সালাত
নামাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনেক কিছুই পড়তে হয়। অনেক নতুন মুসল্লি না জানার কারণে এসব ভুল করেন। আবার জানা থাকা সত্বেও অনেকে ভুল করে বসেন। আসুন আবার জেনে নেই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নামাজে কী কী পড়তে হয়।
১. তাকবিরে তাহরিমা: আল্লাহু আকবার। (الله اكبر) (আল্লাহ তা’য়ালা সর্বশ্রেষ্ট্)
2. সানা : সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাস্’মুকা ওয়া তায়া’লা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা। অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি পাক, তোমারই জন্য সমস্ত্ প্রশংসা, তোমার নাম পবিত্র এবং বরকতময়।তোমার গৌরব অতি উচ্চ, তুমি ছাড়া অন্য কেহ উপাস্য নাই ।
তাআউয (আউযুবিল্লাহ): আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বোনির রাজীম। অর্থ: বিতারিত শয়তান হইতে, আল্লাহ তা’য়ালার আশ্রয় প্রার্থনা করিতেছি ।
তাসমিয়াহ (বিসমিল্লাহ্): বিসমিল্লাহির রহ্’মানির রহিম [শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুনাময়, অসীম দয়ালু]
৩. সুরা ফাতিহা :
i) (بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ)-[শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুনাময়, অতি দয়ালু]।
ii) (الْحَمْدُ للّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ)-[যাবতীয় প্রশংশা আল্লাহ তা’আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা]।
iii) (الرَّحْمـنِ الرَّحِيمِ)-[যিনি নিতান্ত্ মেহেরবান ও দয়ালু]।
iv) (مَـالِكِ يَوْمِ الدِّينِ)-[যিনি বিচার দিনের মালিক]।
v) (إِيَّاكَ نَعْبُدُ وإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ)-[আমরা শুধুমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি]।
vi) (اهدِنَــــا الصِّرَاطَ المُستَقِيمَ)-[আমাদের সরল পথ দেখাও],
vii) (صِرَاطَ الَّذِينَ أَنعَمتَ عَلَيهِمْ غَيرِ المَغضُوبِ عَلَيهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ)-[তাদের পথ যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয় যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে]।
৪. অন্য একটি সুরা: নামাজি ব্যক্তি ইচ্ছেমতো যে কোনো সুরা বা কুরআনের মধ্য থেকে যে কোনো আয়াত তেলাওয়াত করতে পারেন। নিম্নে কয়েকটি ছোট সুরা সংযুক্ত করা হলো
সুরা ইখলাস
কুল হুওয়াল্লা হু আহাদ (বলো তিনি আল্লাহ (যিনি) অদ্বিতীয়)
আল্লা হুসসামাদ (আল্লাহ সবার নির্ভরস্থল)
লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ (তিনি কাউকে জন্ম দেননি ও তাঁকেও কেউ জন্ম দেয়নি)
ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ (আর তাঁর সমতুল্য কেউ নেই)
সুরা কাওসার
ইন্নাআ তাইনা-কাল কাওছার (নিশ্চয় আমি আপনাকে কাওসার দান করেছি)
ফাসালিল লিরাব্বিকা ওয়ানহার (অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কোরবানী করুন)
ইন্না শা-নিআকা হুওয়াল আবতার (যে আপনার শত্রু, সেই তো লেজকাটা, নির্বংশ)
সুরা লাহাব
ত্বাব্বাত ইয়াদা- আবী লাহাবিউ ওয়া তাব্বা (আবু লাহাবের হাত দুটি চূর্ণ হোক ও সে স্বয়ং ধ্বংস হোক)
মা আগনা- ‘আনহু মা-লুহু ওয়ামা- কাসাব (তার ধনসম্পদ তার কোন কাজেই এল না, অনুরূপ তার উপার্জন)
ছাইয়াছলা-না-রানযা-তা লাহাবিউ ওয়ামরাআতুহ (সে খুব শিগগিরই লেলিহান আগুনে প্রবেশ করবে)
হাম্মা- লাতাল হাত্বোয়াব (এবং তার স্ত্রীও, যে আগুনের ইন্ধন বা লাকড়ি বহন করে)
ফীজী দিহা- হাবলুম মিম মাসাদ (তার গলদেশে পাকানো রজ্জু বাঁধানো আছে)
সুরা নাস
কুল আউযু বিরাব্বিন নাস (বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করিতেছি মানুষের পালনকর্তার)
মালিকিন্ নাস (মানুষের অধিপতির)
ইলাহিন্ নাস (মানুষের মা’বুদের)
মিন্ শররিল ওয়াস্ ওয়াসিল খান্নাস (তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্নগোপন করে)
আল্লাযী ইউওযাসবিসু ফী ছুদুরিন্নাস (যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে)
মিনা জিন্নাতি ওয়ান্নাস (জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে)
৫. রুকুর তাসবীহ: সুবহানা রব্বিয়াল আযীম । (আমার মহান প্রভু পবিত্র)।
রুকু হইতে উঠার তাসবিহ
সামিআল্লাহু লিমান হামিদা (যে আল্লাহর প্রশংশা করে, আল্লাহ তা শোনেন)।
৬. রুকু হইতে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ার তাসবিহ
রব্বানা লাকাল হাম্’দ (হে আমাদের রব ! তোমার জন্যই সকল প্রশংশা)
৭. সিজদার তাসবিহ
আরবী উচ্চারণ: সুবহানা রব্বিয়াল আ’লা (আমার মহান আল্লাহ পবিত্র)।
তাশাহ্’হুদ (আত্তাহিয়্যাতু):
আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াচ্ছালাওয়াতু ওয়াত্’ত্ব্ইয়্যিবাতু (সমস্ত্ তা’যীম, সমস্ত্ ভক্তি, নামায, সমস্ত্ পবিত্র ইবাদত বন্দেগী আল্লাহর জন্য্, আল্লাহর উদ্দেশ্যে),
আস্’সালামু আ’লাইকা আইয়্যুহান্’নাবিয়্যু ওয়া রহ্’মাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু (হে নবী! আপনাকে সালাম এবং আপনার উপর আল্লাহর অসীম রহমত ও বরকত)
আস্’সালামু আ’লাইনা ওয়া আলা ই’বদিল্লাহিছ্ ছ্বালিহীন (আমাদের জন্য এবং আল্লাহর নেক বান্দাদদদের জন্য আল্লাহর পহ্ম্ থেকে শান্তি অবতীর্ন হোক)।
আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু (আমি সাহ্ম্ দিচ্ছি যে এক আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নাই এবং মোহাম্মদ সা. আল্লাহর বন্দা ও রাসুল।) ।
দরুদ শরীফ
আল্লাহুম্মা ছাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আ’লা ইব্রাহীমা ওয়া আ’লা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ [হে আল্লাহ্! হযরত মোহাম্মদ (দঃ) এবং মোহাম্মদ (দঃ)-এর আওলাদগনের উপর তোমার খাস রহমত নাযিল কর, যেমন ইবরাহীম (আঃ) এবং ইবরাহীম (আঃ)-এর আওলাদগনের তোমার উপর খাস্ রহমত নাযিল করেছ, নিশ্চয়ই তুমি প্রসংশার যোগ্য এবং সর্বোচ্চ্ সন্মানের অধিকারী]।
আল্লাহুম্মা বারিক আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাক্’তা আ’লা ইব্রাহীমা ওয়া আ’লা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ [হে আল্লাহ্! হযরত মোহাম্মদ (দঃ) এবং মোহাম্মদ (দঃ)-এর আওলাদগনের উপর তোমার খাস বরকত নাযিল কর, যেমন ইবরাহীম (আঃ) এবং ইবরাহীম (আঃ)-এর আওলাদগনের তোমার উপর খাস্ বরকত নাযিল করেছ, নিশ্চয়ই তুমি প্রসংশার যোগ্য এবং সর্বোচ্চ্ সন্মানের অধিকারী]
* সিজদা থেকে উঠে বসে তাসবিহ্ (দুই সিজদার মাঝে)
রব্বিগ্ফিরলী-,রব্বিগ্ফিরলী-,রব্বিগ্ফিরলী-,আল্লাহুম্মাগফিরলী-,ওয়ারহামনী-,ওয়াহদিনী-, ওয়ারযুকনী-,ওয়া ‘আ-ফিনী-,ওয়াজবুরনী-।
অর্থঃ হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা কর, হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা কর, হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা কর। হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা কর, আমাকে রহম কর, আমাকে হেদায়াত দান কর, আমাকে রিযিক দান কর, আমাকে সুস্থ্যতা দান কর এবং আমার ক্ষয়ক্ষতি পূরণ কর।
** অথবা শুধু এইটুকুঃ
আল্লাহুম্মাগফিরলী-,ওয়ারহামনী-,ওয়াহদিনী-, ওয়ারযুকনী।
অর্থঃ হে আল্লাহ্! আমাকে ক্ষমা কর, আমাকে রহম কর, আমাকে হেদায়াত দান কর, আমাকে রিযিক দান কর।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)
*** ওয়াক্ত ও রাকাত ভেদে নামাজে নিয়মের ভিন্নতা রয়েছে, জামায়াতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে পরিশুদ্ধতা অর্জন করা সহজ হয়