 : তাহলে আপ্যায়ন হবে ফুটন্ত পানি দিয়ে,
56-94 : এবং প্রবেশস্থল হবে ভয়ংকর আগুন!
56-95 : নিঃসন্দেহ এটি অবশ্য সুনিশ্চিত সত্য।
56-96 : সুতরাং তোমার সর্বশক্তিমান প্রভুর নামের জপতপ করো।