8-1 : লোকে তোমাকে যুদ্ধলব্ধ সম্পদ সম্বন্ধে প্রশ্ন করে ; বল, ‘যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আল্লাহ্ এবং রাসূলের; সুতরাং আল্লাহ্ কে ভয় কর এবং নিজেদের মধ্যে সদ্ভাব স্থাপন কর, এবং আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের আনুগত্য কর, যদি তোমরা মু’মিন হও।’ |
8-2 : মু’মিন তো তাহারাই, যাহাদের হৃদয় কম্পিত হয় যখন আল্লাহ্ স্মরণ করা হয় এবং যখন তাঁহার আয়াত তাহাদের নিকট পাঠ করা হয়, তখন উহা তাহাদের ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তাহারা তাহাদের প্রতিপালকের উপরই নির্ভর করে, |
8-3 : যাহারা সালাত কায়েম করে এবং আমি যাহা দিয়াছি তাহা হইতে ব্যয় করে; |
8-4 : তাহারাই প্রকৃত মু’মিন। তাহাদের প্রতিপালকের নিকট তাহাদেরই জন্য রহিয়াছে মর্যাদা, ক্ষমা এবং সম্মানজনক জীবিকা। |
8-5 : ইহা এইরূপ, যেমন তোমার প্রতিপালক তোমাকে ন্যায়ভাবে তোমার গৃহ হইতে বাহির করিয়াছিলেন অথচ মু’মিনদের এক দল ইহা পসন্দ করে নাই। |
8-6 : সত্য স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হওয়ার পরও তাহারা তোমার সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত হয়। মনে হইতেছিল তাহারা যেন মৃত্যুর দিকে চালিত হইতেছে আর তাহারা যেন উহা প্রত্যক্ষ করিতেছে। |
8-7 : স্মরণ কর, আল্লাহ্ তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেন যে, দুই দলের একদল তোমাদের আয়ত্তাধীন হইবে; অথচ তোমরা চাহিতেছিলে, নিরস্ত্র দলটি তোমাদের আয়ত্তাধীন হউক। আর আল্লাহ্ চাহিতেছিলেন যে, তিনি সত্যকে তাঁহার বাণী দ্বারা প্রতিষ্ঠিত করেন এবং কাফিরদেরকে নির্মূল করেন; |
8-8 : ইহা এইজন্য যে, তিনি সত্যকে সত্য ও অসত্যকে অসত্য প্রতিপন্ন করেন, যদিও অপরাধীরা ইহা পছন্দকরে না। |
8-9 : স্মরণ কর, যখন তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিয়াছিলে; তখন তিনি তোমাদেরকে জবাব দিয়াছিলেন, ‘আমি তোমাদেরকে সাহায্য করিব এক সহস্র ফিরিশ্তা দ্বারা, যাহারা একের পর এক আসিবে।’ |
8-10 : আল্লাহ্ ইহা করেন কেবল শুভ সংবাদ দেওয়ার জন্য এবং এই উদ্দেশ্যে, যাহাতে তোমাদের চিত্ত প্রশান্তি লাভ করে; এবং সাহায্য তো শুধু আল্লাহর নিকট হইতেই আসে; নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। |
8-11 : স্মরণ কর, তিনি তাঁহার পক্ষ হইতে স্বস্তির জন্য তোমাদেরকে তন্দ্রায় আচ্ছন্ন করেন এবং আকাশ হইতে তোমাদের উপর বারি বর্ষণ করেন উহা দ্বারা তোমাদেরকে পবিত্র করিবার জন্য, তোমাদের মধ্য হইতে শয়তানের কুমন্ত্রণা অপসারণের জন্য, তোমাদের হৃদয় দৃঢ় করিবার জন্য এবং তোমাদের পা স্থির রাখিবার জন্য। |
8-12 : স্মরণ কর, তোমাদের প্রতিপালক ফিরিশ্তাগণের প্রতি প্রত্যাদেশ করেন, ‘আমি তোমাদের সঙ্গে আছি, সুতরাং মু’মিনগণকে অবিচলিত রাখ।’ যাহারা কুফরী করে আমি তাহাদের হৃদয়ে ভীতির সঞ্চার করিব ; সুতরাং তোমরা আঘাত কর তাহাদের স্কন্ধে ও আঘাত কর তাহাদের প্রত্যেক আঙ্গুলের অগ্রভাগে। |
8-13 : ইহা এইহেতু যে, তাহারা আল্লাহ্ও তাঁহার রাসূলের বিরোধিতা করে এবং কেহ আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের বিরোধিতা করিলে আল্লাহ্ তো শাস্তিদানে কঠোর। |
8-14 : সুতরাং ইহার আস্বাদ গ্রহণ কর এবং কাফিরদের জন্য দোজখের শাস্তি রহিয়াছে। |
8-15 : হে মু’মিনগণ! তোমরা যখন কাফির বাহিনীর সম্মুখীন হইবে তখন তোমরা তাহাদের পৃষ্ঠপ্রদর্শন করিবে না; |
8-16 : সেদিন যুদ্ধ - কৌশল অবলম্বন কিংবা দলে স্থান নেওয়া ব্যতীত কেহ তাহাদেরকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করিলে সে তো আল্লাহর বিরাগভাজন হইবে এবং তাহার আশ্রয় জাহান্নাম, আর উহা কত নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল! |
8-17 : তোমরা তাহাদেরকে হত্যা কর নাই, আল্লাহ্ তাহাদেরকে হত্যা করিয়াছেন, এবং তুমি যখন নিক্ষেপ করিয়াছিলে তখন তুমি নিক্ষেপ কর নাই, আল্লাহ্ই নিক্ষেপ করিয়াছিলেন, এবং ইহা মু’মিনগণকে আল্লাহর পক্ষ হইতে উত্তমরুপে পরীক্ষা করিবার জন্য; আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। |
8-18 : ইহাই তোমাদের জন্য, আল্লাহ্ কাফিরদের ষড়যন্ত্র দুর্বল করেন। |
8-19 : তোমরা মীমাংসা চাহিয়াছিলে, তাহা তো তোমাদের নিকট আসিয়াছে; যদি তোমরা বিরত হও তবে উহা তোমাদের জন্য কল্যাণকর ; যদি তোমরা পুনরায় কর তাতে আমিও পুনরায় শাস্তি দিব এবং তোমাদের দল সংখ্যায় অধিক হইলেও তোমাদের কোন কাজে আসিবে না, এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মু’মিনদের সঙ্গে রহিয়াছেন। |
8-20 : হে মু’মিনগণ! আল্লাহ্ও তাঁহার রাসূলের আনুগত্য কর এবং তোমরা যখন তাহার কথা শ্রবণ করিতেছ তখন উহা হইতে মুখ ফিরাইও না; |
8-21 : এবং তোমরা তাহাদের ন্যায় হইও না, যাহারা বলে, ‘শ্রবণ করিলাম’, বস্তুত তাহারা শ্রবণ করে না। |
8-22 : আল্লাহর নিকট নিকৃষ্টতম জীব সেই বধির ও মূক যাহারা কিছুই বোঝে না। |
8-23 : আল্লাহ্ যদি তাহাদের মধ্যে ভাল কিছু দেখিতেন তবে তিনি তাহাদেরকেও শুনাইতেন, কিন্তু তিনি তাহাদেরকে শুনাইলেও তাহারা উপেক্ষা করিয়া মুখ ফিরাইত। |
8-24 : হে মু’মিনগণ! রাসূল যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে আহ্বান করে যাহা তোমাদেরকে প্রাণবন্তকরে, তখন আল্লাহ্ ও রাসূলের আহ্বানে সাড়া দিবে এবং জানিয়া রাখ, আল্লাহ্ মানুষ ও তাহার অন্তরের মধ্যবর্তী হইয়া থাকেন, এবং তাঁহারই নিকট তোমাদেরকে একত্র করা হইবে। |
8-25 : তোমরা এমন ফিত্নাকে ভয় কর যাহা বিশেষ করিয়া তোমাদের মধ্যে যাহারা জালিম কেবল তাহাদেরকেই ক্লিষ্ট করিবে না এবং জানিয়া রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ শাস্তিদানে কঠোর। |
8-26 : স্মরণ কর, তোমরা ছিলে স্বল্পসংখ্যক; পৃথিবীতে তোমরা দুর্বলরূপে পরিগণিত হইতে। তোমরা আশংকা করিতে যে, লোকেরা তোমাদেরকে অকস্মাৎ ধরিয়া লইয়া যাইবে। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে আশ্রয় দেন, স্বীয় সাহায্য দ্বারা তোমাদেরকে শক্তিশালী করেন এবং তোমাদেরকে উত্তম বস্তুসমূহ জীবিকারূপে দান করেন, যাহাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও। |
8-27 : হে মু’মিনগণ! জানিয়া - শুনিয়া আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের সঙ্গে বিশ্বাস ভংগ করিবে না এবং তোমাদের পরস্পরের আমানত সম্পর্কেও বিশ্বাস ভংগ করিও না |
8-28 : এবং জানিয়া রাখ, তোমাদের ধন - সম্পদ ও সন্তান - সন্ততি তো এক পরীক্ষা এবং আল্লাহ্ নিকট মহাপুরস্কার রহিয়াছে। |
8-29 : হে মু’মিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ্ কে ভয় কর তবে আল্লাহ্ তোমাদেরকে ন্যায় - অন্যায় পার্থক্য করিবার শক্তি দিবেন, তোমাদের পাপ মোচন করিবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করিবেন এবং আল্লাহ্ অতিশয় মঙ্গলময়। |
8-30 : স্মরণ কর, কাফিররা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তোমাকে বন্দী করিবার জন্য, হত্যা করিবার অথবা নির্বাসিত করিবার জন্য এবং তাহারা ষড়যন্ত্র করে এবং আল্লাহ্ কৌশল করেন; আর আল্লাহ্ই সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী। |
8-31 : যখন তাহাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তাহারা তখন বলে, ‘আমরা তো শ্রবণ করিলাম, ইচ্ছা করিলে আমরাও ইহার অনুরূপ বলিতে পারি, ইহা তো শুধু সেকালের লোকদের উপকথা।’ |
8-32 : স্মরণ কর, তাহারা বলিয়াছিল, ‘হে আল্লাহ্ ইহা যদি তোমার পক্ষ হইতে সত্য হয়, তবে আমাদের উপর আকাশ হইতে প্রস্তর বর্ষণ কর কিংবা আমাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তি দাও।’ |
8-33 : আল্লাহ্ এমন নন যে, তুমি তাহাদের মধ্যে থাকিবে, অথচ তিনি তাহাদেরকে শাস্তিদিবেন, এবং আল্লাহ্ এমনও নন যে, তাহারা ক্ষমা প্রার্থনা করিবে অথচ তিনি তাহাদেরকে শাস্তি দিবেন। |
8-34 : এবং তাহাদের কী বা বলিবার আছে যে, আল্লাহ্ তাহাদেরকে শাস্তি দিবেন না, যখন তাহারা লোকদেরকে মসজিদুল হারাম হইতে নিবৃত্ত করে? তাহারা উহার তত্ত্বাবধায়ক নয়, শুধু মুত্তাকীগণই উহার তত্ত্বাবধায়ক; কিন্তু তাহাদের অধিকাংশ ইহা অবগত নয়। |
8-35 : কা‘বাগৃহের নিকট শুধু শিস ও করতালি দেওয়াই তাহাদের সালাত, সুতরাং কুফরীর জন্য তোমরা শাস্তি ভোগ কর। |
8-36 : আল্লাহ্ পথ হইতে লোককে নিবৃত্ত করার জন্য কাফিররা তাহাদের ধনসম্পদ ব্যয় করে, তাহারা ধন - সম্পদ ব্যয় করিতেই থাকিবে; অতঃপর উহা তাহাদের মনস্তাপের কারণ হইবে; ইহার পর তাহারা পরাভূত হইবে এবং যাহারা কুফরী করে তাহাদেরকে জাহান্নামে একত্র করা হইবে। |
8-37 : ইহা এইজন্য যে, আল্লাহ্ কুজনকে সুজন হইতে পৃক করিবেন এবং কুজনদের এককে অপরের উপর রাখিবেন, অতঃপর সকলকে স্তূপীকৃত করিয়া জাহান্নামে নিক্ষেপ করিবেন, ইহারাই ক্ষতিগ্রস্ত। |
8-38 : যাহারা কুফরী করে তাহাদেরকে বল, ‘যদি তাহারা বিরত হয় তবে যাহা অতীতে হইয়াছে আল্লাহ্ তাহা ক্ষমা করিবেন; কিন্তু তাহারা যদি অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি করে তবে পূর্ববর্তীদের দৃষ্টান্ত তো রহিয়াছে। |
8-39 : এবং তোমরা তাহাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করিতে থাকিবে যতক্ষণ না ফিত্না দূরীভূত হয় এবং আল্লাহর দীন সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং যদি তাহারা বিরত হয় তবে তাহারা যাহা করে |
8-40 : যদি তাহারা মুখ ফিরায় তবে জানিয়া রাখ, আল্লাহ্ তোমাদের অভিভাবক; কত উত্তম অভিভাবক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী! |
8-41 : আরও জানিয়া রাখ, যুদ্ধে যাহা তোমরা লাভ কর তাহার এক - পঞ্চমাংশ আল্লাহ্ রাসূলের, রাসূলের স্বজনদের, ইয়াতীমদের, মিস্কীনদের এবং মুসাফিরদের, যদি তোমরা ঈমান রাখ আল্লাহ্ এবং তাহাতে যাহা মীমাংসার দিন আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করিয়াছিলাম, যেই দিন দুই দল পরস্পরের সম্মুখীন হইয়াছিল এবং আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে শক্তিমান। |
8-42 : স্মরণ কর, তোমরা ছিলে উপত্যকার নিকটপ্রান্তেএবং তাহারা ছিল দূরপ্রান্তেআর উষ্ট্রারোহী দল ছিল তোমাদের অপেক্ষা নিুভূমিতে। যদি তোমরা পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্ত করিতে চাহিতে তবে এই সিদ্ধান্তসম্পর্কে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটিত। কিন্তু যাহা ঘটিবার ছিল, আল্লাহ্ তাহা সম্পন্ন করিলেন, যাহাতে যে কেহ ধ্বংস হইবে সে যেন সত্যাসত্য স্পষ্ট প্রকাশের পর ধ্বংস হয় এবং যে জীবিত থাকিবে সে যেন সত্যাসত্য স্পষ্ট প্রকাশের পর জীবিত থাকে; আল্লাহ্ তো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। |
8-43 : স্মরণ কর, আল্লাহ্ তোমাকে স্বপ্নে দেখাইয়াছিলেন যে, তাহারা সংখ্যায় অল্প; যদি তোমাকে দেখাইতেন, তাহারা সংখ্যায় অধিক তবে তোমরা সাহস হারাইতে এবং যুদ্ধ বিষয়ে নিজেদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করিতে। কিন্তু আল্লাহ্ তোমাদেরকে রক্ষা করিয়াছিলেন এবং অন্তরে যাহা আছে সে সম্বন্ধে তিনি বিশেষভাবে অবহিত। |
8-44 : স্মরণ কর, তোমরা যখন পরস্পরের সম্মুখীন হইয়াছিলে তখন তিনি তাহাদেরকে তোমাদের দৃষ্টিতে স্বল্পসংখ্যক দেখাইয়াছিলেন এবং তোমাদেরকে তাহাদের দৃষ্টিতে স্বল্পসংখ্যক দেখাইয়াছিলেন, যাহা ঘটিবার ছিল তাহা সম্পন্ন করিবার জন্য। সমস্ত বিষয় আল্লাহর দিকেই প্রত্যাবর্তিত হয়। |
8-45 : হে মু’মিনগণ! তোমরা যখন কোন দলের সম্মুখীন হইবে তখন অবিচল থাকিবে এবং আল্লাহ্ কে অধিক স্মরণ করিবে, যাহাতে তোমরা সফলকাম হও। |
8-46 : তোমরা আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের আনুগত্য করিবে ও নিজেদের মধ্যে বিবাদ করিবে না; করিলে তোমরা সাহস হারাইবে এবং তোমাদের শক্তি বিলুপ্ত হইবে। তোমরা ধৈর্য ধারণ কর; |
8-47 : তোমরা তাহাদের ন্যায় হইও না যাহারা দম্ভভরে ও লোক দেখাইবার জন্য স্বীয় গৃহ হইতে বাহির হইয়াছিল এবং লোককে আল্লাহ্ পথ হইতে নিবৃত্ত করে। তাহারা যাহা করে আল্লাহ্ তাহা পরিবেষ্টন করিয়া রহিয়াছেন। |
8-48 : স্মরণ কর, শয়তান যখন তাহাদের কার্যাবলী তাহাদের দৃষ্টিতে শোভন করিয়াছিল এবং বলিয়াছিল, ‘আজ মানুষের মধ্যে কেহই তোমাদের উপর বিজয়ী হইবে না, আমি তোমাদের পাশেই থাকিব;’ অতঃপর দুই দল যখন পরস্পরের সম্মুখীন হইল তখন সে পিছনে সরিয়া পড়িল ও বলিল, ‘তোমাদের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক রহিল না, তোমরা যাহা দেখিতে পাও না আমি |
8-49 : স্মরণ কর, শয়তান যখন তাহাদের কার্যাবলী তাহাদের দৃষ্টিতে শোভন করিয়াছিল এবং বলিয়াছিল, ‘আজ মানুষের মধ্যে কেহই তোমাদের উপর বিজয়ী হইবে না, আমি তোমাদের পাশেই থাকিব;’ অতঃপর দুই দল যখন পরস্পরের সম্মুখীন হইল তখন সে পিছনে সরিয়া পড়িল ও বলিল, ‘তোমাদের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক রহিল না, তোমরা যাহা দেখিতে পাও না আমি তো তাহা দেখি, নিশ্চয়ই আমি আল্লাহ্ কে ভয় করি, ‘আর আল্লাহ্ শাস্তিদানে কঠোর। |
8-50 : তুমি যদি দেখিতে পাইতে ফিরিশ্তাগণ কাফিরদের মুখমণ্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করিয়া তাহাদের প্রাণ হরণ করিতেছে এবং বলিতেছে, ‘তোমরা দহনযন্ত্রণা ভোগ কর।’ |
8-51 : ইহা তাহা, তোমাদের হস্ত যাহা পূর্বে প্রেরণ করিয়াছিল, আল্লাহ্ তো তাহার বান্দাদের প্রতি অত্যাচারী নন। |
8-52 : ফির‘আওনের স্বজন ও উহাদের পূর্ববর্তীদের অভ্যাসের ন্যায় ইহারা আল্লাহর নিদর্শনকে প্রত্যাখ্যান করে; সুতরাং আল্লাহ্ ইহাদের পাপের জন্য ইহাদেরকে শাস্তি দেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ শক্তিমান, শাস্তিদানে কঠোর; |
8-53 : ইহা এইজন্য যে, যদি কোন সম্প্রদায় নিজের অবস্থার পরিবর্তন না করে তবে আল্লাহ্ এমন নন যে, তিনি উহাদেরকে যে সম্পদ দান করিয়াছেন, উহা পরিবর্তন করিবেন; এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। |
8-54 : ফির‘আওনের স্বজন ও তাহাদের পূর্ববর্তীদের অভ্যাসের ন্যায় ইহারা ইহাদের প্রতিপালকের নিদর্শনকে অস্বীকার করে। তাহাদের পাপের জন্য আমি তাহাদেরকে ধ্বংস করিয়াছি এবং ফির‘আওনের স্বজনকে নিমজ্জিত করিয়াছি এবং তাহারা সকলেই ছিল জালিম। |
8-55 : আল্লাহর নিকট নিকৃষ্ট জীব তাহরাই যাহারা কুফরী করে এবং ঈমান আনে না। |
8-56 : উহাদের মধ্যে তুমি যাহাদের সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ, তাহারা প্রত্যেকবার তাহাদের চুক্তি ভঙ্গ করে এবং তাহারা সাবধান হয় না; |
8-57 : যুদ্ধে উহাদেরকে তোমরা যদি তোমাদের আয়ত্তে পাও তবে উহাদেরকে উহাদের পশ্চাতে যাহারা আছে, তাহাদের হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়া এমনভাবে বিধ্বস্ত করিবে, যাহাতে উহারা শিক্ষা লাভ করে। |
8-58 : যদি তুমি কোন সম্প্রদায়ের চুক্তিভঙ্গের আশংকা কর তবে তোমার চুক্তিও তুমি যথাযথ বাতিল করিবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ্ চুক্তি ভঙ্গকারীদেরকে পছন্দ করেন না। |
8-59 : কাফিররা যেন কখনও মনে না করে যে, তাহারা পরিত্রাণ পাইয়াছে ; নিশ্চয়ই তাহারা মু’মিনগণকে হতবল করিতে পারিবে না। |
8-60 : তোমরা তাহাদের মুকাবিলার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও অশ্ববাহিনী প্রস্তুত রাখিবে - এতদ্বারা তোমরা সন্ত্রস্ত করিবে আল্লাহ্ শত্রুক, তোমাদের শত্রুকে এবং এতদ্ব্যতীত অন্যদেরকে যাহাদেরকে তোমরা জান না, আল্লাহ্ তাহাদেরকে জানেন। আল্লাহর পথে তোমরা যাহা কিছু ব্যয় করিবে উহার পূর্ণপ্রতিদান তোমাদেরকে দেওয়া হইবে এবং তোমাদের প্রতি জুলুম করা হইবে না। |
8-61 : তাহারা যদি সন্ধির দিকে ঝুঁকিয়া পড়ে তবে তুমিও সন্ধির দিকে ঝুঁকিবে এবং আল্লাহর উপর নির্ভর করিবে; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। |
8-62 : যদি তাহারা তোমাকে প্রতারিত করিতে চায় তবে তোমার জন্য আল্লাহ্ যথেষ্ট; তিনি তোমাকে স্বীয় সাহায্য ও মু’মিনদের দ্বারা শক্তিশালী করিয়াছেন, |
8-63 : এবং তিনি উহাদের পরস্পরের হৃদয়ের মধ্যে প্রীতি স্থাপন করিয়াছেন। পৃথিবীর যাবতীয় সম্পদ ব্যয় করিলেও তুমি তাহাদের হৃদয়ে প্রীতি স্থাপন করিতে পারিতে না; কিন্তু আল্লাহ্ তাহাদের মধ্যে প্রীতি স্থাপন করিয়াছেন; নিশ্চয়ই তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। |
8-64 : হে নবী! তোমার জন্য ও তোমার অনুসারী মু’মিনদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। |
8-65 : হে নবী ! মু’মিনদেরকে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ কর; তোমাদের মধ্যে কুড়িজন ধৈর্যশীল থাকিলে তাহারা দুই শত জনের উপর বিজয়ী হইবে এবং তোমাদের মধ্যে এক শত জন থাকিলে এক সহস্র কাফিরের উপর বিজয়ী হইবে। কারণ তাহারা এমন এক সম্প্রদায়, যাহার বোধশক্তি নাই। |
8-66 : আল্লাহ্ এখন তোমাদের ভার লাঘব করিলেন। তিনি অবগত আছেন যে, তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে; সুতরাং তোমাদের মধ্যে এক শত জন ধৈর্যশীল থাকিলে তাহারা দুই শত জনের উপর বিজয়ী হইবে। আর তোমাদের মধ্যে এক সহস্র থাকিলে আল্লাহ্ অনুজ্ঞাক্রমে তাহারা দুই সহস্রের উপর বিজয়ী হইবে। আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। |
8-67 : দেশে ব্যাপকভাবে শত্রুকে পরাভূত না করা পর্যন্ত বন্দী রাখা কোন নবীর জন্য সংগত নয়। তোমরা কামনা কর পার্থিব সম্পদ এবং আল্লাহ্ চান পরলোকের কল্যাণ; আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। |
8-68 : আল্লাহ্ পূর্ববিধান না থাকিলে তোমরা যাহা গ্রহণ করিয়াছ তজ্জন্য তোমাদের উপর মহাশাস্তি আপতিত হইত। |
8-69 : যুদ্ধে যাহা তোমরা লাভ করিয়াছ তাহা বৈধ ও উত্তম বলিয়া ভোগ কর এবং আল্লাহ্ ভয় কর; আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। |
8-70 : হে নবী ! তোমাদের করায়ত্ত যুদ্ধবন্দীদেরকে বল, আল্লাহ্ যদি তোমাদের হৃদয়ে ভাল কিছু দেখেন তবে তোমাদের নিকট হইতে যাহা নেওয়া হইয়াছে তাহা অপেক্ষা উত্তম কিছু তিনি তোমাদের কে দান করিবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করিবেন। আল্লাহ্ যদি তোমাদের হৃদয়ে ভাল কিছু দেখেন তবে তোমাদের নিকট হইতে যাহা নেওয়া হইয়াছে তাহা অপেক্ষা উত্তম কিছু তিনি তোমাদেরকে দান করিবেন। আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ |
8-71 : তাহারা তোমার সঙ্গে বিশ্বাস ভঙ্গ করিতে চাহিলে, তাহারা তো পূর্বে আল্লাহর সঙ্গেও বিশ্বাস ভঙ্গ করিয়াছে; অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তাহাদের উপর শক্তিশালী করিয়াছেন। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। |
8-72 : যাহারা ঈমান আনিয়াছে, হিজরত করিয়াছে, নিজেদের জীবন ও সম্পদ দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করিয়াছে ; আর যাহারা আশ্রয় দান করিয়াছে ও সাহায্য করিয়াছে তাহারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। আর যাহারা ঈমান আনিয়াছে কিন্তু হিজরত করে নাই, হিজরত না করা পর্যন্ত তাহাদের অভিভাবকত্বের দায়িত্ব তোমাদের নাই ; আর দীন সম্বন্ধে যদি তাহারা তোমাদের সাহায্য প্রার্থনা করে তবে তাহাদেরকে সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য, কিন্তু যে সম্প্রদায় ও তোমাদের মধ্যে চুক্তি রহিয়াছে তাহাদের বিরুদ্ধে নয়। তোমরা যাহা কর আল্লাহ্ উহার সম্যক দ্রষ্টা। |
8-73 : যাহারা কুফরী করিয়াছে তাহারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু, যদি তোমরা উহা না কর তবে দেশে ফিত্না ও মহাবিপর্যয় দেখা দিবে। |
8-74 : যাহারা ঈমান আনিয়াছে, হিজরত করিয়াছে ও আল্লাহর পথে জিহাদ করিয়াছে আর যাহারা আশ্রয় দান করিয়াছে ও সাহায্য করিয়াছে, তাহারাই প্রকৃত মু’মিন; তাহাদের জন্য ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা রহিয়াছে। |
8-75 : যাহারা পরে ঈমান আনিয়াছে, হিজরত করিয়াছে ও তোমাদের সঙ্গে থাকিয়া জিহাদ করিয়াছে। তাহারাও তোমাদের অন্তর্ভুক্ত এবং আত্মীয়গণ আল্লাহর বিধানে একে অন্য অপেক্ষা অধিক হকদার। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সম্যক অবহিত। |