58-1 : আল্লাহ অবশ্যই শুনিয়াছেন সেই নারীর কথা, যে তাহার স্বামীর বিষয়ে তোমার সঙ্গে বাদানুবাদ করিতেছে এবং আল্লাহর নিকটও ফরিয়াদ করিতেছে। আল্লাহ তোমাদের কথোপকথন শোনেন, আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। |
58-2 : তোমাদের মধ্যে যাহারা নিজেদের স্ত্রীগণের সঙ্গে যিহার করে, তাহারা জানিয়া রাখুক - তাহাদের স্ত্রীগণ তাহাদের মাতা নন, যাহারা তাহাদেরকে জন্মদান করে কেবল তাহারাই তাহাদের মাতা; তাদরেকে জন্মদান করছে। তারা তাতে অসমীচীন ও ভিত্তিহীন কথাই বল। নিশ্চয় আল্লাহ পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল। |
58-3 : যাহারা নিজেদের স্ত্রীগণের সঙ্গে যিহার করে এবং পরে উহাদের উক্তি প্রত্যাহার করে, তবে একে অপরকে স্পর্শ করিবার পূর্বে একটি দাস মুক্ত করিতে হইবে, ইহা দ্বারা তোমাদেরকে উপদেশ হবে, আল্লাহ খবর রাখনে তোমরা যা কর।। |
58-4 : কিন্তু যাহার এ সামর্থ্য থাকিবে না, একে অপরকে স্পর্শ করিবার পূর্বে তাহাকে একাদিক্রমে দুই মাস সিয়াম পালন করিতে হইবে ; যে তাহাতেও অসমর্থ, সে ষাটজন অভাবগ্রস্তকে খাওয়াইবে; ইহা এইজন্য যে, তোমরা যেন আল্লাহ ও তাঁহার রাসূলে বিশ্বাস স্থাপন কর। এইগুলি আল্লাহর নির্ধারিত বিধান; কাফিরদের জন্য রহিয়াছে মর্মন্তুদ শাস্তি। |
58-5 : যাহারা আল্লাহ ও তাঁহার রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, তাহাদেরকে অপদস্থকরা হইবে যেমন অপদস্থ করা হইয়াছে তাহাদের পূর্ববর্তীদেরকে; আমি সুস্পষ্ট আয়াত অবতীর্ণ করিয়াছি; কাফিরদের জন্য রহিয়াছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি - |
58-6 : সেই দিন, যেদিন উহাদের সকলকে একত্রে উত্থিত করা হইবে এবং উহাদেরকে জানাইয়া দেওয়া হইবে যাহা উহারা করিত; আল্লাহ উহার হিসাব রাখিয়াছেন, আর উহারা তাহা বিস্মৃত আল্লাহর সামনে উপস্থতি আছে সব বস্তুই। |
58-7 : তুমি কি লক্ষ্য কর না, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যাহা কিছু আছে আল্লাহ তাহা জানেন? তিন ব্যক্তির মধ্যে এমন কোন গোপন পরামর্শ হয় না যাহাতে চতুর্থ জন হিসাবে তিনি উপস্থিত থাকেন না এবং পাঁচ ব্যক্তির মধ্যেও হয় না যাহাতে ষষ্ঠ জন হিসাবে তিনি উপস্থিত থাকেন না। উহারা এতদপেক্ষা কম হউক বা বেশি হউক তিনি তো তাহাদের সঙ্গেই আছেন, উহারা যেখানেই থাকুক না কেন। অতঃপর উহারা যাহা করে, তিনি উহাদেরকে কিয়ামতের দিন তাহা জানাইয়া দিবেন। নিশ্চয় আল্লাহ র্সববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত |
58-8 : তুমি কি তাহাদেরকে লক্ষ্য কর না, যাহাদেরকে গোপন পরামর্শ করিতে নিষেধ করা হইয়াছিল? অতঃপর উহারা যাহা নিষিদ্ধ তাহারই পুনরাবৃত্তি করে এবং পাপাচরণ, সীমালংঘন ও রাসূলের বিরুদ্ধাচরণের জন্য কানাকানি করে। উহারা যখন তোমার নিকট আসে তখন উহারা তোমাকে এমন কথা দ্বারা অভিবাদন করে যদ্ধারাআল্লাহ তোমাকে অভিবাদন করেন নাই। উহারা মনে মনে বলে, ‘আমরা যাহা বলি তাহার জন্য আল্লাহ আমাদেরকে শাস্তিদেন না কেন?’ জাহান্নামই উহাদের জন্য যথেষ্ট, যেখানে উহারা প্রবেশ করিবে, কত নিকৃষ্ট সেই আবাস! |
58-9 : হে মু’মিনগণ! তোমরা যখন গোপন পরামর্শ কর, সে পরামর্শ যেন পাপাচরণ, সীমালংঘন ওরাসূলের বিরুদ্ধাচরণ সম্পর্কে না হয়। তোমরা কল্যাণকর কাজ ও তাক্ওয়া অবলম্বনের যাঁর কাছে তোমাদেরকে সমবেত করা হইবে। |
58-10 : শয়তানের প্ররোচনায় হয় এই গোপন পরামর্শ মু’মিনদেরকে দুঃখ দেওয়ার জন্য। তবে আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত শয়তান তাহাদের সামান্যতম ক্ষতি সাধনেও সক্ষম নয়। মু’মিনদের কর্তব্য আল্লাহর উপর নির্ভর করা। |
58-11 : হে মু’মিনগণ! যখন তোমাদেরকে বলা হয়, মজলিসে স্থান প্রশস্তকরিয়া দাও, তখন তোমরা স্থান করিয়া দিও, আল্লাহ তোমাদের জন্য স্থান প্রশস্ত করিয়া দিবেন এবং যখন বলা হয়, ‘উঠিয়া যাও’, তোমরা উঠিয়া যাইও। তোমাদের মধ্যে যাহারা ঈমান আনিয়াছে এবং যাহাদেরকে জ্ঞান দান করা হইয়াছে আল্লাহ তাহাদেরকে মর্যাদায় উন্নত করিবেন; তোমরা যাহা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত। |
58-12 : হে মু’মিনগণ! তোমরা রাসূলের সঙ্গে চুপি চুপি কথা বলিতে চাহিলে তাহার পূর্বে সাদাকা প্রদান করিবে, ইহাই তোমাদের জন্য শ্রেয় ও পরিশোধক ; যদি তাহাতে অক্ষম হও, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। |
58-13 : তোমরা কি চুপে চুপে কথা বলিবার পূর্বে সাদাকা প্রদানকে কষ্টকর মনে কর! যখন তোমরা সাদাকা দিতে পারিলে না, আর আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করিয়া দিলেন, তখন তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং আল্লাহ ও তাঁহার রাসূলের আনুগত্য কর। তোমরা যাহা কর আল্লাহ সম্যক অবগত।। |
58-14 : তুমি কি তাহাদের প্রতি লক্ষ্য কর নাই যাহারা, আল্লাহ যে সম্প্রদায়ের প্রতি রুষ্ট, তাহাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে? উহারা তোমাদের দলভুক্ত নয়, তাহাদের দলভুক্তও নয় এবং উহারা জানিয়াশুনিয়া মিথ্যা শপথ করে। |
58-15 : আল্লাহ তাদের জন্য কঠোর শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। নিশ্চয় তারা যা করে, খুবই মন্দ। |
58-16 : উহারা উহাদের শপথগুলিকে ঢালস্বরূপ ব্যবহার করে, আর উহারা আল্লাহ পথ হইতে নিবৃত্ত করে; অতএব উহাদের জন্য রহিয়াছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। |
58-17 : আল্লাহ শাস্তির মুকাবিলায় উহাদের ধন - সম্পদ ও সন্তান - সন্ততি উহাদের কোন কাজে আসিবে না; উহারাই জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানে উহারা স্থায়ী হইবে। |
58-18 : যে দিন আল্লাহ পুনরুত্থিত করিবেন উহাদের সকলকে, তখন উহারা আল্লাহর নিকট সেইরূপ শপথ করিবে যেইরূপ শপথ তোমাদের নিকট করে এবং উহারা মনে করে যে, ইহাতে উহারা ভাল কিছুর উপর রহিয়াছে। সাবধান! উহারাই তো প্রকৃত মিথ্যাবাদী। |
58-19 : শয়তান উহাদের উপর প্রভাব বিস্তার করিয়াছে ; ফলে উহাদেরকে ভুলাইয়া দিয়াছে আল্লাহকে। স্মরণ। উহারা শয়তানের দল। সাবধান! শয়তানের দল অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত। |
58-20 : নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচারণ করে, তারাই লাঞ্চিতদের দলভূক্ত। |
58-21 : আল্লাহ সিদ্ধান্ত করিয়াছেন, আমি অবশ্যই বিজয়ী হইব এবং আমার রাসূলগণও। নিশ্চয় আল্লাহ শক্তধির, পরাক্রমশালী। |
58-22 : তুমি পাইবে না আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাসী এমন কোন সম্প্রদায়, যাহারা ভালবাসে আল্লাহ ও তাঁহার রাসূলের বিরুদ্ধাচারীদেরকে - হউক না এই বিরুদ্ধাচারীরা তাহাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা ইহাদের জ্ঞাতি - গোত্র। ইহাদের অন্তরে আল্লাহ সুদৃঢ় করিয়াছেন ঈমান এবং তাহাদেরকে শক্তিশালী করিয়াছেন তাঁহার পক্ষ হইতে রূহ্ দ্বারা। তিনি ইহাদেরকে দাখিল করিবেন জান্নাতে, যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; সেখানে ইহারা স্থায়ী হইবে ; আল্লাহ ইহাদের প্রতি সন্তুষ্ট হইয়াছেন এবং ইহারাও তাঁহার প্রতি সন্তুষ্ট, ইহারাই আল্লাহ দল। জানিয়া রাখ, আল্লাহর দলই সফলকাম হইবে। |