আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, জহুরুল হক, Chapter: 68, আল কালাম

Go Back
Book Id: 10060

আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, জহুরুল হক

Chapter: 68, আল কালাম

68-1 : নূন! ভাবো কলম ও যা তারা লেখে।
68-2 : তোমার প্রভুর অনুগ্রহে তুমি কিন্তু পাগল নও।
68-3 : আর তোমার জন্য নিশ্চয়ই রয়েছে এমন এক প্রতিদান যা শেষ হবার নয়।
68-4 : আর নিঃসন্দেহ তুমি সুমহান চরিত্রে অধিষ্ঠিত।
68-5 : ফলে তুমি শীঘ্রই দেখবে এবং তারাও দেখতে পাবে - -
68-6 : যে তোমাদের মধ্যে কে বিকারগ্রস্ত।
68-7 : নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু, তিনি ভাল জানেন কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে, আর তিনি ভাল জানেন সৎপথপ্রাপ্তদের ।
68-8 : অতএব মিথ্যাচারীদের আজ্ঞাপালন করো না।
68-9 : তারা চায় যে তুমি যদি নমনীয় হও তাহলে তারাও নমনীয় হবে।
68-10 : আর আজ্ঞাপালন করো না প্রত্যেকটি হলফকারীর, লাঞ্ছিতজনের, - -
68-11 : পরনিন্দাকারীর, কলঙ্ক রটাতে ঘুরে - বেড়ানো লোকের, - -
68-12 : ভালোকাজে নিষেধকারীর, সীমালংঘনকারীর পাপাচারীর, - -
68-13 : ষন্ডা - গুন্ডার, তদুপরি অসচ্চরিত্রের, - -
68-14 : এইজন্য যে সে ধনসম্পদের এবং সন্তানসন্ততির অধিকারী।
68-15 : যখন তার কাছে আমাদের বাণীসমূহ পাঠ করা হয় সে বলে - - ''সেকেলে কল্পকাহিনী!’’
68-16 : আমরা শীঘ্রই তার উঁচু নাকে দাগ করে দেব।
68-17 : আমরা নিশ্চয়ই তাদের পরীক্ষা করব যেমন আমরা পরীক্ষা করেছিলাম বাগান - মালিকদের, যখন ওরা কসম খেয়েছিল যে তারা নিশ্চয় ভোরবেলা এর ফসল কাটবে, - -
68-18 : আর তারা কোনো সংরক্ষণ করে নি।
68-19 : ফলে তোমার প্রভুর কাছ থেকে এক দুর্বিপাক এর উপরে আপতিত হয়েছিল যখন তারা ঘুমিয়ে পড়েছিল।
68-20 : কাজেই সকালবেলায় তা হয়ে গেল এক কালো নিষ্ফলা জমির মতো।
68-21 : তারা কিন্তু সাত - সকালে একে অপরকে ডাকাডাকি করলে - -
68-22 : এই বলে - - ''সকাল সকাল তোমাদের খেত - খামারে যাও যদি তোমরা ফসল কাটতে চাও।’’
68-23 : তখন তারা বেরিয়ে পড়ল, আর তারা ফিসফিস করতে থাকল - -
68-24 : এই বলে - - ''আজ যেন তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো হাভাতে সেখানে ঢুকে না পড়ে।’’
68-25 : আর তারা সকাল সকাল সংকল্পে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে যাত্রা করল।
68-26 : কিন্তু যখন তারা তা দেখল তারা বললে - - ''নিশ্চয় আমরা পথ ভুল করেছি।’’
68-27 : ''না, আমরা বঞ্চিত হয়েছি।’’
68-28 : ওদের মধ্যের শ্রেষ্ঠজন বললে - - ''আমি কি তোমাদের বলি নি, কেন তোমরা জপতপ করছ না?’’
68-29 : তারা বললে - - ''আমাদের প্রভুর মহিমা ঘোষিত হোক, আমরা নিশ্চয় কিছুটা ফসল দান করতে অন্যায় করেছি।’’
68-30 : তারপর তাদের কেউ - কেউ অন্যের কাছে গেল নিজেদের দোষারোপ করতে করতে।
68-31 : তারা বললে - - ''হায়, ধিক্ আমাদের! আমরা নিশ্চয়ই সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিলাম।
68-32 : ''হতে পারে আমাদের প্রভু আমাদের জন্য এর চেয়েও ভাল কিছু বদলে দেবেন, নিশ্চয় আমাদের প্রভুর কাছেই আমরা সানুনয় প্রার্থনা করছি।’’
68-33 : এমনটাই শাস্তি হয়ে থাকে। আর পরকালের শাস্তি তো আরো বিরাট, - - যদি তারা জানতো!
68-34 : নিঃসন্দেহ ধর্মভীরুদের জন্য তাদের প্রভুর কাছে রয়েছে আনন্দময় উদ্যান - সমূহ।
68-35 : কী, আমরা কি তবে মুসলিমদের বানাব অপরাধীদের মতো?
68-36 : কি হয়েছে তোমাদের? কিভাবে তোমরা বিচার কর?
68-37 : না কি তোমাদের জন্য কোনো গ্রন্থ রয়েছে যা তোমরা অধ্যয়ন কর - -
68-38 : যে, নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য তাতে তাই রয়েছে যা তোমরা পছন্দ কর?
68-39 : অথবা, তোমাদের জন্য আমাদের উপরে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত বলবৎ থাকা এমন কোনো অংগীকার রয়েছে কি যে তোমাদের জন্য আলবৎ তাই থাকবে যা তোমরা স্থির করবে?
68-40 : তাদের জিজ্ঞাসা করো - - তাদের মধ্যে কে এ - সন্বন্ধে জামিন হবে;
68-41 : না তাদের জন্য অংশী - দেবতারা আছে? তেমন হলে তাদের অংশী - দেবতাদের তারা নিয়ে আসুক যদি তারা সত্যবাদী হয়।
68-42 : একদিন চরম সংকট দেখা দেবে, আর তাদের ডাকা হবে সিজদা করতে, কিন্তু তারা সক্ষম হবে না।
68-43 : তাদের দৃষ্টি হবে অবনত, লাঞ্ছনা তাদের জড়িয়ে ফেলবে। অথচ তাদের আহ্বান করা হয়েই থাকত সিজদা করতে যখন তারা ছিল নিরাপদ।
68-44 : অতএব আমাকে এবং যে এই বাণী প্রত্যাখ্যান করে তাকে ছেড়ে দাও। আমরা তাদের ধাপে ধাপে নিয়ে যাব, কেমন করে তা তারা বুঝতেও পারবে না।
68-45 : তথাপি আমি ওদের সহ্য করি। আমার ফাঁদ নিশ্চয়ই বড় মজবুত।
68-46 : অথবা তুমি কি তাদের থেকে কোনো পারিশ্রমিক চাইছ যার ফলে তারা ধারকর্জ করে ভারাক্রান্ত হয়ে গেছে?
68-47 : অথবা অদৃশ্য কি তাদের কাছে রয়েছে, যার ফলে তারা লিখে রাখে?
68-48 : অতএব তোমার প্রভুর হুকুমের জন্য অধ্যবসায় চালিয়ে যাও, এবং তুমি মাছের সঙ্গীর মতো হয়ো না। দেখো! তিনি বিষাদে কাতর হয়ে ডেকেছিলেন।
68-49 : যদি তাঁর প্রভুর কাছ থেকে অনুগ্রহ তাঁর কাছে না পৌঁছুত তাহলে তিনি অবশ্যই উন্মুক্ত প্রান্তরে নিক্ষিপ্ত হতেন, আর তিনি হতেন নিন্দিত।
68-50 : কিন্তু তাঁর প্রভু তাঁকে মনোনীত করেছিলেন, ফলে তাঁকে সৎপথাবলন্বীদের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।
68-51 : আর যারা অবিশ্বাস পোষণ করেছে তারা যখন স্মারক - গ্রন্থ শোনে তখন তারা যেন তাদের চোখ দিয়ে তোমাকে আছড়ে মারবে, আর তারা বলে - - ''সে তো নিশ্চয়ই এক পাগল।’’
68-52 : আর এটি জগদ্বাসীর জন্য স্মারক - গ্রন্থ বৈ তো নয়।